ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কি এবং ভিআর এর বৈশিষ্ট্যসমূহ:

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কি এবং ভিআর এর বৈশিষ্ট্যসমূহ পণ্য প্রস্তুতকারক ইন্ডাস্ট্রিতে থ্রিডি প্রিন্টিং অনেক বড় ভূমিকা রেখে আসছে। এই পদ্ধতিতে যেমন সহজে কোন পণ্যের প্রোটোটাইপ তৈরি করা যায় তেমনি খরচ অনেক কম পরে। বর্তমানে স্বাস্থ্য, পরিবহণ, স্থাপত্য, রেপ্লিকা ইত্যাদি খাতে থ্রিডি প্রিন্টিং পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। এতে প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে আমাদের জীবন-যাপন আরও সহজ ও সাবলীল করে তোলা হয়েছে। আমাদের আজকের লেখায় থ্রিডি প্রিন্টিং কি? কত প্রকার এর সুবিধা এবং অসুবিধা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। 

ভার্চুয়াল রিয়েলিটির বৈশিষ্ট্য কি

নিচে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির বৈশিষ্ট্য গুলো বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

নিমগ্নতা

এই প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আপনি নিজেকে একটি কম্পিউটার দ্বারা তৈরিকৃত দুনিয়ার ভেতরে নিমজ্জিত অবস্থায় দেখতে পারবেন। অর্থাৎ আপনি যখন ভিআর দুনিয়ায় প্রবেশ করবেন তখন মনে হবে আপনি সারাজীবন যে টিভি স্ক্রিন দেখে আসছেন সেই দুনিয়ায় প্রবেশ করবেন। আপনার ভিআর সেট বা ডিভাইস যত বেশি উন্নত ও ফিচার সমৃদ্ধ হবে আপনি নিজেকে তত বেশি গভীরে নিয়ে যেতে পারবেন। অর্থাৎ ভিআর সেট নির্মাতা যত বেশি ক্রিয়েটিভ হবে আপনি তত ভালো এবং বিস্তারিত ভিউ অনুভব করতে পারবেন।

সংযুক্ততা

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি এত বেশি পরিমাণে পপুলারিটি পাওয়ার পেছনে সব থেকে বেশি কাজ করেছে এর বাস্তবিকতার সাথে। অর্থাৎ আপনি যখন ভিআর দুনিয়ায় প্রবেশ করবেন তখন ডিভাইস আপনার মস্তিষ্ক ও চিন্তা-ভাবনার সাথে সংযুক্ত হবে। যে কারণে এই কাল্পনিক দুনিয়ায় আপনি যা স্পর্শ করবেন তা মনে হবে বাস্তব এবং জীবন্ত।

সহজ কথায় বলতে গেলে এই সিমুলেশন দুনিয়ায় আপনি যদি কোন কিছু হাত দিয়ে স্পর্শ করেন তাহলে উক্ত জিনিস বাস্তবে হাত দিয়ে ধরলে যেমন অনুভূতি হত ঠিক তেমন লাগবে। সব থেকে বড় বিষয় আপনি এখান অবজেক্টগুলো নাড়াচাড়া করার পাশাপাশি সেগুলোর স্থান পরিবর্তন করতে পারবেন। এই সিস্টেম মূলত কাজ করে গতি এবং ভাইব্রেশনকে কাজে লাগিয়ে।

বাস্তবসম্মত ভিজ্যুয়াল

বাস্তবসম্মত ভিজুয়াল তৈরি করার জন্য ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে উচ্চমানের গ্রাফিক্স ও হাই রেজুলেশনের মনিটর ব্যবহার করা হয়। এই মনিটর এবং গ্রাফিক্সকে কাজে লাগিয়ে অনেক উচ্চ মানের এবং বাস্তবসম্মত ইমেজ এবং ভিডিও ফাইল তৈরি করা হয়। উন্নত গ্রাফিক্সের কারণে ইমেজ এবং ভিডিওগুলোকে বাস্তব এবং জীবন্ত মনে হয়। 

একটি উচ্চ মাত্রার গ্রাফিক্স কীভাবে জীবন্ত ছবি ও ভিডিও আউটপুট দেয় তা জানার জন্য বর্তমান সময়ের গেম গুলো দেখতে পারবেন। বিশেষ করে হাই রেজুলেশনের যে গেমগুলো আছে সেগুলো। একটি ভালো মানের মনিটরের সামনে বসে এই গেম গুলো দেখলে মনে হবে আপনি বাস্তব মানুষ দেখছেন। ভিআর প্রযুক্তিতে মূলত এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।

বাস্তবিক সাউন্ড ইফেক্ট

আপনি শুধু একটি ইমেজ বা ভিডিও চোখে দেখে সেখানে উপস্থিত থাকলে কেমন লাগতো সে সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পাবেন না। তবে যদি সেখানে সাউন্ড থাকে তাহলে যে কোন পরিবেশ এবং পরিস্থিতি সম্পর্কে অনুধাবন করতে পারবেন। আসলে মানব বায়োলজি এই ভাবেই তৈরি। আমরা শুধু সাউন্ড শুনে কোন জায়গা সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা লাভ করতে পারি। এখন ধরুন আপনি একটি বনের মাঝখানে রয়েছেন। কিন্তু সেখানে কোনো বাতাসের, পশুপাখি, ডালপালা ইত্যাদির শব্দ নেই।

