ই-কমার্স সাইট আর সাধারণ ওয়েব সাইটের মধ্যে পার্থক্য ই-কমার্স সাইট আর সাধারণ ওয়েব সাইটের মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে। ই-কমার্স হলো অনেকটা ভার্চুয়াল/অনলাইন স্টোর। অতএব এটা ম্যানেজ করা জন্যে একটু ভিন্নতর কিছু বিষয়তো থাকেই যায়। ই-কমার্সে পণ্য কেনার বিষয় থাকে, পেমেন্ট দেয়ার বিষয় থাকে, সিকিউরিটি অনেক বড় একটা ফ্যাক্টর ইকমার্স এর ক্ষেত্রে। যেমন টাঙ্গাইলে শাড়ি নিয়ে ই-কমার্স ব্যবসা একটি ভালো আইডিয়া হতে পারে। তবে জনসচেতনা বৃদ্ধির জন্যে প্রচার প্রচারণার জন্যে বেশ ভালো খরচ করতে হবে।
বিজনেসের লিগ্যাল ডকুমন্টেশনে ২০ হাজারের মত খরচ হতে পারে। সাইট ডেভলপমেন্টের জন্যে ৩০-৫০ হাজারের মত লাগতে পারে। পেমেন্ট মেথড ইন্টিগ্রেশন কারে কারো টা ফ্রি আবার কারো ক্ষেত্রে চার্য আছে। প্রোডাক্ট ফটোগ্রাফির জন্যে একটা বাজেট রাখতে হবে। ভেনন্ড একুইজিশনে কিছু সিম্পল খরচ আছে, লজিস্টিক ম্যানেজমেন্টের জন্যে প্যাকিং ডেলিভারী বাবদ কিছু খরচ আছে।
খেয়াল করুন আরও সবতো করলেন, এবার মার্কেটিং করতে হবে। লোকজনকে জানাতে হবে যে আপনি একটা ব্যবসা শুরু করেছেন। টার্গেট ক্লায়েন্ট অনুযায়ী মার্কেটিং প্ল্যান করতে হবে।আমি বলব মার্কেটিং এর আগের কাজগুলোর জন্যে আপনি মোট যত টাকা খরচ করেছেন মার্কেটিং এর জন্যে এর তিনগুন বেশি বাজেট রাথেন।
কিছু প্রশ্ন ও উত্তর:
- “লিগ্যাল ডকুমন্টেশনে ২০ হাজারের মত খরচ হতে পারে” – এটা ঠিক বুজলাম না। কি টাইপ লিগাল ডকুমন্টেশ লাগতে পারে, একটু বলবেন প্লিজ…”
উত্তর – ব্যাবসার ট্রেড লাইসেন্স, টিআইএন, ভ্যাট সনদ, ব্যাংক একাউন্ট, ই – ক্যাব এর মেম্বারশীপ ইত্যাদি। মিলিয়ে আনুমানিক ২০ হাজারের মত লাগতে পারে।
- “ই-কমার্স সাইট বানাতে এতো সব ঝামেলা করতে হয় কি ??”
উত্তর – ই-কমার্স সাইট বলে নয়। আপনার যেকোনো ব্যবসাই করেন না কেন একটা কমিনিটির সাথে যুক্ত হতে হবে। ই – ক্যাব তেমনই একটি ই-কর্মাস ব্যবসায়ীদের এসোসিয়েশান।সদস্যপদটা আপনি আপনার সময় মতো নিতে পারেন। তবে আমি সাধারণত সাজেষ্ট করি শুরুতেই নিয়ে রাখা ভালো তাতে লাভটাই বেশী থাকে। এই ১৫-২০ হাজার টাকার প্রাথমিক বিনয়োগ একসময় কোটি টাকার সুযোগ ও ভ্যালু তৈরী করে দিতে পারে।
- “শুরুতেই ই – ক্যাব এর মেম্বারশীপটা কি জরুরী???”
উত্তর –আমি মনে করি জরুরী। বাকিটা আপনার ব্যক্তিগত অভিরুচী।
- “সব ওয়েবসাইটের (ব্লগ, ইনফো পোর্টাল ইত্যাদি) জন্যই কি লিগ্যাল ডকুমন্টেশন জরুরী??”
উত্তর –না। শুধু মাত্র ব্যবসা উদ্যোগের জন্যেই এইসব ডকুমেন্টস জরুরী।
- “I wanna know how much you sure about that people must need tread license, TIN and bla bla bla….. to start a e-commerce site ???
