খুব সহজে গিটার শিখুন – গিটার ধরা ও কর্ড বাজানোর (Don’t Miss) 1

গিটার ধরা ও আসন:
জুতমতো গিটার বাজাতে হলে প্রথম অবস্থায় টুল বা হাতল ছাড়া চেয়ারে মেরুদণ্ড সোজা করে বসার নিয়ম। এক সময় যখন আয়ত্বে চলে আসবে তখন নিজের সুবিধামতো বসলেই হলো। ডান হাটুর উপর গিটারের বডির উরের দিক রেখে বাম হাতে ফ্রেট বোর্ডের নিচ দিয়ে ধরতে হবে। ডান হাত পুরোপুরি মুক্ত থাকবে, আঙুলে থাকবে পিক। ফ্রেটবোর্ডের সামনের দিক, চোখের প্রায় সমান্তরালে থাকবে, শুধু একটু দেখতে পারলে হয় বাম হাতের আঙুলগুলো কোন ফ্রেটের কোন তারে বসছে।

পিক ধরা:
পিক তর্জনীর এক ধারে রেখে বুড়ো আঙুল দিয়ে চেপে ধরতে হবে। খুব শক্ত করে ধরার প্রয়োজন নেই, এমনভাবে ধরতে হবে যেন স্বাচ্ছন্দ বোধ হয়। পিক ধরতে প্রথমে সমস্যা হতে পারে, হাত ঘেমে যেতে পারে। খুব সমস্যা মনে হলো, পিক ছাড়াই শুধু আঙুল দিয়ে বাজাতে পারেন। উপরে ছবিতে পিক ধরার নিয়ম দেখানো হয়েছে। ভিডিওতে আরও সহজভাবে বোঝানো হয়েছে।

আঙুল:
আমাদের হাতের সব আঙুল সমানভাবে ব্যবহৃত হয় না বলে সব আঙুল সমানভাবে দক্ষ নয়। যেমন, তর্জনী বা মধ্যমাকে যত সহজে নড়াচড়া করা যায়, কনিষ্ঠ আঙুলকে তত সহজে যায় না। একক ভাবে অনামিকাকে নড়া চড়া আরো কঠিন মনে হতে পারে। গিটার বাজানোর জন্য বা হাতের এ চারটি আঙুলকে খুব দ্রুত আলাদাভাবে নড়াচড়ার দক্ষতা আনতে হবে। এটা কঠিন মনে হতে পারে, তবে অধ্যাবসায় রাখলে একসময় ঠিক হয়ে যাবে। আঙুলের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য নীচে কিছু অনুশীলনী দেয়া হলো।

কর্ড বাজানোর জন্য ছটি তারের বিশেষ বিশেষ তার বিশেষ ফ্রেটে আঙলের মাথা দিয়ে চেপে ধরতে হয়। চেপে ধরার বেলায় আঙুলের নখ খুবই অসুবিধাজনক। এ কারনে, বাম হাতের নথ ভালমতো কেটে নিতে হবে।

প্রথম কর্ড:
আমরা প্রথমে যে কর্ডটা ধরতে শেখব সেটা হলো ডি মেজর। ডি মেজর ধরার জন্য ১, ২ ও ৩নং তারের যথাক্রমে ২, ৩, ও ২ নং ফ্রেটে ধরতে হবে। কোন তার কোন আঙুলে ধরবেন সেটা ব্যক্তিগত পছন্দের। অধিকাংশ চিত্রের মতো করে ধরে। বুড়ো আঙুল দিয়ে গিটারের নেক শক্ত করে ধরতে হবে। উল্টোদিকের ছবিতে দেখুন।

