মেয়েদের ঘরে বসে রোজগারের সেরা ৫টি উপায় আমাদের নিজেদের অর্থনীতি এখন ধীরে ধীরে অনেক শক্তিশালী হচ্ছে। বাংলাদেশের আর্থসামাজিক সমৃদ্ধির পিছনে ছেলে ও মেয়ে উভয়ের অবদান রয়েছে। ঘরে বসে আয় করা এখন মেয়েদের জন্য নতুন কিছু নয়। তরুণদের পাশাপাশি এখন তরুণীরাও ঘরে বসে বিভিন্ন কাজকর্ম করে নিজেরাই নিজেদের কর্মসংস্থান তৈরি করে নিয়েছে। তো, ডেইলি লাইভের আজকের পোস্টে আমরা জানবো— মেয়েদের ঘরে বসে রোজগারের সেরা ৫টি উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত।
আশা করি পুরো আর্টিকেলটি পড়লে আপনি ঘরে বসে মেয়েদের রোজগারের সেরা ৫টি উপায় সম্বন্ধে জানতে পারবেন। বর্তমানে আধুনিক যুগ হওয়ায় মেয়েদের জন্য অনেক সুযোগ-সুবিধা বিদ্যমান রয়েছে। এখন মেয়েরা চাইলে ঘরে বসে আরামেই রোজগার করতে পারেন। এখন তারা অনলাইন প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘরে বসে রোজগার করার অনেক উপায় অবলম্বন করতে পারবেন। তো, চলুন সেই উপায়গুলো জানা যাক।
মেয়েদের ঘরে বসে রোজগারের সেরা ৫টি উপায়:
হস্তশিল্প বিক্রি করে আয়
ঘরে বসে মেয়েরা হস্তশিল্প তৈরি করতে পারে। যেমন: কাগজের তৈরি শিল্প, পুঁতি ও ব্রেসলেট ইত্যাদি অতি নৈপুণ্যে তৈরি করতে পারে। এছাড়া মেয়েরা যেকোনো শৌখিন জিনিস ও সজ্জিত উপকরণ তৈরি করে সেগুলো বিক্রি করার মাধ্যমে আয় করতে পারে।
উপরোক্ত তৈরি পণ্যগুলো এখন ঘরে বসে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করে বিক্রি করা যায়। বর্তমানে অনেকগুলো জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া ওয়েবসাইট রয়েছে যেগুলো ব্যবহার করে মার্কেটিং করা যায়।
এসব সোশ্যাল মিডিয়ার নেটওয়ার্কিং ওয়েবসাইট ব্যবহার করে অল্প সময়ের মধ্যে মার্কেটিং করে সফলতা লাভ করা সম্ভব। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং জনপ্রিয় হয়ে গেছে। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে না এমন মানুষ নেই বললেই চলে। মানুষ এখন ধীরে ধীরে সোশ্যাল মিডিয়া আসক্ত হয়ে পড়েছে। মেয়েরা চাইলেই, হস্তশিল্পের পণ্য সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করে কাস্টমারের নিকট পৌঁছে দিতে পারবে।
সোশ্যাল মিডিয়া সাইটগুলোর মধ্যে অন্যতম সেরা জনপ্রিয় হলো ফেসবুক। ফেসবুকে খুব সহজে একটা ব্যবসায়িক পেজ তৈরি করে মার্কেটিং করা যায়। এখানে চাইলেই ফ্রিতে মার্কেটিং করা যায়। এজন্য আপনার ফেসবুক পেজের ফলোয়ার সংখ্যা বাড়াতে হবে। প্রতিনিয়ত আকর্ষণীয় পোস্ট করে ফলোয়ার সংখ্যা বাড়ানো সম্ভব।
হস্তশিল্প সম্পর্কিত বিভিন্ন ইমেজ ও পোস্ট পাবলিশ করলে একটা অডিয়েন্স বেস তৈরি হয়ে যাবে। সেখানে আপনি নিজে তৈরি হস্তশিল্পের মার্কেটিং করে বিক্রি করতে পারবেন। এ ছাড়া আপনি ফেসবুকের পেজ মার্কেটিং করে প্রথম অবস্থায় কাঙ্খিত গ্রাহকদের নিকট পণ্য বিক্রি করতে পারবেন।
তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে খুব সহজেই ফেসবুক মার্কেটিং অল্প সময়ের মধ্যে আয়ত্ত করতে পারবেন। ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিয়ে পণ্য অর্ডার গ্রহণ করে সেগুলো ডেলিভারি দিয়ে অনলাইনে ব্যবসা করতে পারবেন। অনলাইনে মার্কেটিং করার জন্য আপনাকে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। গ্রাহকদের সাথে প্রতারণামূলক কোনো কর্মকাণ্ড করা যাবে না। গ্রাহকরা আপনার প্রতি অসন্তুষ্ট হয়, এমন কাজ থেকে বিরত থাকুন।
