পুলিশ সাব ইন্সেপেক্টর (এসআই) বেতন কত

বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে ‘সাব-ইন্সপেক্টর’ (এসআই) পদে প্রতিবছরই বড়সংখ্যক জনবল নিয়োগ হয়। এস.আই (নিরস্ত্র) বা ‘সাব-ইন্সপেক্টর’ পুলিশের এই পদটি সেকেন্ড ক্লাস গেজেটেড অফিসার। সাব-ইন্সপেক্টরকে পুলিশের বাহিনীর মেরুদন্ড বলা হয়। কারণ, তারা ইনভেস্টিগেশন অফিসার হিসাবে প্রায় সকল মামলার তদন্ত করা সহ মাঠ পর্যায়ে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করে। পুলিশ সাব ইন্সেপেক্টর (এসআই) বেতন কত?

পুলিশ সাব ইন্সেপেক্টর (এসআই) বেতন কত 1

এসআই পদে আবেদনের সুযোগ পান। নিয়োগের বাছাই পরীক্ষা হয় ৪ ধাপে—
১. শারীরিক পরীক্ষা,
২. লিখিত পরীক্ষা-২২৫মার্ক: পরীক্ষা হয় ৩ দিন। প্রথম দিন মনস্তাত্বিক পরীক্ষা-২৫ মার্ক। দ্বিতীয় দিন বাংলা ও ইংলিশ-১০০ মার্ক। তৃতীয় দিন গনিত ও সাধারণ জ্ঞান-১০০ মার্ক।
৩. মৌখিক পরীক্ষা (১০০)। আর সব শেষে
৪. স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও পুলিশ ভেরিফিকেশন (ভিআর)। শেষ ধাপ পর্যন্ত সফলভাবে টপকাতে পারলেই চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হওয়া যাবে।

শারীরিক যোগ্যতা:
গত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, পুরুষ প্রার্থীদের ক্ষেত্রে উচ্চতা কমপক্ষে ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি এবং বুকের মাপ স্বাভাবিক অবস্থায় ৩০ ইঞ্চি। আর নারীদের ক্ষেত্রে উচ্চতা কমপক্ষে ৫ ফুট ২ ইঞ্চি।
বয়স ও উচ্চতার সঙ্গে ওজনের ভারসাম্য থাকতে হবে। প্রার্থীকে দৌড়, জাম্পিং ও রোফ ক্লিম্বিংয়ে অংশ নিতে হবে। এই ধাপ উতড়ালেই প্রার্থী লিখিত পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত হবেন। আর প্রার্থীকে অবশ্যই অবিবাহিত হতে হবে।

পুলিশ সাব ইন্সেপেক্টর (এসআই) বেতন কত 2

ওজন অনুমোদিত মাপ হিসাবে হতে হবে।

বয়স: নিয়োগের নির্ধারিত তারিখে ১৯-২৭ বছর বয়স হতে হবে । বিশেষ ক্ষেত্রে ১৯-৩২ বছর।
নাগরিকত্ব: জন্মসূত্রে বাংলাদেশের স্থায়ী নাগরিক

সুযোগ-সুবিধাঃ
নির্বাচিত হওয়ার পর এক বছরের মৌলিক প্রশিক্ষণ চলাকালে মাসিক প্রশিক্ষন ভাতার পাশাপাশি বিনা খরচে খাওয়া, বাসস্থান, ইউনিফর্ম দেওয়া হয়।
একজন সাব-ইন্সপেক্টর ‘সরকারি বেতন স্কেল-২০১৫’ অনুযায়ী দশম গ্রেডের বেসিক ১৬০০০ থেকে ৩৮৬৪০ টাকা হারে বেতন পান।


এ ছাড়া বিনা মূল্যে পোশাক, রেশন, ঝুঁকিভাতা, চিকিত্সাভাতা, যাতায়াতভাতা, মামলা তদন্ত ভাতা মিলিয়ে প্রথম দিকে প্রায় ৩০ হাজার টাকার মতো মাসিক বেতন পেয়ে থাকেন।
আরো প্রতি বছরই পহেলা বৈশাখ, ঈদ কিংবা পূজায় উত্সবভাতা পান। বেতন ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। যোগ্যতার প্রমাণ দিতে পারলে বিদেশে মিশনে যাওয়ারও সুযোগ মিলতে পারে। প্রতি ১ বছরের মিশনে ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করা সম্ভব। সাধারণত চাকরি জীবনে ৩টার বেশি মিশন পাওয়া যায় না। মিশন বা প্রশিক্ষনের সুবিধার্থে বিনা খরচে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভ্রমণের সুযোগ থাকে।
যোগ্যতা অনুযায়ী পদোন্নতিও পাওয়া যায়। সাব-ইন্সপেক্টর থেকে পদোন্নতি পেয়ে অ্যাডিশনাল এসপি বা অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হওয়া যায়।