উত্তর – ই-কমার্স সাইট শুরু করতে কিছু দরকার নেই। সাইট শুরু করা আর ব্যবসা করার মধ্যে পার্থক্য আছে। আপনি যদি ব্যবসা করতে চান এবং মার্কেটে আপনার একসেস শুরু করতে চান তাহলেতো ডকুমেন্টসগুলো আবশ্যক, তাই না ? অনেকেই আছেন ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসা করেন, বাংলাদেশী আইনে এটা অবৈধ। একজন সুনাগরিকের কাছে নিশ্চয় এমন ছোটখাট অবৈধ কাজ আশা করা যায় না। কোম্পানির নামে ব্যাংক একাউন্ট করতে গেলে টিআইএন সনদ লাগবেই। আপনার ব্যবসা সেক্টর ট্যাক্স ফ্রি এর আওতায় হলেও লাগবে। টিআইএন থাকা আর ট্যাক্স দেয়া কিন্তু এক কথা নয়। আর ভ্যাট ! বর্তমান বাজেটটিতেই দেখুন,ই – কমার্স কে কি ভ্যাটের আওতামুক্ত রাখা হয়েছে?যদি না হয় তাহলে ভ্যাট রেজিঃ ছাড়া আপনি ভ্যাটটি সরকারি কোষাগারে জমা দিবেন কিভাবে? ই – ক্যাব সদস্যপদের বিষয়ে বলব, যেহেতু তারা বাংলাদেশের ই – কর্মাস ইন্ডাষ্ট্রির ট্রেড বডি এবং বিভিন্ন কাজের ক্ষেত্রে তাদের সহায়তা আমাদের লাগতেই পারে সো অল্প কিছু টাকা খরচ করে তাদের সদস্যপদ নিয়ে রাখাই উত্তম।
আপনি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন, কোনো এক সুন্দরীর প্রেমে পড়ে গেলেন। (ইচ্ছে করে ‘সুন্দরী’ কথা বললাম, কেননা বেশিরভাগ ছেলেই সুন্দরী মেয়েদেরই প্রেমে পড়ে। আপনার প্রডাক্টের ব্যাপারটাও তাই, দেখতে আকর্ষনীয় হলে ভেতরে কি আছে না জেনেই অনেকে পছন্দ করে ফেলবে।) এখন প্রেমে যেহেতু পড়েছেন, আপনি কি করবেন? আপনি তখন স্বাভাবিকভাবেই তার দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করবেন, আপনি তাকে ইমপ্রেস করার চেষ্টা করবেন। আপনি হয়তো আগের চাইতে পরিপাটি হয়ে, চুলে জেল দিয়ে, মান্জা মেরে সেই মেয়ের আশেপাশে ঘুরঘুর করবেন, তার নজরে পড়ার চেষ্টা করবেন।
যেকোনো ব্র্যান্ড-এর ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা তাই– অ্যাডের মাধ্যমে টার্গেট কাস্টমারদের নজরে পড়ার চেষ্টা করাটাই হলো প্রথম ধাপ। প্রথম ধাপ যদি হয় ‘নিজের উপস্থিতি জানায় দেয়া’, তবে দ্বিতীয় ধাপ হচ্ছে ‘প্রাসঙ্গিকতা’ অর্থাৎ এটা কি আমার আদৌ দরকার কি না, সেটা বিচার করা। আপনি তো পরিপাটি হয়ে সেই মেয়ের আশেপাশে ঘুরঘুর করলেন, কিন্তু সেই মেয়ের যদি অলরেডি বয়ফ্রেন্ড থেকে থাকে, তাহলে তো আপনার চান্স শুন্যের কোঠায়! অর্থাৎ, সে অলরেডি অন্য একটা ব্র্যান্ডের প্রতি loyal, কাজেই সেই ব্র্যান্ডের কোনো খুঁত না পেলে (সেই বয়ফ্রেন্ডের সাথে বড় কোনো ঝামেলা না হলে) এবং আপনার ব্র্যান্ডের বাড়তি যোগ্যতা (অর্থাৎ, আপনার বাড়তি কোনো আকর্ষনীয় গুন না থাকলে) ‘প্রাসঙ্গিকতা’ শুরুতেই মাঠে মারা যাবে। আর যদি তার বয়ফ্রেন্ড না থেকে থাকে, তাহলেও যে ব্যাপারটা খুব সহজ তা তো ভালোই বুঝতে পারছেন, কম্পিটিটরের তো আর অভাব নেই, আপনার মত অনেকেই যার যা আছে তা নিয়ে চেষ্টা করে যাবে সেই মেয়েকে বাগানোর জন্য। আপনার পকেট যদি ছোট হয় (অর্থাৎ, মার্কেটিং-এর বাজেট যদি কম থাকে), তাহলে তো আপনি শুরুতেই পিছিয়ে গেলেন।