রান্নার রেসিপি ভ্লগিং করে আয়
রান্নাবান্নার রেসিপি নিয়ে ভিডিয়ো তৈরি করলে সেটার কদর বেশি রয়েছে ইউটিউবে। আপনি যদি রান্নাবান্না বিষয়ে অনেক বেশি এক্সপার্ট হয়ে থাকেন, তবে সেগুলোর রেসিপি ভিডিয়ো তৈরি করে, সেটা থেকে ঘরে বসে রোজগার করতে পারবেন।
মেয়েদের ঘরে বসে রোজগার করার অন্যতম সেরা জনপ্রিয় উপায় হলো রান্না-বান্নার রেসিপি তৈরি করে আয়। আপনার রান্নাবান্না নিয়ে জ্ঞান-স্বল্পতা থাকতে পারে। এজন্য আপনি বিভিন্ন রান্না বিষয়ক ওয়েবসাইট ভিজিট করতে পারেন। ইংলিশ এমন অনেক ওয়েবসাইট রয়েছে রান্না বিষয়ে। সেখান থেকে রেসিপি নিয়ে ভিডিয়ো তৈরি করতে পারেন। তারপর ভিডিয়োগুলো আপনি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করে আপলোড দেবেন। সবসময় ব্যতিক্রমধর্মী রান্নাবান্নার রেসিপি নিয়ে ভিডিয়ো তৈরি করতে হবে। এসব ভিডিয়ো ইউটিউবে আপলোড করার পর, বিভিন্ন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে শেয়ার করতে হবে। এতে আপনার অনেক ফলোয়ার ও ভিউ হবে। এভাবে ঘরে বসে আপনি ইউটিউব থেকে রোজগার করতে পারেন।
বাংলাদেশের অনেক বড়ো বড়ো ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে, যেগুলো রান্নাবান্নার ভিডিয়ো করে এখন জনপ্রিয়। আপনি রেসিপি ভিডিয়ো তৈরি করার পাশাপাশি ঐতিহ্যবাহী খাবার নিয়ে রিভিউ ভিডিয়োও তৈরি করতে পারেন। এভাবে আপনি ইউটিউব চ্যানেলের পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়া ওয়েব সাইট যেমন ফেসবুক পেজ থেকেও আয় করতে পারবেন ভিডিয়ো কন্টেন্ট পাব্লিশের মাধ্যমে।
রান্নার রেসিপি ব্লগিং করে আয়
এ ছাড়া আপনি যদি লেখালেখি করে আয় করতে চান সে ক্ষেত্রে আপনাকে রেসিপিগুলো নিয়ে আর্টিকেল কনটেন্ট তৈরি করে ওয়েবসাইটে পাবলিশ করতে হবে। একটা ওয়েবসাইট তৈরি করতে খুব বেশি খরচ করতে হয় না। ডোমেইন ও হোস্টিং কিনলে একটা সুন্দর ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়। একটা ডোমেইন কিনে গুগলের ব্লগস্পট ব্যবহার করে হোস্টিং ছাড়া ফ্রিতেও ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়।
এভাবে মেয়েরা ঘরে বসে রোজগার করতে পারবেন ব্লগ মনিটাইজ করে। ইউটিউব চ্যানেল, সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং ওয়েবসাইট ও ব্লগ সাইট এই তিনটি উপায়ে ঘরে বসে মেয়েরা রোজগার করতে পারেন রেসিপি নিশ থেকে। এই উপায়ে মেয়েরা ঘরে বসে অনেক বেশি পরিমাণ অর্থ উপার্জন করতে পারে। প্রতিটা ক্ষেত্রে আয় করার জন্য আপনার সবকিছু মনিটাইজ করে নিতে হবে।
লেখালেখি করে আয়
মেয়েদের ঘরে বসে অনলাইনে রোজগার করার চতুর্থ উপায় হলো লেখালেখি করে আয় করা। লেখালেখি একটা বিশেষ দক্ষতা যেটা জানলে ঘরে বসে রোজগার করা যায়। একজন রাইটার ঘরে বসে ব্লগিং কিংবা ফ্রিল্যান্স লেখালেখি করে রোজগার করতে পারেন।