আন্তরিক সেবা পাবেন । সবধরনের অপারশেন এর ব্যবস্থা এখানে ধীরে ধীরে গড়ে উঠছে । এখানে বড় সুবিধা হলো সব ধরণের ওষুধ এর পর্যাপ্ত সরবরাহ । কোন ওষুধ না পাওয়া গেলে প্রয়োজনে অর্ডার দিয়ে আনা হয় সেটা যত দূর্লভ আর দামিই হোক না কেন ।এই সুবিধা আপনি অন্য কোন জবে পাবেন না ।

পুলিশ সাব ইন্সেপেক্টর (এসআই) বেতন কত 3

এখানে চাকরির বৈচিত্র্যতা আছে। আপনি চাইলে ইউনিফর্ম পরে থানায় ব্যস্ততম জীবন-যাপন করতে পারেন অথবা পুলিশের অন্য ইউনিট-এ সিভিলের মতো এসি রুমে ৯টা-৫টা অফিস করতে। পুলিশের এই চাকুরী মতো এতো বৈচিত্র্য আপনি আর কোন জবেই পাবেননা ।আপনি পুলিশিং ছাড়াও এখানে ইচ্ছে করলে শিক্ষকতা করতে পারবেন ট্রেনিং একাডেমী ও স্কুলে, পোশাক ভালো না লাগলে সাদা পোশাকে গোয়েন্দাগিরি, সি আই ডিতে কোন বিশেষ শাখায় গবেষণা থেকে আই টি বিভাগের এক্সপার্ট, পুলিশ হাসপাতালে ডাক্তারী থেকে ডিবির বোম্ব ডিসপোজাল টিমের টিম লিডার, ডেস্কজব থেকে শুরু করে রাস্তায় হরতাল ডিউটি আপনার ইচ্ছে এমন সবকিছু যা অন্য চাকুরীতে করতে চাইতেন তা এখানে পাবেন ।প্রত্যেক ইউনিটে আলাদা আলাদা পোশাক আপনাকে দিবে রুচি বদলের সুযোগ ।এপিবিএন থেকে স্পেশাল ব্রাঞ্চ, নৌ-পুলিশ থেকে টুরিস্ট পুলিশ, বাংলাদেশ পুলিশ থেকে জাতিসংঘ মিশনের সদর দপ্তর সব জায়গায় পদচারন করার সুযোগ থাকে সাব-ইন্সপেক্টরের । এছাড়া রিকশাওয়ালা থেকে শুরু করে দিনমজুর, প্রধানন্ত্রীর প্রটোকল থেকে শুরু করে রাষ্ট্রপতি ভবন, সবার সরাসরি সেবা আপনি করতে পারবেন । খেলার সময় বিশ্বের নামী দামি খেলোয়ারদের নিরাপত্তা দিয়ে,কাছ থেকে দেখার ও সাক্ষাতের সুযোগ পাবেন। আর একজন সাব-ইন্সপেক্টর হতে পারলে , তার জন্য পারিবারিক ও সামাজিক নিরাপত্তা সু-নিশ্চিত।

এতক্ষন অনেক সুবিধাই দেখলাম। দেখে তো খুব ভালো মনে হলো। আমাদের সবারই জানা যার যত সুবিধা, তার আবার কিছু হলেও অসুবিধা থাকে। তেমনই এই চাকরিতেও কিছু অসুবিধা রয়েছে। যেমন:
১। চ্যালেঞ্জিং জব। সর্বদা বিচক্ষণ থাকতে হয়।
২। মাঝে মাঝে চরম বিরূপ পরিবেশে কাজ করতে হয়। আপনার সামান্য ভুলের কারণে অপূরণীয় ক্ষতি হতে পারে।
৩। আপনি সৎ হওয়া সত্বেও, কতিপয় লোক আপনার সমালোচনা করতে পারে। কারন বাইরে থেকে দেখা যাবে আপনি অন্যয় কাজ করতেছেন। কিন্তু আসলেই তা নয়। তো সভাবতই সমালোচনার মুখে পড়তে হয়।
১। পূর্বে এসআই থেকে ইন্সপেক্টর(অর্থাৎ ওসি) এ প্রমোশন পেতে ১৫/১৬ বছর লেগে যেত। সরকারের আন্তরিকতায় বর্তমানে চাকরির মেয়াদ ৫ বছর ও ইন্সপেক্টরশীপ পাস করলেই প্রমোশন হয়ে যায়।
২। পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর টু আইজিপি পর্যন্ত পদের রাঙ্ক ব্যাজ এক ধাপ উন্নতি করার প্রক্রিয়া চলছে। আশা করি খুব শীঘ্রই হয়ে যাবে।

Comments (No)

Leave a Reply

এই সাইটের কোন লেখা কপি করা সম্পুর্ন নিষেধ