প্রাসঙ্গিকতা-র পরের ধাপ হচ্ছে পারফরম্যান্স। ধরা যাক, আপনি দ্বিতীয় ধাপে সফল হয়েছেন অর্থাৎ মেয়েটি আপনার সাথে কথা বলা শুরু করেছে – পরিচয় থেকে ব্যাপারটা বন্ধুত্বে এসে ঠেকেছে। এখন বন্ধুত্ব থেকে ব্যাপারটাকে প্রনয় পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব কিন্তু আপনার। আপনি একাই কিন্তু তার বন্ধু নন, আরো অন্যান্য বন্ধুরাও কিন্তু বিভিন্নভাবে তার মন জয় করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। আপনার স্বভাব – চরিত্র, আপনার গুনাবলী, আপনার আস্থা অর্জনের ক্ষমতা – এসবই বলে দিবে আপনি তার মন জয় করতে পারবেন কি না, সম্পর্কটা দীর্ঘস্থায়ী হবে কি না। আপনার প্রডাক্ট কিংবা সার্ভিসের পারফরম্যান্সের ওপরই নির্ভর করবে কাস্টমার সেটা বারবার কিনবে কি না। অর্থাৎ, বাড়তি কিছু একটা থাকতে হবে যা আপনাকে (কিংবা আপনার প্রডাক্টকে) অন্যদের (কিংবা অন্যগুলো) থেকে আলাদা করে চেনাতে পারে।একটা ব্যাপারে খুব সতর্ক থাকা দরকার: over promise. অনেক সময়ই অনেক বিজ্ঞাপন এতই অতিরঞ্জিত করে দেখানো হয় যে পরে সেটাকে বাটপারি বা শঠতা বলে মনে হয়।
প্রেমের ক্ষেত্রেও একই ব্যাপার। নিজেকে জাহির করার জন্যে অনেক সময় নিজের সম্পর্কে কিংবা পরিবার সম্পর্কে অনেক বাড়তি কথা বলে পরে শেষমেষ ধরা খেতে হয়। আসলে যে যেটা, সেটাই ঠিকভাবে উপস্থাপন করার জরুরি। কোনো কিছু লুকালে একদিন না একদিন ধরা পড়তেই হয়, আর তখন আম আর ছালা দুটোই হাতছাড়া হয়।সর্বশেষ ধাপ হচ্ছে বন্ডিং ক্রিয়েট করা, অর্থাৎ কাস্টমার যেন মনে করে ‘nothing else can beat it’. বিয়েটা যেমন প্রণয়ের পরের ধাপ, তেমনি একজন কাস্টমারকে পাকাপাকিভাবে আপনার ব্র্যান্ডের প্রতি অনুগত করে তোলাটাও ব্র্যান্ড বিল্ডিং-এর সর্বশেষ ধাপ। তবে বিয়ে মানেই কিন্তু কাজ শেষ নয়। বিয়ের পরের সম্পর্কটা ঠিকঠাক বজায় রাখা যেমন কঠিন কাজ, তেমনি রেগুলার কাস্টমারের দিকে খেয়াল রাখাও খুবই জরুরি। লয়াল কাস্টমার যদি আশাহত হয়, তাহলে আপনার ব্র্যান্ডের রেপুটেশনেরও বারোটা বেজে যেতে পারে।
বাংলাদেশে ই-কমারস অনেক বেশি জনপ্রিয় হচ্ছে কিছু কারনে। কিন্তু সব ভালোর ই কিছু খারাপ দিক থাকে। মাঝে মাঝ খারাপ দিক গুলা বেশি পরিমানে ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।
বাংলাদেশ একটা হুজুগ এর দেশ। যখন কয়েকজন মানুষ একটা ব্যবসা তে লাভবান হয় তখন অন্য সবাই সেটা বুঝুক আর না বুঝুক ঝাপায় পড়ে। উদাহরন স্বরূপ শেয়ার বাজার, এম এল এম ব্যবসা, ফ্রিল্যান্সিং আউটসোরসিং আর এখন এটার সাথে যুক্ত হয়েছে ই-কর্মাস। মুক্তিযুদ্ধের সময় এই জাতি এক কথায় যুদ্ধে নেমে পড়েছিলো সেটা অবশ্যি ভালো ছিলো। কিন্তু এখনো সেটা কন্টিনিউ আছে তাও খারাপের ক্ষেত্রে, এক ধরনের ঝাপিইয়ে পড়ার মতই।
