বাউন্স রেট কি? ওয়েবসাইটের বাউন্স রেট কমানোর ৭টি উপায় What is Bounce Rate? 7 Ways to Reduce Website Bounce Rate

What is Bounce Rate? 7 Ways to Reduce Website Bounce Rate বাউন্স রেট কি? ওয়েবসাইটের বাউন্স রেট কমানোর ৭টি উপায়

​ওয়েবসাইটে আসা মানেই যে আপনার ব্লগের সব কিছু ভালোভাবে চলছে ব্যাপার টা কিন্ত এমন না। হতে পারে আপনার সাইটে আপনি কাংখিত পরিমান ভিজিটর পাচ্ছেন, কিন্ত এটাই শেষ কথা নয়। একটি ওয়েবসাইট সঠিক ভাবে চলছে কিনা এটি বিবেচনা করার অন্যতম একটি মাধ্যম ওয়েবসাইটের বাউন্স রেট (Bounce Rate)। ওয়েবসাইটের বাউন্স রেট দেখে এ ব্যাপারে পরিষ্কার ধারনা পাওয়া যেতে পারে যে সাইট টি কেমন করছে এবং ভবিষৎ এ কেমন করবে। চলুন প্রথমেই জেনে নেই Bounce Rate কি?

​বাউন্স রেট (Bounce Rate) কি?
​​বাউন্সরেট ​হচ্ছে গুগল এ্যানালাইটিক্স এর একটি মেট্রিক। ​​বাউন্সরেট বোঝার আগে আমাদের বুঝতে হবে ​​বাউন্স কি?

​যখন আপনার ​ওয়েবসাইটে কোনো একজন ভিজিটর প্রবেশ করে এবং সে ঐ পেজে থাকাকালীন সময়ে আপনার ​ওয়েবসাইটের সাথে কোনো প্রকার এনগেজমেন্ট এ যায় না অর্থাৎ, সে কোনো বাটন এ ক্লিক করে না, কোনো পেজ লিংকে ক্লিক করে না, মেনুতে ক্লিক করে না, আপনার সাইটের অন্য কোনো পেজ ভিজিট না করেই সরাসরি আপনার ​ওয়েবসাইট থেকে বের হয়ে আসে। তখন গুগল এ্যানালাইটিক্স এর সার্ভার ঐ ভিজিটরের কাছ থেকে কোনো প্রকার ট্রিগার লাভ করে না। ভিজিটর এভাবে বাউন্স করার ফলে এ্যানালাইটিক্স এ শুধুমাত্র একটি পেজ ভিজিট কাউন্ট হয়। এটিকেই ​​বাউন্স (Bounce) বলে।

তাহলে বাউন্সরেট কি?

ধরা যাক, আপনার ওয়েবসাইটের হোম পেজে একটি নির্দ্দিষ্ট সময়ের মধ্যে (ধরে নিন ৭ দিন) মোট ভিজিটর ১০০ জন, যাদের মধ্যে ৩০জন হোম পেজ থেকেই বের হয়ে গেছে, আপনার সাইটের অন্য কোনো পেজ ভিজিট করেনি। তাহলে এখন আপনার হোম পেজের বাউন্সরেট হবে – Online Income Site

how to calculate bounce rate
​অর্থাৎ ঐ ওয়েবসাইটের Bounce Rate ৩০%। নিচে বাউন্সরেটের একটি স্ক্রিনশট দেয়া হলো, যেটি আপনি গুগল এনালিটিক্স টুল এর মাধ্যমে জানতে পারবেন

Bounce Rate from Google Analytics
​স্টান্ডার্ড বাউন্স রেট কত % ?
​এখন প্রশ্ন আসতে পারে তাহলে আমরা কি টার্গেটে কাজ করবো? আমাদের ওয়েবসাইটের বাউন্সরেটের স্টান্ডার্ড কিরকম হওয়া উচিত? ইন্ডাস্ট্রি ভেদে বাউন্সরেটের স্টান্ডার্ড বেশি কম হয়ে থাকে যেমন:একাউন্ট করে নিন 100 টাকা প্রতি রেফারে 10 টাকা

Bounce Rate Benchmarks
Bounce Rate Benchmarks

​ইন্ডাস্ট্রি

​স্টান্ডার্ড বাউন্সরেট

​সার্ভিস সাইট

​১০-৩০%

​রিটেইল / ই-কামার্স সাইট

​৩০-৪০%

​কন্টেন্ট বেসড ওয়েবসাইট

​৪০-৬০%

​লিড জেনারেশন সাইট

​৩০-৫০%

​ল্যান্ডিং পেজ

​৭০-৯০%

​ব্লগ

​৭০-৯৫%

​ব্যাক্তিগত ভাবে আমি মনে করি, যেকোনো ওয়েবসাইটের ক্ষেত্রেই ৩০% Bounce Rate হওয়াটা সহনীয়। এমনকি ৪০-৫৫% বাউন্সরেট ও এভারেজ হিসেব আমার মনে হয়। তবে সাইটের বাউন্সরেট যদি ৬০% এর বেশি হয় তবে এটা চিন্তার বিষয়। এবং এটা নিয়ে তাহলে আপনার সিরিয়াসলি কাজ করা উচিত।