আঙুলগুলোর মাথা যতটা সম্ভব ধাতব বারের ঠিক পেছনে রাখতে হবে। এতে আঙুলের উপর কম চাপ পড়বে। তারগুলো ধরা হলে, ডান হাতে পিক দিয়ে নীচের চারটি তার বাজান। ঠিকমতো ধরা হলে সুন্দর শব্দ বের হবে। ধরা সঠিক না হলে, শব্দ ভোঁতা বা মড়া শোনাবে, বা সবগুলো তারের শব্দ শোনা যাবে না। আরো পরিস্কার ধারনার জন্য ভিডিও দেখুন।

আরো দুটি কর্ড:
ডি মেজর বাজাতে পারলে আমরা আরো দুটি কর্ড শিখব। প্রথমটি হলো এ মেজর, দ্বিতীয়টি ই মেজর। এ মেজর ধরার জন্য চিত্রের মতো করে ২, ৩, ও ৪ নং তারের ২নং ফ্রেটে ধরুন। কোন আঙুল দিয়ে ধরবেন, সেটা আপনার সুবিধামতো স্থির করুন। তর্জনী দিয়ে যা ধরেছি তা কেবল আঙুলে শক্তি যোগানোর জন্য। এবার ডান হাতের পিক দিয়ে ৬নং তার বাদ দিয়ে বাকী সবগুলো তার বাজান। শব্দ সুন্দর শোনালে কর্ড ধরা সঠিক হয়েছে মনে করতে পারেন।

ই মেজর কর্ড ধরার জন্য চিত্রের মতো করে ৩, ৪, ও ৫নং তারের যথাক্রমে ১, ২ ও ২ নং ফ্রেটে ধরুন। খেয়াল রাখবেন কনিষ্ঠ আঙুল যেন কোন তারের উপর না পড়ে। এবার ডান হাতের পিক দিয়ে সবগুলো তার বাজান।

অন্যান্য কর্ড:
ডি মেজর, ই মেজর ও এ মেজর কর্ড বাজাতে পারলে, আগের পাঠে দেয়া অন্যান্য কর্ডগুলোও বাজাতে চেষ্টা করুন। জি মেজর কর্ড ধরতে যদি খুব সমস্যা হয় তবে, কেবল নীচের ১ ও ২নং তার ধরুন (৫ ও ৬ নং ধরবেন না, বাজাবেনও না)।

কর্ড প্রগ্রেসন:
গান গাইবার সময় কণ্ঠ নিয়ত উচু ও নীচু কম্পাংকে আসা যাওয়া করে। গলার সাথে মিল রেখে গিটারেও ভিন্ন কর্ড বাজাতে হয়। গলার উঠানামাটা ব্যকরণবদ্ধ নিয়ম অনুসারে হয়। সে কারনে, গিটারের একটা কর্ডের পর আরেকটা নির্দিষ্ট কর্ড আসে। এক কর্ড থেকে বাজিয়ে বাজিয়ে অন্য কর্ডে যাওয়াকে কর্ড প্রগ্রেসন বলে। গানের ধরনের (রক, পপ, ব্লুজ ইত্যাদি) উপর নির্ভর করে কিছু সুনির্দিষ্ট কর্ড প্রগ্রেসন আছে। আমরা সেগুলো সম্পর্কে পরে কোন এক পাঠে জানব।

এ পর্যায়ে আমরা, কর্ড বাজিয়ে বাজিয়ে ডি মেজর, এ মেজর, ই মেজর আবার ডি মেজর এ ধারাটা শেখতে চাই। প্রথমে খুব ধীরে ধীরে ডি মেজর কর্ড বাজান। বাজাতে বাজাতে বাম হাতের আঙুলগুলোকে এ মেজর অবস্থানে নিয়ে যান। লক্ষ রাখবেন যেন ডান হাতের বাজানো বন্ধ না হয়। ব্যাপারটা ডান ও বাম হাতের সমন্বয়ের উপর নির্ভর করে। মাথায় এ ধরনের কাজের কোন অভিজ্ঞতা না থাকলে প্রথম দিকে একটু কঠিন লাগতে পারে। এ মেজর কিছুক্ষণ বাজিয়ে ই মেজরে যান। সবশেষে আবার ডি মেজরে যান। এভাবে যতক্ষণ সম্ভব করতে থাকুন।