বেশির ভাগ ই-কর্মাস মালিকদের মধ্যেই যথেষ্ট জ্ঞান এর অভাব আছে। এর মধ্যে কিছু কারন বের করা গেছেঃ
১. আচার-ব্যবহার এর সমস্যা,
২. যোগাযোগে সমস্যা,
৩. ইগো সমস্যা,
৪. প্রেস্টিজ সমস্যা,
৫. কোয়ালিটি ভেন্ডর বাছাই করনের সমস্যা,
৬. ডেলিভারী সমস্যা
৭. সঠিক সময়ে ডেলিভারী না যাওয়ার সমস্যা
আরো আছে অনেক এই মুহূর্তে মনে পড়তেসে না। আর এগুলা ছিলো শুধুমাত্র মালিক পক্ষের দিক থেকে সমস্যা গুলা। কিন্তু কাস্টমার বা ক্লায়েন্ট এন্ড এর সমস্যা আরো ভয়াবহ। যেমন নিম্নরূপঃ
১. টাকা নেই,
২. দুদিন পরে নিবো
৩. আমি ঢাকা এর বাইরে
৪. সে দেশ নাই
৫. পণ্য পছন্দ হয় নি
৬. মান ভালো নাহ
৭. ডেলিভারী চার্জ এতো বেশি কেনো?
৮. এতোদিন লাগে কেনো ডেলিভারী দিতে?
৯. পছন্দ হচ্ছে না
১০. আমি এখন নিতে পারবো না
১১. ছবির সাথে মিল নাই।
উদাহরন-১:কিছু দিন আগে একটা ই-কর্মাস সাইট এর নামে কমপ্লেইন পেলাম তারা নাকি এক ক্লায়েন্ট কে একটা কথা বলেছে, ক্লায়েন্ট অর্ডার দেয়ার পর তার পারিবারিক সমস্যা এর কারনে দেশের বাড়ি গিয়েছে, ওখানে থাক্তে ফোন দিয়েছে। তো সে বলেছে “আপু আমি ঢাকা তে এসে আপনাকে ফোন দিচ্ছি আমি ওটা নিবো।” রিপ্লাই এ তাকে বলা হলো, “দেখেন ভাইয়া আমাদের তো আসলে অনেক কাজ আছে আপনার একটা অর্ডার নিয়ে বসে থাকলে তো আর আমাদের হবে নাহ তাই না?” এটা কেমন কথা? আমাকে বুঝান এখানে ব্যবসা করতে আসছেন ফাইজলামি নাকি? নিজের দিক দেখলেই হবে? ক্লায়েন্ট মানে কি জানেন?
উদাহরন-২:এক লোক টিশার্ট এর ব্যবসা করবে, ব্র্যান্ড এর নাম ও সিলেক্ট হয়ে গেছে। কিন্তু সে আসলেই জানে না সে কি করবে? ক্লাসিফাইড সাইট বানাবে বলে এখন টিশার্ট এর ব্রান্ড নিয়ে কাজ করতেসে। আসলে তার ব্যবসা টা কি?
উদাহরন-৩:আরেকজন টিশার্ট এর ব্যবসা করবে, আমি বললাম কিভাবে শুরু করতে চান। নানা কথা বলার পর বলল, “ভাই অনলাইন এ কি সেল হয়?” আমি বললাম “ভালো জিনিস আনেন হবে নাহ মানে?” সে বলে “আমার পারটনার তো ভয় পায় বিনিয়োগ করতে”। আমি জিজ্ঞেস করলাম, “কতো বিনিয়োগ করবে সে?” বলে “৭০০০/-টাকা” আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, “মোটমাট কত টাকা?” বলল, “ভাই ১০০ টিশার্ট নিয়ে নামবো, বাজেট১০,০০০/-টাকা ঊর্ধ্বে গেলে১২০০০/-টাকা!” আমি, “মানে কি? বঙ্গ থেকে টিশার্ট কিনবেন নাকি?” সে বলে, “এখন এভাবেই করি, পরে ব্যবসা ভালো হলে বিনিয়োগ বাড়াবো” অবস্থা দেখেন ব্যবসা করবে ডিজিটাল অথচ চিন্তা ধারা এনালগ। ব”ঙ্গ থেকে কেনো টিশার্ট কিনবেন? আমার মাথায় তো ঢুকে নাহ ব্যাপার টা! স্টক এর টিশার্ট হলে আলাদা কথা, কিন্তু শুরুতেই গেলে আপনাকে তো তারা রিজেক্টেড টিশার্ট ধরায় দিবে? তার মানে মার্কেট নষ্ট করতে আস্তেসেন?”