​বাউন্স রেট বেশি হলে কি ধরনের সমস্যা হয়?
​সবই না হয় বুঝলাম, যদি সাইটের বাউন্স রেট বেশি হয় তাহলে কি ধরনের সমস্যা হতে পারে? খুব সাধারন একটা ব্যাপার চিন্তা করুন। গুগল সব সময়ই চায় সার্চ কোয়েরিতে সব থেকে রিলেভেন্ট রেজাল্ট টাকে দেখাতে। কথার কথা এখন আপনার ওয়েবসাইটের বাউন্সরেট যদি হয় ৮০% তার মানে অধিকাংশ ভিজিটর ই আপনার সাইটে প্রবেশ করে সাথে সাথেই আবার বের হয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ সে কাংখিত রেজাল্ট টি পায়নি। গুগল তখন বুঝতে পারে এই সার্চ কোয়েরির জন্য আপনার ওয়েবপেজটি আপ টু দা মার্ক না। তখন গুগল আপনার ওয়েবসাইটকে সার্চ রেজাল্টে পেছনে ফেলে অন্য ওয়েবাসইট কে যায়গা দিবে।

​আবার যদি উল্টোটা হয়, অর্থাৎ বাউন্সরেট যদি ৩০% হয় তারমানে ঐ পেজে ভিজিটর প্রবেশ করে আরো কিছু পেজ ভিজিট করছে। তাহলে গুগল বুঝতে পারে যে ভিজিটর তার কাংখিত রেজাল্ট টি খুজে পেয়েছে। অর্থাৎ কম বাউন্সরেট সার্চ ইঞ্জিনকে এই জিনিসটা বুঝাতে সমর্থ হয় যে সার্চ কোয়েরির জন্য এই রেজাল্ট টি রিলেভেন্ট।

​ওয়েবসাইটের বাউন্স রেট কমানোর জন্য যে ৭টি কাজ করতে পারেন
​০১. লোডিং স্পিড
​লোডিং স্পিড ওয়েবসাইটের বাউন্স রেট বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আমরা আগেই জেনেছি কোনো ওয়েবসাইট ৩ সেকেন্ডের মধ্যে লোড না নিলে ৩০% ভিজিটর ওই পেজ ভিজিট না করেই চলে যায়। অর্থাৎ ওয়েবসাইটের বাউন্স রেট কমাতে হলে শুরুতেই ওয়েবসাইটের লোডিং স্পিড ৩ সেকেন্ডের নিচে নিয়ে আসতে হবে।

​ওয়েবসাইটের লোডিং স্পিড নিয়ে আমি একটি বিস্তারিত আর্টিকেল লিখেছি- এখান থেকে দেখে নিতে পারেন।

​০২. ইউজার এক্সপেরিয়েন্স
​ইউজার এক্সপেরিয়েন্স যেকোনো ওয়েবসাইটের জন্যই খুব গুরুত্বপূর্ন। পুরো সাইটের ডিজাইন অবশ্যই ইউজার ফ্রেন্ডলি হওয়া চাই। যাতে করে একজন ভিজিটর কোনো ঝামেলা ছাড়াই ওয়েবপেজটি নেভিগেট করতে পারেন। কোনো কারনে ইউজার ইন্টারফেস খারাপ হলে ভিজিটর বেশি সময় ঐ পেজে থাকবে না, যার ফলে আপনার বাউন্স রেট বেড়ে যাবে।

​০৩. ইরিলেভেন্ট কীওয়ার্ড ব্যবহার না করা
​একটা সময় ছিলো যখন ব্লাক হ্যাট টেকনিক ইউজ করে ইরিলেভেন্ট (অপ্রাসঙ্গিক) কীওয়ার্ডে সাইট র‌্যাংক করানো যেতো। এটা এখনো যায়, তবে আপনাকে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। ধরা যাক আপনি অনলাইন মার্কেটিং সম্পর্কিত একটি ব্লগ নিয়ে কাজ করছেন, কারো কাছে শুনলেন হেলথ রিলেটেড প্রোডাক্ট সেল করলে বেশ ভালো লাভ করা সম্ভব। এরপর যদি আপনি আপনার অনলাইন মার্কেটিং সম্পর্কিত ব্লগে হেলথ রিলেটেড কন্টেন্ট পোষ্ট করেন তাহলে হিতে বিপরিত হওয়ার সম্ভবনা ১০০%। কারন ভিজিটর আপনার ব্লগে আসবে অনলাইন মার্কেটিং সম্পর্কে জানতে এসে হেলথ সম্পর্কিত লেখা দেখলে ভিজিটর বাউন্সব্যাক করে চলে যাওয়ার সম্ভবনাই বেশি। এর ফলে আপনার বাউন্সরেট বেড়ে যাওয়ার সমূহ সম্ভবনা থাকে।

