আমেরিকায় শিক্ষকদের বেতন কত?

বাংলাদেশে অন্য সব পেশার মতোই শিক্ষকদের বেতন নির্ধারিত হয় সরকারি স্কেলে। ফি বছর বেতন কত করে বাড়বে, সেটিও নির্দিষ্ট থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন সবচেয়ে বেশি, এরপর কলেজ, মাধ্যমিক স্কুল, প্রাথমিক স্কুল। বলার অপেক্ষা রাখে না, বেতন এবং সামাজিক মর্যাদার দিক থেকে প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকেরা একেবারেই মানবেতর জীবনযাপন করে থাকেন। আমেরিকায় শিক্ষকদের বেতন কত?

আমেরিকায় শিক্ষকদের বেতন কত? 1

যখন বেতন নিয়ে কথা বলছি, তখন সামাজিক মর্যাদার এই বিষয়টিও উপেক্ষা করা চলে না। আমি এই লেখায় প্রাইভেট স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আলোচনার বাইরে রাখছি মূলত দুটি কারণে। সন্দেহ নেই যে ওই সব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের বেতন ভাতা পাবলিক শিক্ষায়তনের শিক্ষকদের তুলনায় অনেক বেশি। তবে কীভাবে তা নির্ধারিত হয় এ সম্পর্কে আমার সম্যক কোনো ধারণা নেই। আর শিক্ষকদের মূল সমগ্রকে তাদের সংখ্যা খুব একটা বেশি নয়। আমি নিজে যেহেতু দেশে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলাম এবং বর্তমানে আমেরিকাতেও একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েই শিক্ষকতা করছি। তাই আজকের মূল আলোচনা সীমাবদ্ধ রাখব আমেরিকা আর বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন ভাতার মাঝেই।

প্রথমেই বলা ভালো, দেশে যেমন সরকারের জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন ভাতা নির্ধারিত হয়, আমেরিকায় তা নয়। এখানে পুরোদস্তুর মুক্তবাজার অর্থনীতির প্রয়োগ ঘটে। অর্থাৎ চাহিদা আর যোগানের ভিত্তিতেই শিক্ষকদের বেতন নির্ধারিত হয়। শুধু তাই নয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর র‍্যাংক বেতনের ক্ষেত্রে খুব বড় ভূমিকা পালন করে থাকে। যত নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষকদের বেতন তত বেশি। অবস্থানগত কারণেও বেতনের তারতম্য হয়ে থাকে। বড় শহরে জীবনযাত্রা ব্যয় বহুল, তাই সেখানকার বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতন বেশি, ছোট শহরের বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতন কম।

আমেরিকায় শিক্ষকদের বেতন কত? 2

সবচেয়ে বেশি বেতনধারী

এই মুহূর্তে আমেরিকায় যে শিক্ষক সবচেয়ে বেশি বেতন পান, তিনি হলেন কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ডেভিড সিলভারস। অবশ্যই এটি একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়। তাঁর বেতন বছরে ৪.৩৩ মিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ টাকার অংকে বার্ষিক বেতন ৩৭ কোটি টাকা-অবিশ্বাস্য। তবে সবাই তো আর এমন বেতন পান না। যদি গড় বেতন ধরি তবে একটি মানসম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রফেসরদের বার্ষিক বেতন ২ কোটি টাকা। সহযোগী অধ্যাপকের বার্ষিক বেতন ১ কোটি ৫০ লাখ এবং সহকারী অধ্যাপকের ১ কোটি টাকার মতো। তবে গড়ের মাঝেও শুভঙ্করের ফাঁকি আছে।

যখন বলছি, গড় ২ কোটি, তখন কোনো প্রফেসর বেতন পাচ্ছেন ৫০ লাখ টাকা, আবার কেউ ১০ কোটি। অথচ দুজনের পদই কিন্তু প্রফেসর। এমন ভয়াবহ বেতনের তারতম্য কি হতে পারে? উত্তর হচ্ছে, অবশ্যই পারে।

আমেরিকায় শিক্ষকদের বেতন কত? 3

আমার বিশ্ববিদ্যালয়

অন্যদের কথা বাদ দেই, আমি যে বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করি তার কথাতেই আসি। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষকের কোনো পদ নেই। প্রারম্ভিক পদ হলো সহকারী অধ্যাপক। গড় বেতন বার্ষিক ৫০ লাখ টাকা। আমাদের বিভাগে বেতন এমনই। বিজ্ঞান অনুষদের অন্যান্য বিভাগেও বেতন এমনই। কিন্তু কলা অনুষদে বেতন কম-৩০ লাখ টাকার মতো। বাণিজ্য অনুষদে বেতন ১ কোটি টাকা। চিকিৎসা অনুষদে বেতন ২ কোটি টাকার মতো। শুধু তাই নয়-একই বিভাগে বিভিন্ন শাখার প্রারম্ভিক বেতন আলাদা আলাদা।