আপনি যদি লেখালেখি করতে পারদর্শী হন। তবে আপনার জন্য অনেক সুযোগ রয়েছে; যেখান থেকে ঘরে বসে রোজগার করতে পারেন। ফ্রিল্যান্সাররা ঘরে বসে লেখালেখি করে মিলিয়ন মিলিয়ন টাকা আয় করছে। ফ্রিল্যান্সিং শুধু ছেলেরা করে এমন নয়। হাজার হাজার পারদর্শী মেয়ে আছে যারা ফ্রিল্যান্সিং করছে। লেখালেখিতে মেয়েরা স্বভাবজাতভাবে অনেক বেশি পারদর্শী হয়। কারণ মেয়েরা অনেক গুছিয়ে লিখতে পারে।
লেখালেখি করে আপনি ফ্রিল্যান্সিং করার পাশাপাশি নিজস্ব ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরি করে আয় করতে পারবেন। আপনি যদি ইংরেজি আর্টিকেল লিখতে সক্ষম হন, তবে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে কাজ করতে পারেন। অনেক বাংলা আর্টিকেল রাইটারের কাজও রয়েছে ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইটে। এছাড়া বিভিন্ন পত্রিকা ও ম্যাগাজিন ওয়েবসাইটে কাজ করেও আয় করা যায়। উদাহরণস্বরূপ- আমাদের এই ডেইলি লাইভ সাইটেই ৩ জন ফিমেইল রাইটার কাজ করেন।
লেখালেখি করে আয় করতে চাইলে অবশ্যই আপনাকে কিছু বিষয়ে পারদর্শী হতে হবে। আপনি যে বিষয়ে পারদর্শী সে বিষয়ে লেখালেখি করা শুরু করবেন। একজন মেয়ে হিসেবে আপনি স্বাস্থ্য, লাইফস্টাইল রান্নার রেসিপি, রূপচর্চা ও শিক্ষা ইত্যাদি টপিকে লেখালেখি করতে পারেন। লেখালেখি করে আয় করার অনেক সাইট রয়েছে যেগুলো বিকাশে পেমেন্ট করে।
এছাড়া আপনি ব্লগ ওয়েবসাইট স্বল্পমূল্যে তৈরি করে সেখানে ব্লগিং করতে পারেন। আপনি নির্দিষ্ট বিষয়ে ওয়েবসাইট বানিয়ে নিয়মিত কনটেন্ট পাবলিশ করবেন। গুগল অ্যাডসেন্স পলিসি মোতাবেক কাজ করলে, একটা সময় পর মনিটাইজ পাবেন। এজন্য আপনাকে আবেদন করতে হবে। আপনার ওয়েবসাইটে বেশি ট্রাফিক আনতে পারলে অনেক বেশি আয় করা সম্ভব। এছাড়া আপনি আর্টিকেল লিখে প্রতি আর্টিকেল বিক্রি করে আয় করতে পারেন।
অনলাইনে ডাটা এন্ট্রি করে আয়
ডাটা এন্ট্রি করা অনেক সহজ কাজ। অনলাইনে ডাটা এন্ট্রি করার কাজ করতে তেমন বেশি দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার প্রয়োজন পড়ে না। ডাটা মানে তথ্য সম্পর্কিত কাজ। ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে ডাটা এন্ট্রি করার ব্যাপক কাজ রয়েছে। আপনি যদি মাইক্রোসফট এক্সেল ও মাইক্রোসফট ওয়ার্ড অ্যাপ্লিকেশন দুটি চালাতে দক্ষ হন, তবে ডাটা এন্ট্রি করে আয় করতে পারেন। একজন নতুন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে এটা আপনার জন্য উপযুক্ত জব হবে। এখানে শুধু কম্পিউটারের বিষয়ে ব্যাসিক জ্ঞান থাকলেই এই জব করা যায়।
একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে ডাটা এন্ট্রি জব করার জন্য টাইপিং স্পিড গুরুত্বপূর্ণ। আপনাকে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে ক্যাপচা পূরণ করার মাধ্যমেও এই কাজ করতে হতে পারে। ডাটা এন্ট্রি জব প্রচুর পরিমাণ রয়েছে। তাই মেয়েদের ঘরে বসে রোজগার করার সেরা একটি উপায় হবে এটি।
আমাদের শেষ কথা
আজকের আর্টিকেলের মূল বিষয়বস্তু ছিল মেয়েদের ঘরে বসে রোজগারের সেরা ৫টি উপায়! আশা করছি আর্টিকেলটি পড়ে আপনি উপকৃত হয়েছেন। আপনারা নিয়মিত এরকম টিপস এন্ড ট্রিকস রিলেটেড আর্টিকেল পড়তে চাইলে, ডেইলি লাইভ সাইটে চোখ রাখুন।
Comments (No)