ইন্টারনেট থেকে আয়; সত্যি কি সম্ভব? 1

ঘরে বসে কি সত্যি ইন্টারনেট থেকে আয় করা যায়?

–এই নিয়ে সন্দেহ আর বিশ্বাস-অবিশ্বাসের দোলাচলে ভুগছেন অনেকেই।
অনেকের কাছেই এটা ভুয়া গল্প মাত্র, আবার অনেকেই ভালো ফলও পাচ্ছেন।
আর কেউ কেউ আছেন,
যাঁরা বিশ্বাস বুকে নিয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছেন,
সাফল্যের মুখ দেখতে পারছেন না তাঁদের ভুল পদ্ধতি কিংবা ভুয়া পথে হাঁটার জন্যে।

হ্যা, ইন্টারনেট থেকে টাকা কামানো যায়।
তবে একটা বিষয় সত্যি, আপনি খুঁজলে যে পথগুলো পাবেন তার সিংহভাগই স্ক্যাম; আর একারণেই অনেকের বিশ্বাস উঠে গেছে, ভুয়া গল্প মনে করছেন।
অনলাইন আর্নিং-এ (আউটসোর্সিং) বাংলাদেশ বেশ ভালো করছে, কিছুদিন আগে একটা প্রতিবেদনে পড়েছিলাম- বিশ্বের শহরগুলোর মধ্যে ইন্টারনেট ভিত্তিক আউটসোর্সিং-এ ঢাকার অবস্থান তৃতীয়!

dollar111

আপনি যদি ভেবে থাকেন যে ঘরে বসে এবং ঘুমিয়ে থেকে, দুই-চারটা ক্লিক করবেন আর ইন্টারনেটের টাকা আপনার পকেটে চলে আসবে, তাহলে বলবো আপনি নেহায়ত একটা বোকা।
একটা ব্যাপার ভাবুন, আপনি যে চাকুরীটা করেন সেখানে আপনাকে সাত-আট ঘণ্টা সময় দিতে হয়। এক্ষেত্রেও আপনাকে পরিশ্রম করতে হবে।
তবে হ্যা, আউটসোর্সিং-এ পথভেদে আপনাকে পরিশ্রম কম-বেশি করতে হতে পারে।

চলুন দেখি ইন্টারনেট থেকে টাকা কামানোর কী কী পথ আছে-

১. গুগল এডসেন্সঃ এটি সবচেয়ে জনপ্রিয়, আলোচিত এবং অবশ্যই বিশ্বস্ত পদ্ধতিগুলোর একটি। এক্ষেত্রে আপনার নিজের একটি ওয়েবসাইট থাকতে হবে। Google-এর বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করবেন আপনার সাইটে, ভিজিটররা সেই বিজ্ঞাপনের লিংকে ক্লিক করলে আপনি নির্দিষ্ট অংকের টাকা পাবেন।
সেক্ষেত্রে আপনার সাইট গুগল কর্তৃক অনুমোদিত হতে হবে।
এ বিষয়ে পরবর্তীতে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

২. অন্যান্য বিজ্ঞাপনঃ ইন্টারনেটে গুগল এডসেন্সের মতো আরও কিছু প্রতিষ্ঠান আছে, আপনি তাদের বিজ্ঞাপন দেওয়ার কাজ করতে পারেন। এর মধ্যে তুলনামূলক জনপ্রিয়- AdBrite, Clicksor ইত্যাদি।

৩ . ফ্রিল্যান্সঃ এটিই মূলত বহুল প্রচলিত পদ্ধতি।
আপনাকে ফ্রিল্যান্সিং সাইটে নিবন্ধন করে সদস্য হতে হবে। যাঁদের কাজ করিয়ে নেওয়া দরকার তাঁরা এইসব সাইটে কাজের বিজ্ঞাপন দিবেন।
সেটি হতে পারে প্রোগ্রামিং বিষয়ক কিছু, বাগ ফিক্সিং, ওয়েব সাইট তৈরি অথবা ব্যক্তিগত সহকারীর কাজ! আপনি আপনার যোগ্যতা অনুযায়ী সেখানে আবেদন (বিড) করবেন।
কাজদাতা যদি আপনাকে পছন্দ করেন, তাহলে আপনি তাঁর কাজ করে দিয়ে বাজেট অনুযায়ী টাকা পাবেন। এক্ষেত্রে দক্ষতা এবং সততা যথেষ্ট হওয়া উচিৎ।

৪. ব্লগ লেখাঃ একটি নির্দিষ্ট কিংবা একাধিক বিষয়ের উপর আপনি ব্লগ লিখবেন, সেখানে বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের মাধ্যমে আয় করবেন।
আপনার লেখা হতে হবে যথেষ্ট তথ্যবহুল।
ভেবে দেখুন, আপনি যে বিষয়ে লিখছেন সেই একই বিষয়ে ইন্টারনেটে শত শত ব্লগ আছে, তাহলে ভিজিটর সেগুলো ছেড়ে আপনার ব্লগে কেন আসবে?

