Sharmin’s monthly income from selling umbrellas is 30 thousand taka
ছাতু বিক্রি করে শারমিনের মাসে আয় ৩০ হাজার টাকা/Sharmin’s monthly income from selling umbrellas is 30 thousand taka চাঁপাইনবাবগঞ্জ এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্রী শারমিন নাহার নীতি। উদ্যক্তা এই ছাত্রী ছাতু বিক্রি করেই মাসে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা উপার্জন করছেন।
প্রায় দেড় বছর আগে মাত্র দুই হাজার টাকা নিয়ে উদ্যোক্তার খাতায় নাম লেখান শারমিন। দশ রকমের ছাতু বানান তিনি। ‘রকমারি হাউজ’ নামের একটি পেজ ও ‘ডিভাস’ নামের একটি ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে বিক্রি শুরু করেন। কুরিয়ারের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জায়গার গ্রাহকের কাছে ছাতু পাঠান।
এখন তার স্বপ্ন ছাতু দিয়ে শুরু হলেও একদিন সফল উদ্যোক্তা হবেন। হবেন বড় ব্যবসায়ী। আর এর মাধ্যমে তিনি নিজেও আত্মনির্ভরশীল হবেন, অন্যদেরও পথ দেখাবেন।
উদ্যোক্তা শারমিন রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘‘আমার আত্মীয়-স্বজনরা ঢাকায় থাকে। সে সুবাদে আমার মা তাদেরকে ছাতু বানিয়ে পাঠাতেন। একদিন একটা ছাতুর প্যাকেট নিয়ে ফেসবুকের কয়েকটি গ্রুপে পোস্ট করেছিলাম। ব্যস নাটরের বনপাড়া থেকে ছাতুর প্রথম অর্ডার পেয়ে যাই। সেসময় মাত্র দুই হাজার টাকা পুঁজি খাটিয়ে অনলাইন ভিক্তিক একটি পেজ খুলে বিজ্ঞাপন দিয়ে এ পথের যাত্রা শুরু হয়।
‘আমার বাবা-মা আর মামি আমাকে এ কাজে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেন। বিশেষ করে বাবা যখন আমার ছাতু বিক্রির কথা বাইরে বলেন, তখন আমি খুব আনন্দিত হই। ছাতুতে নানান ধরনের পুষ্টি উপাদান রয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী একটি ইউনিক প্রোডাক্ট হওয়ায় এটা নিয়েই আমার পথ চলা।
ছাতু একটি প্রাচীন খাবার। কালের বিবর্তনে এ খাবার হারিয়ে যেতে বসেছে। আমি চাই চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহী জেলার বাইরেও দেশব্যাপী মানুষের কাছে বাঙালির খাবার হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠুক ছাতু।”
শারমিন জানান, আগস্ট মাসে ৩৬টি অর্ডার পেয়েছি। তাতে আয় হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার টাকা। প্রথমে আমরা কয়েক রকমের ছাতু সরবরাহ করতাম। বর্তমানে ১০ রকমের ছাতু সরবরাহ করছি। বিশেষ করে ডায়বেটিক রোগীদের জন্য রয়েছে স্পেশালভাবে বানানো চাল ছাড়া ছাতু।
বাচ্চাদের জন্য যব, চাল, ছোলা, গম, ভুট্টা, চিনাবাদাম, কাজুবাদাম ও কাঠবাদাম মিশ্রিত করে বানানো হয় দেশীয় হরলিক্স খ্যাত ছাতু।
শারমিন আরও জানান— যবের ছাতু; ছোলার ছাতু; চালের ছাতু; গমের ছাতু; ভুট্টার ছাতু; যব, চাল, ছোলা, গম দিয়ে মিশ্রিত ছাতু; যব ও ছোলা মিশ্রিত ছাতু; বাদাম মিশ্রিত ছাতু (যব, চাল, ছোলা, গম, ভুট্টাসহ প্রচুর পরিমাণে চিনা বাদাম) এ আট রকমের ছাতু বেশি পরিমাণে বিক্রি হয়।
শারমিনের বাবা ওমর ফারুক মিলন রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘আমি একজন পেশায় হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক। মেয়েটা যখন বলে- বাবা আজকে ঢাকা থেকে একসাথে ২০ কেজি ছাতুর অর্ডার এসেছে, তখন আমার খুব ভালোলাগে। অনেক সময় কাছের অর্ডারের ছাতুগুলো ভোক্তাদের বাড়িতে আমি নিজেই সরবরাহ করি। কারণ, আমি নিজ কানে শুনতে চাই আমাদের বানানো প্রডাক্ট নিয়ে ভোক্তারা কী বলেন।’