আমাদের বিভাগ গাণিতিক বিজ্ঞানে চারটি শাখা আছে। গণিত শাখা এবং গণিত শিক্ষা শাখায় প্রারম্ভিক বেতন ৪০ লাখ, পরিসংখ্যানে ৫০ লাখ। আর বীমা সংক্রান্ত বিজ্ঞানে ৬০ লাখ টাকা। নির্বাচিত হওয়ার পর একজন শিক্ষকের কাছে জানতে চাওয়া হয়, তার প্রত্যাশিত বেতন কত? এরপর বিভাগ থেকেও একটা প্রস্তাব দেওয়া হয়। তারপর চলে দর কষাকষি। দুইপক্ষ সম্মত হলে নিয়োগপত্র ইস্যু করা হয়। নির্বাচিত হওয়ার পরেও প্রত্যাশিত বেতন না পাওয়ায় কাজে যোগদান করেননি-এমন বেশ কিছু ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছি।

আমেরিকায় বেতন নির্ধারণ হয় কৃতিত্বের ওপর

বাংলাদেশে জাতীয় স্কেল অনুসারে বছর গেলে একটি নির্দিষ্ট হারে শিক্ষকদের বেতন বাড়ে। এর সাথে তাদের কৃতিত্বের কোনো সম্পর্ক নেই। অর্থাৎ মুড়ি মিছরির একই দাম। কিন্তু আমেরিকায় বেতনের প্রধানতম অংশই নির্ধারিত হয় শিক্ষকের কৃতিত্বের ওপরে। যে কারণে আজ দুজন শিক্ষক একই বিভাগে একই পদে একই বেতন ধরা যাক ৫০ লাখ টাকায় যোগদান করার ১০ বছর পর দেখা যাবে, একজনের বেতন হয়েছে ৬০ লাখ আর আরেক জনের ১ কোটি বা তারও বেশি।

বাংলাদেশে তথাকথিত নীতিমালার সুযোগ নিয়ে একজন প্রভাষক সারাজীবন কিছুই না করেও একটা সময়ের পরে যেয়ে প্রফেসর হয়ে যেতে পারেন। আমি রাবি সিন্ডিকেট সদস্য থাকাকালীন একজন শিক্ষক ‘কোন কিছু না থাকিলে’ এই ক্যাটাগরিতে ৩০ বছরের মাথায় প্রফেসর পদে পদোন্নতি পেয়েছিলেন, যার কোনো উচ্চতর ডিগ্রি ছিল না, ছিল না একটিও প্রকাশনা। অথচ আমি এখানে এক শিক্ষককে চিনি, যিনি ১৯৮৬ সালে সহকারী অধ্যাপক পদে যোগ দিয়েছিলেন, এখন ২০২০। অর্থাৎ এই ৩৪ বছরে তিনি একবারের জন্যও পদোন্নতির আবেদন করেননি-তিনি এখনো রয়ে গেছেন সহকারী অধ্যাপক।

শিক্ষকদের ক্যাটাগরি ভাগ

এখানে গবেষণা, পাঠদান এবং সেবা এই তিনটি শাখায় বিভাগের সব শিক্ষককে পাঁচটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়-০, ১, ২, ৩ ও ৪। শূন্য হলো সবচেয়ে দুর্বল আর চার সবচেয়ে বেশি ভালো। র‍্যাংকিংয়ের সময় প্রকাশনা বা গবেষণাতে ৫০ শতাং, পঠন পাঠনে ৩০-৪০ শতাংশ এবং সেবায় ১০-২০ শতাংশ গুরুত্ব দেওয়া হয়ে থাকে। পাঠদানের ক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীদের মূল্যায়নকে খুবই গুরুত্ব দেওয়া হয়। কোনো শিক্ষক এই ক্ষেত্রে যদি সর্বোচ্চ ৫ স্কোরের মধ্যে ৩ এর কম পান, তবে তাকে একটা সতর্ক বার্তা পাঠানো হয়। পরপর ৩ বছর যদি এর পুনরাবৃত্তি ঘটে, তবে যতই ভালো গবেষক অথবা সেবক হন না কেন, তিনি তার চাকরি হারাবেন। অথচ আমাদের দেশের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীদের এই ধরনের মূল্যায়নের কোনো সুযোগই নেই। এরকম নিয়ম থাকলে কতজন চাকরি বাঁচাতে পারতেন, সেই বিষয়ে আমার ঘোরতর সন্দেহ আছে। যা হোক, এই মেধা ক্যাটাগরির ভিত্তিতেই শিক্ষকদের বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি নিরূপন করা হয়ে থাকে।

