Farmers who benefited from growing beans in season, 5 hectares will earn 80 lakh rupees
অসময়ে শিম চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। সম্প্রতি মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের আশিদ্রোন ইউনিয়নের ডেংগারবন গ্রামে
অসময়ে শিম চাষে লাভবান কৃষকরা, ৫ হেক্টরে আয় হবে ৮০ লাখ টাকা/Farmers who benefited from growing beans in season, 5 hectares will earn 80 lakh rupees অসময়ে শিম চাষ করে লাভবান হচ্ছেন মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের আশিদ্রোন ইউনিয়নের ডেংগারবন গ্রামের কৃষকরা। সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিকৃবি-১ জাতের গ্রীষ্মকালীন আগাম ফলন দেয়া শিম গাছ লাগিয়ে তারা ভালো মুনাফা অর্জন করেছেন।
এ বছর গ্রামের প্রায় ২৫ জন কৃষক পাঁচ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন এই শিম চাষ করেছেন। এই আবাদ থেকে কৃষকরা প্রায় ৮০ লাখ টাকা উপার্জন করবেন বলে ধারণা করছে উপজেলা কৃষি অফিস।
ডেংগারবন গ্রামে প্রথম দিকে এই উফশী (হাইব্রিড নয়) শিম আবাদ শুরু করেন আহসান হাবিব। তিনি বলেন, ‘২০১৬ সালের দিকে আমি কৃষি অফিস থেকে মাত্র ১২টি শিমের বীজ পেয়ে বাড়ির আঙিনায় লাগাই। সেই গাছগুলোর ফলন থেকে বীজ সংগ্রহ করে পরে বড় জায়গা নিয়ে গ্রীষ্মকালীন শিমের চাষ শুরু করি। গত বছর এক বিঘা জমিতে এই শিম চাষে খরচ হয়েছিল ১৮ হাজার টাকা। সেখান থেকে প্রায় ৩ লাখ টাকার শিম বিক্রি করেছিলাম।’
আহসান হাবিব জানান, এ বছর আড়াই বিঘা জমিতে শিম আবাদে তার প্রায় ৩৬ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এ পর্যন্ত ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকার শিম বিক্রি করেছেন, আরও প্রায় ৩ লাখ টাকার শিম গাছে আছে।
কৃষকরা জানান, গ্রামের প্রায় ২৫ জন কৃষক এই জাতের শিম আবাদ করছেন। প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি দরে। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে অনেকেই তাদের কাছ থেকে শিমের বীজ কিনে নেন।
ওই গ্রামের বাসিন্দা নাসির উদ্দীন বলেন, ‘আমি এবার ২০ শতক জায়গায় শিমের চাষ করছি। আমার বাড়ির পাশের আহসান হাবিব চাচা প্রথম দিকে এই শিমের চাষ শুরু করেন। তার কাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করে আমি নিজেও চাষাবাদ শুরু করি। এটি খুবই লাভজনক।’
শিমের খেতে কাজ করতে আসা ইউনুস মিয়া বলেন, ‘আমি শিমের খেতে দৈনিক ৫০০ টাকা মজুরিতে কাজ করি। এ দিয়ে আমার সংসার চলে। আমার মতো অনেকেই এখন এই গ্রামে শিম গাছের খেতে কাজ করে টাকা উপার্জন করছে। আগামী বছর আমি নিজেও এই শিমের চাষ করব।’
শ্রীমঙ্গল কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শহিদুল ইসলামের কাছ থেকে পাওয়া সিকৃবি-১ জাতের এই শিমের ফলন গ্রীষ্মকালেই বেশি। একটি গাছ লাগানোর ৪০ দিনে ফুল ও ফল আসে, ৫০ দিন থেকে বিক্রির উপযোগী হয়। একটি গাছ প্রায় দুই বছর পর্যন্ত বাঁচে। এই শিম গাছ থেকে সহজে বীজ সংগ্রহ করা যায়।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মহিউদ্দিন বলেন, ‘আমরা সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রীষ্মকালীন শিমের সিকৃবি-১ জাতটির বীজ সংগ্রহ করে কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করেছি। কৃষকদের এই গ্রীষ্মকালীন শিম চাষের ওপরে প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য উপকরণও সরবরাহ করা হয়েছে।
শ্রীমঙ্গলের প্রায় ৫ হেক্টর জমিতে এই গ্রীষ্মকালীন শিমের চাষাবাদ হয়েছে। বাজারে এই সময়ে শিম না থাকায় কৃষকরা ভালো দাম পাচ্ছেন। আশা করা যায়, মাত্র পাঁচ হেক্টর জমি থেকে কৃষকরা ৮০ থেকে ৮৫ লাখ টাকার শিম বিক্রি করতে পারবেন।’
মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা পরীক্ষামূলকভাবে জেলা সদর উপজেলা ও শ্রীমঙ্গলে প্রদর্শনী আকারে করেছি। অনেক কৃষক আগে শিম বীজ সংগ্রহ করেছেন। তারা এখন নিজের জমিতে আবাদ করছেন। আমরা আগামীতে অন্য উপজেলাগুলোতেও পরীক্ষামূলকভাবে এই শিমের আবাদ শুরু করব।’