এই হলো অবস্থা। ভাই ও বোনেরা সবসময় এই ব্যবসা এর ক্ষেত্রে নিজের কথা চিন্তা করবেন। আপনি একজন কাস্টমার হিসেবে সেই পণ্যের কি কি গুনাগুন চান, কেমন সার্ভিস চান, কি থাকা চাই, কি দরকার নাই। কেউ এটা ভাবলে খারাপ মানের পণ্য বাজারে দিতে পারবে নাহ বলে আশা করি।
আর ইকমারস উদ্যোক্তাদের এই ছোট্ট মানুষ্টার একটা আবেদন, গাট-বাধা প্রফিট এর আশায় সবাইকে না নিয়ে কোয়ালিটি টিম টাকে স্ট্রং করুন। যেটা বেশি বিক্রি হইসে সেটা বিক্রি করতে থাকা কে হয়তো ব্যবসা বলা যেতে পারে কিন্তু কোয়ালিটি না জেনে সেটা বিক্রি করাটাকে ভালো সার্ভিস বলে না বলে লোক ঠোকানো। আগে নিজেরা ঠিক হই পরে কাস্টোমার রা ও ঠিক হবে।
কি ব্যবসা করবেন? এখানে ব্যবসার আইডিয়া নিয়ে ভাবতে হবে। ভেবেচিন্তে আপনার অবস্থান থেকে ২/৩টি আইডিয়া নির্বাচন করুন।
আইডিয়াগুলো নিয়ে এবার একটু খেলা করতে হবে। প্রথমেই আপনি যে আইডিয়া নিয়ে কাজ করতে চান সেই সেক্টরের কমপক্ষে ৩ জন উদ্যোক্তাকে নির্বাচন করুন। একজনকে বেছে নিন যিনি বেশ প্রতিষ্ঠিত। আরেকজনকে নিন যিনি ৩ বছরের বেশি সময় ধরে ব্যবসা করছেন আরেকজন যিনি বছরখানেক হল শুরু করেছেন।এই তিনজনের সাথে নানান বিষয়ে সর্ম্পক গড়ে তুলুন। যোগাযোগ বাড়ান। তিনজনের ব্যবসায়িক মডেল, ম্যানেজমেন্ট স্টাইল, মার্কেটিং প্ল্যান ও স্ট্র্যাটেজি, সেলস গ্রোথ, কম্পিটিটর হ্যান্ডেলিং ইত্যাদি বিষয়গুলো নিবিরভাবে পর্যবেক্ষন করুন।এবার আপনার আইডিয়া নিয়ে তিনজনের সাথে আলাপ করুন। কে কি বলে মন দিয়ে শুনুন। যুক্তি তর্ক করুন।
এবার আপনার মত আপনি সিদ্ধান্ত নিন।আপনি যে আইডিয়া নিয়ে ব্যবসা করতে চান তার সম্ভাব্যতা ও বাজার যাচাই করুন। বাজারের পরিধি নির্ধারণ করুন। টার্গেট কাস্টোমার নির্ধারণ করুন। এবার কাস্টোমারের কাছাকাছি গিয়ে আপনার পণ্য আর পরিসেবা নিয়ে কথা বলুন। মন দিয়ে কাস্টোমারের কথা শুনুন। সম্ভভ হলে ১০০ জনের মধ্যে একটা জরিপ করে সেই অনুযায়ী প্ল্যান করুন।প্রতিটি আইডিয়ার ক্ষেত্রেই এমনটা করুন। এবার সবগুলো আইডিয়ার মধ্য থেকে যে কোন একটি আইডিয়াকে চুড়ান্তভাবে নির্বাচিত করে সেটি নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহন করুন।আইডিয়া নির্বাচন, প্রতিযোগী বিশ্লেষন এবং বাজার সম্ভাব্যতা ও বাজারের পরিধি যাচাই হয়ে গেল। এবার আপনার ব্যবসায়িক পরিকল্পনা তৈরী করুন। ব্যবসার একটা ডেস্টিনেশন মডেল কল্পনা করুন। ৫ বছর পরে কতটুকু এচীভ করতে চান তা নির্ধারণ করুন। এবং এই৫ বছরেরপরিকল্পনাকে ভেঙে১ বছরকরে নিয়ে কাজ শুরু করুন।ব্যবসা পরিকল্পনায় ফাইনান্সিয়াল ম্যাটারে যে সব বিষয়ে বেশ গুরুত্ব দিতে হবে: স্ট্যাবলিষ্টমেন্ট কষ্ট, মার্কেটিং ও ব্যান্ডিং কষ্ট, রানিং ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল, ব্যাকআপ মানি সোর্স ইত্যাদি।