একটা উদাহরণ দেই। ধরা যাক, একটি বিভাগে পাঁচজন শিক্ষক আছেন। ক-এর বেতন ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা, চ-এর বেতন ১ কোটি ২০ লাখ, ট-এর ১ কোটি, ত-এর ৮০ লাখ আর প-এর ৫০ লাখ। ক-এর র‍্যাংক ৪, চ-এর ৩, ট-এর ২, ত-এর ১ আর প-এর ০। সে বছর বিভাগে বেতন বৃদ্ধির বরাদ্দ এল মোট ২০ লাখ টাকা। কীভাবে এই বেতন ভাগ হবে?

মোট বৃদ্ধির ২৫ শতাংশ সবাই পাবে সমানভাবে। কিন্তু ৭৫ শতাংশ ভাগ হবে মেধাক্রম অনুসারে। এ ক্ষেত্রে ২০ লাখ টাকার ২৫ শতাংশ অর্থাৎ ৫ লাখ টাকা সবার মাঝে ভাগ হবে। প্রত্যেকে পাবে ১ লাখ টাকা। বাকি ১৫ লাখ টাকার মধ্যে প-কিছুই পাবেন না, যেহেতু তিনি আছেন ০ ক্যাটাগরিতে। ত-পাবেন ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ট-পাবেন ৩ লাখ, চ-পাবেন ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা, আর ক-পাবেন ৬ লাখ। অর্থাৎ এক বছর পর ক-এর বেতন হবে ১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা, চ-এর ১ কোটি ২৫ লাখ ৫০ হাজার, ট-এর ১ কোটি ৪ লাখ, ত-এর ৮২ লাখ ৫০ হাজার আর প-এর ৫১ লাখ টাকা।

শুধু তাই নয়, ক-যেহেতু সবার থেকে ভালো করেছেন, তিনি বিভাগের সভাপতির বিশেষ তহবিল থেকে হয়তো আরও ১ লাখ টাকা পেলেন। সভাপতি তার নাম পাঠিয়ে দিলেন ডীন মহোদয়ের কাছে। ডীন তার তহবিল থেকে দিলেন আরও ৩ লাখ টাকা এবাং তার নাম সুপারিশ করে দিলেন প্রভোস্ট মহোদয়ের কাছে। আমাদের দেশে ছাত্রাবাসের প্রাধ্যক্ষকে প্রভোস্ট বলা হয়ে থাকে, কিন্তু এ দেশে প্রভোস্ট হলেন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা বিষয়ক প্রধান কর্তা ব্যক্তি। তিনি তার তহবিল থেকে আরও ৫ লাখ টাকা দিয়ে ক-এর নাম পাঠিয়ে দিলেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রধান প্রেসিডেন্টের কাছে। প্রেসিডেন্ট ক-এর কাজে সন্তুষ্ট হয়ে আরও ১০ লাখ টাকা তার বেতনের সাথে যুক্ত করলেন।

তাহলে দেখুন, ১ বছর পর যেখানে প-এর বেতন ৫০ থেকে বেড়ে মাত্র ৫১ লাখ হলো, সেখানে ক-এর বেতন ১ কোটি ৫০ লাখ থেকে বেড়ে দাঁড়াল ১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। আরেকটি বিষয় মাথায় রাখা দরকার যে, এ দেশে ১০ মাসে বছর। গ্রীষ্মে সাধারণত কোনো কাজ নেই, কোনো বেতন নেই। তবে এ সময় সামার ক্লাসসহ বেশ কিছু কাজ হয়ে থাকে। এই সময় কেউ কাজ করলে তিনি তার বেতনের সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তি আয় করতে পারেন।

বেতনই শেষ কথা

এতক্ষণ তো গেল সব ভালো ভালো কথা-এবার কিছু মন্দ কথা হোক। এ দেশে বেতনই হলো শেষ কথা, ভাতা বলে আর কিছু নেই। বাড়ি ভাড়া হিসেবে দেশে যেমন বেতনের ৪৫% দেয়া হয় এখানে তেমন কিছু নেই। নেই পরীক্ষায় কোনো ধরনের পারিতোষিক। প্রশ্ন করা, খাতা দেখা সব কাজের অঙ্গ, এর জন্য কোন পয়সা নেই।