এক কর্ড থেকে আরেক কর্ডে যাওয়ার সময়, পারতপক্ষে কমসংখ্যক আঙুল তুলবেন। যেমন, এ মেজর থেকে ই মেজরে যাওয়ার সময় তর্জনীকে তার থেকে না তুলে শুধু অনামিকা আর মধ্যমাকে উপরে তুলে দিন। আঙুলের স্থানান্তর যত কম হবে, গিটার তত দ্রুত বাজাতে পারবেন।

অবসর:
প্রথমবারেই ১ঘণ্টা ধরে বাজাতে পারবেন না। শুরুতে ৫/১০ মিনিট করে চালু রাখুন, আধঘণ্টা বিশ্রাম নিন, পরে আবার শুরু করুন। বাম হাতের আঙুল এ ধরনের কাজে অভ্যস্ত নয় বলে একটু ব্যথা করবে। আঙুলের মাথাগুলো একটু করে ফোস্কার মতো হবে। নিয়মিত বাজালে তা অনুভুতিহীন হয়ে শক্ত আকার নেবে। তখন আর ব্যথা লাগবে না। এ ব্যাপারে ধৈর্য ধরতে হবে।

অনুশীলনী:
১. বাম হাতের চারটি আঙুলকে খাড়া করে টেবিলের উপর রাখুন। এবার মধ্যমা ও কনিষ্ঠাকে টেবিলে যুক্ত রেখেই তর্জনী ও অনামিকাকে তুলতে চেষ্টা করুন। এখন তর্জনী ও অনামিকাকে আগের জায়গায় ফেরত নিয়ে এ দুটিকে টেবিলে যুক্ত রেখে মধ্যমা ও কনিষ্ঠ আঙুলকে তুলতে চেষ্টা করুন। নিয়মিত এ ব্যয়ামটি করলে আঙুলের পেশীগুলো দক্ষ হয়ে উঠবে। একই ব্যয়াম গিটারের ফ্রেট বোর্ডেও করতে পারেন। এর জন্য সুবিধামত চারটি ফ্রেট বেছে নিন। ভালো মতো বুঝার জন্য ভিডিও দেখুন।

২. ফ্রেট বোর্ডে সুবিধামতো একটা জায়গা বাছুন যেখানে বাম হাতের চারটি আঙুল পর পর চারটি ফ্রেটে রাখুন। নীচের তার থেকে শুরু করে এক একটা আঙুল এক একটা ফ্রেটে রেকে পিক দিয়ে ঐ তারটি বাজান। প্রথম তার শেষ করে দ্বিতীয় তারে যান, শেষ করে তৃতীয় তারে যান। শেষ তার থেকে আবার উল্টো ক্রমে নীচের তারে আসুন। আঙুলের জোড় বাড়ানোর জন্য এ কাজটি প্রতিদিন ১০/১৫ মিনিট ধরে করুন। প্রথম প্রথম ধীরে ধীরে করুন, পরে দ্রুততা বাড়াতে পারেন। অভ্যস্ত হয়ে গেলে ফ্রেটবোর্ডের মাথার দিকে, অর্থাৎ গিটারের নেকের দিকের চারটা ফ্রেট বেছে নিন।

২৪ ঘণ্টা Live অনলাইন রেডিও ”রেডিও কথা” , শুনতে হলে আপনাকে লগিন করতে হবে৷ http://www.radiokotha.com ওয়েবসাইট এ ।আমাদের Facebook পেজ এ একটা Like দিলে খুব খুশি হব : http://www.facebook.com/radiokothabd
আমাদেরকে Twitter পেজ এ Follow করুন : http://www.twitter.com/radiokotha

Leave a Reply

You missed

এই সাইটের কোন লেখা কপি করা সম্পুর্ন নিষেধ