৫. এফিলিয়েট মার্কেটিংঃ কোনও কোম্পানির এফিলিয়েট মেম্বার হলে তারা আপনাকে একটা লিংক দেবে।
সেই লিংক আপনি বিভিন্ন জায়গায় ব্যবহার করবেন। আপনার লিংকে ক্লিক করে কেউ যদি ওই পন্য কেনে, তাহলে লভ্যাংশ থেকে একটা নির্দিষ্ট অংশ আপনি পাবেন।

৬. পিটিসিঃ আপনাকে কিছু লিংক দেওয়া হবে, আপনি সেই লিংকে ক্লিক করবেন।
এটি মূলত বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের উল্টো বিষয়।
এক্ষেত্রে আপনার ক্লিক থেকে তারা যে লাভ পাচ্ছে, তার একটা ভাগ পাচ্ছেন আপনি।

৭. ডোমেইন-হোস্টিং বিক্রয়ঃ ডোমেইন বিক্রয় এবং হোস্টিং রিসেল করে আপনি ভালো পরিমান একটা অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।

৮. ডোমেইন পার্কঃ ধরুন ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট নেই।
আপনি তাঁর নামে একটা ডোমেইন কিনে রাখলেন।
তিনি যখন ডোমেইন কিনতে গিয়ে দেখবেন তাঁর নামের ডোমেইন আপনি কিনে রেখেছেন, তখন নিশ্চয়ই সেটি তিনি পেতে চাইবেন।
এবার আপনি ঝোপ বুঝে কোপ মারবেন।
মাত্র ১০ডলারে কেনা ডোমেইন business.com বিক্রী হয়েছিল ৭ লাখ ডলারে।
আর বারাক ওবামার নামের একটি ডোমেইন এখন পর্যন্ত ২১ লাখ ডলার দাম উঠেছে।
এটি ডোমেইন পার্কিং।
ডোমেইন পার্ক করার পদ্ধতি নিয়ে পরে আলোচনা করা হবে।

৯. আর্টিকেল লেখাঃ বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করায় এমন ব্লগের জন্যে আর্টিকেল লিখে দিতে পারেন আপনি।
ইন্টারনেটে আয় করার এটি অনেক ভালো একটি উপায়। ইংরেজিতে ভালো দক্ষতা থাকলেই এই কাজে সাফল্য সম্ভব।
প্রতি ৫০০ শব্দের আর্টিকেল লিখে ২ থেকে ১২ ডলার পর্যন্ত পাওয়া যায়।

১০.এমন কিছু ফ্রিল্যান্সিং সাইট আছে যা থেকে আপনি কিছু টাকা ইনবেস্ট করে টাকা ইনকাম করতে পারেন।
সেখানে আপনি কিছু শিয়ার কিনতে পারেন।
তেরকম একটি সাইট আপনাদের দিলাম।

এখানে আ্যকাউন্ট খুন।

১০. অন্যান্যঃ এছাড়াও ডিজিটাল পন্য তৈরি করে বিক্রি করতে পারেন।
ইবুক লিখে অনেকেই ভালো অংকের টাকা কামাচ্ছেন। কেনা-বেচা করেও আপনি অর্থের মুখ দেখতে পারবেন, কিছু কিনে রাখলেন পরবর্তীতে তুলনামূলক বেশি দামে বিক্রি করে দিবেন।
একটা পদ্ধতি হল সার্ভে, বিভিন্ন প্রকার জরীপে অংশ নিতে পারেন আপনি।
আরও কিছু পদ্ধতি হয়তো বাদ পরে গেছে, নিজে একটু ভাবুন, জানার চেষ্টা করুন।

পদ্ধতি যেটাই হোক, আপনাকে হতে হবে সৎ, নিষ্ঠাবান আর পরিশ্রমী। নয়তো শেষ পর্যন্ত আপনিও বলে বসবেন ‘ধুর! সব ভুয়া!’। আরেকটা বিষয় হল- আপনাকে অবশ্যই বিশ্বস্ত মাধ্যমে কাজ করতে হবে। কোথাও কাজ করার আগে সেটির বিযয়ে খোঁজখবর নিন।

Leave a Reply

You missed

এই সাইটের কোন লেখা কপি করা সম্পুর্ন নিষেধ