আপনি এমফিল বা পিএইচডি তত্ত্বাবধান করবেন, তার জন্যও কোনো পয়সা নেই। এখানে ভর্তি পরীক্ষা হয় না, ছাত্রছাত্রী ভর্তি হয় SAT/ACT এর ফলাফল আর স্কুল থেকে পাওয়া জিপিএ’র ভিত্তিতে। তাই ভর্তি পরীক্ষা থেকে আয়ের কোনো সুযোগ নেই। বেতন পাওয়া যায় ১০ মাস।

আমাদের দেশে যেমন দুটো ঈদ বোনাস এবং পহেলা বৈশাখের ভাতা আছে, এখানে তার কিছুই নেই। দেশে অনেকেই অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে এক্সটার্নাল হয়ে যেয়ে কিছু আয় করেন আর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ দিয়েই অনেকে কোটিপতি বনে গিয়েছেন বলে শুনেছি। এখানে এর কিছু নেই। উপরন্তু ট্যাক্স বেতনের ৩০ শতাংশ বা তারও বেশি। তিনদফা ট্যাক্স, স্বাস্থ্য বীমার উচ্চ প্রিমিয়াম, সামাজিক সুরক্ষা এসব খাতে চলে যায় বেতনের ৪০ শতাংশ বা তারও বেশি।

বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে

আমি হিসাব করে দেখেছি, বাংলাদেশে একজন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বেতন, বাড়িভাড়া ও অন্যান্য ভাতা ধরে বছরে ১২ থেকে ১৫ লাখ টাকা আয় করে থাকেন। আমেরিকায় আমার বিভাগের একজন প্রফেসর সব কিছু বাদ দিয়ে গড়ে পান ৫০ লাখ টাকার মতো। অর্থাৎ পার্থক্য ৩ থেকে ৪ গুণ। জীবনযাত্রার ব্যয় হিসাবে নিলে এই পার্থক্য আরও অনেক কমে আসবে।

বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে বলতেই হবে, কেন না আজ থেকে বছর বিশেক আগে বাংলাদেশের প্রফেসরদের বেতন ছিল আমেরিকার তুলনায় ২০ ভাগের এক ভাগ। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির এক সরল চিত্র তো এখান থেকেই ফুটে ওঠে।

আমেরিকার স্কুলশিক্ষকদের বেতন

এবার খুব সংক্ষেপে আমেরিকায় স্কুলশিক্ষকদের বেতনের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতনের তুলনা করে দেখি। অবশ্যই স্কুল শিক্ষকদের গড় বেতন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের গড় বেতনের তুলনায় কম। তবে তা খুব বেশি কম নয়। এমন অনেক স্কুলশিক্ষককে দেখা যাবে, যাদের বেতন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসরদের চেয়েও বেশি।

আমি বেশ কয়েকজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষককে চিনি, যাঁরা সরাসরি স্কুলশিক্ষক পদে থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দিয়েছেন। আবার বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা ভালো লাগেনি বলে স্কুলে গিয়ে শিক্ষকতা করছেন-এমন শিক্ষকেরও দেখা মেলে। আমি এমন একজন প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষককে চিনি, যাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আমন্ত্রণ জানানোর পরেও তিনি স্কুল ছেড়ে আসেননি। বাচ্চাদের পড়িয়ে তিনি বেশি তৃপ্তি পান। তার বেতন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক প্রফেসরের থেকে বেশি। আর আমেরিকায় মানুষের মর্যাদা তো মানুষ হিসেবেই।

আমাদের দেশের মতো বড় শিক্ষক, ছোট শিক্ষক-এমন কোনো ভেদাভেদ বা সামাজিক বৈষম্য নেই। স্কুল পর্যায়ে ভালো শিক্ষক আছেন বলেই এদের ভিত্তিটা এত মজবুত। ব্রিটিশ আমলে বাংলাদেশের স্কুলগুলোতে শিক্ষকদের মান নিয়ে যেসব গল্প শুনেছি, তার বাস্তবতা এখনো এ দেশে চোখে পড়ে। আমাদের দুর্ভাগ্য দেশে আমরা তা ধরে রাখতে পারিনি।

Comments (No)

Leave a Reply

এই সাইটের কোন লেখা কপি করা সম্পুর্ন নিষেধ