​০৪. কন্টেন্ট লেখার ব্যাপারে সতর্ক থাকা
​অনলাইন এবং SEO নিয়ে আমরা যারা কাজ করি তারা এই টার্ম টির সাথে খুব পরিচিত যে “Content is King” পুরো ওয়েবসাইটে কন্টেন্ট একটি গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে। আপনার সাইটের কন্টেন্ট ভালো হলে ডিজাইন কোয়ালিটি মোটামুটি মানের হলেও ভিজিটর সাইটে থাকবে।

​তাই কন্টেন্ট লেখার সময় সতর্ক থাকা উচিত। কঠিন এবং দূর্বোধ্য শব্দ এড়ি চলা, এর সাথে লেখা সহজ ভাবে লেখা উচিত। তা না হলে ভিজিটর পোষ্ট পড়ে বিরক্ত হয়ে চলে যেতে পারে। যার ফলে সাইটের বাইন্সরেট বেড়ে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে।

​০৫. ইন্টার্নাল লিংকিং
​ভিজিটরকে সাইটে বেশি সময় আটকে রাখার অন্যতম একটি মাধ্যম হলো ইন্টার্নাল লিংকিং। ধরা যাক, আপনার ওয়বেসোইটে SEO ক্যাটাগরিতে ৪টা পোষ্ট।

​বেসিক এসইও
আউটরিচ
গেষ্টপোষ্ট
ব্যাকলিংক
​এখন আপনি বেসিক SEO আর্টিকেলে রিলেভেন্ট ওয়েতে অন্যপোষ্টগুলো যেমন আউটরিচ, গেষ্টপোষ্ট এবং ব্যাকলিংকের পোষ্ট গুলো ইন্টার্নাল লিংক করে দিলেন। এরফলে যেটা হবে, ভিজিটর বেসিক SEO এর পাশাপাশি অণ্য ব্যাপার গুলো সম্পর্কেও জানতে আগ্রহী হয়ে লিংকে ক্লিক করবেন এবং আরো বেশি সময় সাইটে থাকবেন।

​০৬. অতিরিক্ত অ্যাড ব্যবহার না করা (পপ আপ অ্যাডকে না বলা)
​বিজ্ঞাপন জিনিসটা সবসময়ই বিরক্তিকর। আপনি নিজের কাছেই নিজেকে জিজ্ঞেস করুন। বিজ্ঞাপন দেখতে আপনার কেমন লাগে? অবশ্যই উত্তর হবে বিরক্তিকর। অনেক সাইড দেখা যায় যারা হেডার, ফুটার, পোষ্ট সাউডবার থেকে শুরু করে সাইটে ২-৩ ইঞ্চি পর পর বিজ্ঞাপন দেয়। যা ভিজিটরের জন্য বিরক্তিকর। ওয়েবসাইটে যত কম বিজ্ঞাপন ব্যবহার করা যায় তত ভালো।

​তারপর ও ইনকাম এর দিক থেকে বিজ্ঞাপন প্রয়োজন হলেও সেটা যেনো ভিজিটরের বিরক্তির কারন না হয় তা খেয়াল রাখতে হবে। (ব্যক্তিগত ভাবে আমি সাইটে পপ-আপ অ্যাড রাখার পক্ষপাতী না)

​০৭. ভিজিটরদের অংশগ্রহনের ব্যবস্থা রাখা
​যেকোনো ভাবে ওয়েবসাইটে ভিজিটদের অংশগ্রহনের ব্যবস্থা রাখলে সাইটের বাউন্স রেট বাড়ার চান্স কমে যায়। তা হতে পারে বিভিন্স পোল/সার্ভের মাধ্যমে। সাইটে কমেন্ট অপশন চালুর মাধ্যমেও ভিজিটর অংশগ্রহন বাড়ানো যায়।

​যেহেতু আপনি শেষ পর্যন্ত আর্টিকেলটি পড়েছেন তাই আমি আশাকরতে পারি ওয়েবসাইটের বাউন্স রেট কিভাবে কমানো যায় এ সম্পর্কিত আর্টিকেলটি আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। এ ব্যাপারে আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে কমেন্টবক্সে জানাতে পারেন। আমি প্রতিটি কমেন্টের উত্তর দেয়ার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।

​ধন্যবাদ সবাইকে। ভালো থাকুন

Comments (No)

Leave a Reply

এই সাইটের কোন লেখা কপি করা সম্পুর্ন নিষেধ