এখন চোখ বন্ধ রাখা অবস্থায় এই পরিবেশে থাকা আর একটি অন্ধকার রুমের মধ্যে থাকার মধ্যে আপনি কিন্তু কোন পার্থক্য করতে পারবেন না। তবে আপনাকে যদি একটি অন্ধকার ঘরের মধ্যে রেখে স্পিকারে প্রাকৃতিক সাউন্ড দেওয়া হয় তাহলে এমনিতেই আপনি নিজেকে প্রকৃতির মাঝে অনুধাবন করবেন। অন্যদিকে যদি এই অবস্থায় আপনার চোখের সামনে কোন দৃশ্য প্লে করে পেছনে সাউন্ড দেওয়া হয় তাহলে মনে হবে আপনি সেই পরিবেশে রয়েছেন। ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে এই জিনিসটা ব্যবহার করা হয়।

হ্যাপটিক সেন্সর কর্মক্ষমতা

এটি আসলে হ্যাপটিক ডিভাইস ব্যবহারের মাধ্যমে ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে বিভিন্ন অবজেক্ট স্পর্শ করার মাধ্যমে অনুভব করার ফিচার প্রদান করে। অর্থাৎ আপনি হ্যাপটিক ডিভাইস ইউজ করে ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে নিজেকে পুরোপুরি উপস্থিত অনুভব করতে পারবেন। সহজ কথায় আপনি যদি ভিআর দিয়ে গেম খেলেন তাহলে হাতে একটি হ্যাপটিক সেন্সর যুক্ত ডিভাইস নিয়ে গেমের মধ্যে অস্ত্র পরিবর্তন ও আপগ্রেড করতে পারবেন।

প্রোগ্রাম কী? প্রোগ্রামিং কেন শিখবেন?

বাস্তবিক সহযোগিতা

আপনি যদি ফেসবুকের মেটাভার্স উদ্যোগের সাথে পরিচিত হন তাহলে এটি বুঝতে আপনার অনেক সুবিধা হবে। ফেসবুক ভার্চুয়াল রিয়েলটি প্রযুক্তি ব্যবহার করে এক নতুন ভার্চুয়াল দুনিয়া তৈরি করছে। যেখানে আপনি তাদের ভিআর ডিভাইস ব্যবহার করে অন্য ইউজারের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারবেন। অর্থাৎ আপনি চাইলে নিজের রুমে বসে আরেক শহরের আপনার বন্ধুর সাথে মুখোমুখি গল্প করতে পারবেন। এতে আপনি নিজেকে যেমন সোশ্যাল হিসেবে গড়ে তুলতে পারছেন তেমনি স্থানের মধ্যে দূরত্ব অনেক কমে যাচ্ছে।

৩৬০ ডিগ্রি ভিউ

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্রযুক্তির অন্যতম জনপ্রিয় ফিচার হচ্ছে ৩৬০ ডিগ্রি ভিউ। এই ফিচারের কারণে আপনি ভিআর ডিভাইস দিয়ে আপনার চারপাশের সব কিছুই দেখতে পারবেন। এটি অনেকটা আমাদের চোখের মত। যেমন আমরা খালি চোখে আমাদের চারপাশে কোন ধরনের ঝামেলা ছাড়াই দেখতে পারি। ৩৬০ ডিগ্রি ভিউ ভার্চুয়াল ডিভাইস ব্যবহার করে এই সুবিধা পেতে সাহায্য করে। 

এই ফিচার থাকার কারণে মানুষের মাঝে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করার ইচ্ছা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ যখন ভিআর সেটের ভেতরে আমরা প্রবেশ করি তখন আমাদের চারপাশ দেখা যাওয়ার কারণে মনে হয় আমরা বাস্তব দুনিয়ায় রয়েছি। এখানে সামনে পেছনে সহ উপর নিচে সব পাশেই দেখা যায়। যে কারণে আপনি কোন পাহাড়ে ওঠার পাশাপাশি বিশাল মরুভূমির মধ্যে ঘুরতে পারবেন। তাছার এটি ফিচার গেম খেলার জন্য অনেক বেশি সাহায্য করে থাকে।

কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি দুনিয়া তৈরি করা হয় কম্পিউটার সিস্টেম ব্যবহার করতে। এটি যেমন কাজে গতি বৃদ্ধি করে তেমনি আপনি আপনার নিজের কল্পনা কাজে লাগাতে পারবেন। আপনি চাইলে ভিআর সেট থেকে ডিফল্ট ভাবে দেওয়া গ্রাফিক্স পরিবর্তন করে নিজের তৈরি করা ভার্চুয়াল দুনিয়ায় প্রবেশ করতে পারবেন। যেহেতু এখানে পরিবর্তন করার মত অনেক সুযোগ এবং সুবিধা রয়েছে সেহেতু ক্রিয়েটিভ কিছু করার সুযোগ থাকছে।

উপরিউক্ত আলোচনায় ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কি এবং এর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এখানে বলা হয়েছে কীভাবে ভিআর অদূর ভবিষ্যতে মানুষের জন্য কল্যাণকর হয়ে উঠবে। আশা করি লেখাটি পরে আপনি ভার্চুয়াল রিয়েলিটি সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা লাভ করেছেন।

Comments (No)

Leave a Reply

এই সাইটের কোন লেখা কপি করা সম্পুর্ন নিষেধ