স্টার্টআপ হিসেবে শুরুতে প্রচুর পরীক্ষা নিরিক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। ভাববেন একরকম হবে আরেক রকম। খরচ যা অনুমান করবেন তার থেকে অনেক গুণ বেড়ে যাবে। অতএব শুরুতেই বেশ হিসাব করে পরিকল্পনার বাস্তবায়নে অগ্রসর হতে হবে।ব্যবস্থাপনায় যে সব বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে: দক্ষ কর্মী নির্বাচন, কর্মী ব্যবস্থাপনা, সময় ব্যবস্থাপনা, উৎপাদন ব্যবস্থাপনা, বিক্রয় ও বিপনন ব্যবস্থাপনা, আর্থিক ব্যবস্থাপনা, গ্রাহক সেবা ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি।ব্যবসা পরিকল্পনার শুরুতেই জোড় দিন মার্কেটিং ও ব্র্যান্ডিং এ। মোট বিনিয়োগের শতকরা ৬০ ভাগ বাজেট বরাদ্দ করেন এ সেক্টরের জন্যে। মার্কেটিং আপনার ব্যবসার ব্লাড সার্কুলেশনের মত। এটি ব্যহত হলে বাকি সব ডিপার্টমেন্ট অকার্জকর হয়ে পড়বে। আর ব্র্যান্ডিং আপনাকে বাজারে টিকে থাকতে খুঁটির মত সহায়তা করবে। কস্টোমার সার্ভিস সেক্টরটিকে গুরুত্ব দিন সর্বাধিক পরিমানে। কেননা মনে রাখতে হবে যে, কাস্টোমার ব্যবসার জন্যে লক্ষী সরূপ। কাস্টোমারের স্যাটিসফ্যাকশনই আপনাকে ব্যবসায়িক সমৃদ্ধি এনে দিবে।ব্যবসার লিগ্যাল ডকুমেন্টেশনের দিকে জোড় দিন।
এই সেক্টরে কোন গাফলতি নয়। একটু খরচ করে হলেও ব্যবসা ছোট বড় যেমনই হোক না কেন লিগ্যাল কাগজপত্র শুরুতেই গুছিয়ে নিয়ে শুরু করুন।আপনার আইডিয়া অনুযায়ী যে পণ্য বা সেবা নিয়ে ব্যবসা করতে চান তা নিয়ে প্রচুর স্ট্যাডি করুন। স্ট্যাডির কোন বিকল্প নেই। কমিউনিকেশণ বাড়ান। নিজেকে ছড়িয়ে দিতে চেষ্টা করুন সব জায়গায়।এই পর্যায়ে এসে নিজের দক্ষতা আর যোগ্যতা যাচাই করুন। যে সব বিষয়ে দূর্বলতা আছে সেগুলো চিহ্নিত করে দ্রুত সমাধানের উদ্যোগ নিন। প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষন গ্রহণ করুন। নিয়মিত পড়ালেখা করুন। প্রচুর তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করুন। এবং এগুলোর যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করুন।এখন সময় হয়েছে পথে নামার। আপনার গন্তব্য খুঁজে নিতে আপনি মোটামুটি প্রস্তুত। চলার পথের চড়াই উৎরাই পার হয়েই গন্তব্যে পৌছুতে হবে। তবে ঐসব চরাই উৎরায়ের জন্যে আপনি মোটামুটি একটা ধারনা ও মানসিক প্রস্তুতি আগেই নিয়ে নিয়েছেন। শুরু করে দিন
বিজনেস আইডিয়াঃথার্ড পার্টি বিজনেস সাপোর্ট