মানুষের উপর জিনের আছর : কারণ, প্রতিকার ও সুরক্ষার উপায় (collected)

লেখক : আব্দুল্লাহ শহীদ আব্দুর রহমান
সম্পাদনা : আবু শুআইব মুহাম্মদ সিদ্দিক

প্রথম কথা

একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের কাছে বসা ছিলাম। তার স্ত্রীও একজন ভাল ডাক্তার। উভয়ে ধর্মপ্রাণ। হজ করেছেন এক সাথেই। দুটো মেয়েকেই তানজীমুল উম্মাহ মাদরাসাতে ভর্তি করিয়েছেন। আমাকে বললেন, তানজীমুল উম্মাহ মাদরাসা আরবী মিডিয়ামের স্কলাস্টিকা তাই না? আমি বললাম, হ্যা। উদ্দেশ্য তার উৎসাহকে স্বাগত জানানো। মানে তারা দুটো সন্তানকেই মাদরাসায় ভর্তি করিয়ে গর্ববোধ করেন। কতখানি ধর্মপ্রাণ হলে এমন হতে পারে তা আপনার ভেবে দেখার বিষয় বটে। রোগী দেখার ফাঁকে ফাঁকে আমার সাথে গল্প করছেন। শুধু আমার সাথেই নয়। আলেম-উলামাদের কাউকে কাছে পেলে আন্তরিকতার সাথেই আলাপ করেন। জানতে চান। জানাতে চান।

একজন মহিলা আসল, সাথে তার মেয়ে।  সে  রোগের বিবরণ দিয়ে বলল, কয়েকদিন আগে ওকে জিনে আছর করেছিল। ওঝা-ফকিরেরা জিন তাড়িয়েছে। এ কথা শুনে ডাক্তার সাহেব রেগে গেলেন। বললেন, কিসের জিন? জিন বলতে কিছু আছে নাকি? জিন আবার মানুষকে ধরে নাকি? যত সব অন্ধ বিশ্বাস! জিন-ভূত বলতে কোন কিছু নেই। জিনে মানুষ ধরে না। মানুষকে আছর করে না। এটা মানসিক রোগ দ্বারা সৃষ্ট একটি কল্পনা। এ কল্পনার কারণে সৃষ্টি হয়েছে একটি অস্বাভাবিক অবস্থা।

তার আবেগ কমে গেলে আমি তাকে এ বিষয়টি বুঝাতে চেষ্টা করলাম। কিন্তু এতে তার কোন আগ্রহ দেখলাম না। আমি বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে চাইলেই সে অন্য প্রসঙ্গের অবতারণা করে। আমি বুঝলাম, এ বিষয়ে আলোচনা তার পছন্দ নয়। সে যা বুঝেছে, সেটাকেই সে চুরান্ত বলে বিশ্বাস করে নিয়েছে। বিশ্বাসটা যে সংশোধন করার প্রয়োজন এটা তিনি বুঝতে চাচ্ছেন না।

আসলে কি জিন আছে? জিন কী? ইসলাম কী বলে? জিনদের অস্তিত্বে বিশ্বাস না করা ইসলামে কতখানি গ্রহণযোগ্য? জিন কি মানুষকে আছর করে? এ সম্পর্কে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি কী? এ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করব এ প্রবন্ধে।

যে সকল বিষয় এখানে আলোচনা করব সেগুলো হল:

এক.  জিনের পরিচয়
দুই.  জিনের প্রকার
তিন.  জিনের অস্তিত্বে বিশ্বাস ঈমানের দাবি
চার.  জিন কি মানুষকে আছর করে?
পাঁচ.  জিন ও ভূতের মধ্যে পার্থক্য
ছয়.  মানসিক রোগী আর জিনে-ধরা রোগীর মধ্যে পার্থক্য
সাত.  কি কারণে জিন চড়াও হয়?
আট.  জিনের আছরের প্রকারভেদ
নয়.  জিনের আছর থেকে বাঁচতে হলে যা করতে হবে
দশ.  জিনের আছরের চিকিৎসা
এগার.  জিনের অধিকার রক্ষায় আমাদের করণীয়

১) জিনের পরিচয়

জিন আল্লাহ তাআলার একটি সৃষ্টি। যেমন তিনি ফেরেশ্‌তা, মানুষ সৃষ্টি করেছেন তেমনি সৃষ্টি করেছেন জিন। তাদের বিবেক, বুদ্ধি, অনুভূতি শক্তি রয়েছে। তাদের আছে ভাল ও মন্দের মধ্যে পার্থক্য করার ক্ষমতা। তাদের মধ্যে আছে ভাল জিন ও মন্দ জিন। আল কুরআনে  জিনদের বক্তব্য উল্লেখ করে বলা হয়েছে:

আর নিশ্চয় আমাদের কতিপয় সৎকর্মশীল এবং কতিপয় এর ব্যতিক্রম। আমরা ছিলাম বিভিন্ন মত ও পথে বিভক্ত। (সূরা আল জিন : ১১)

এ গোষ্ঠির নাম জিন রাখা হয়েছে, কারণ জিন শব্দের অর্থ গোপন। আরবী জিন শব্দ থেকে ইজতিনান এর অর্থ হল ইসতেতার বা গোপন হওয়া। যেমন আল কুরআনে আল্লাহ বলেছেন :

فَلَمَّا جَنَّ عَلَيْهِ اللَّيْلُ

অতঃপর যখন রাত তার উপর আচ্ছন্ন হল … (সূরা আল আনআম : ৭৬)

এখানে জান্না অর্থ হল, আচ্ছন হওয়া, ঢেকে যাওয়া, গোপন হওয়া।

তারা মানুষের দৃষ্টি থেকে গোপন থাকে বলেই তাদের নাম রাখা হয়েছে জিন। যেমন আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন:

নিশ্চয় সে ও তার দলবল তোমাদেরকে দেখে যেখানে তোমরা তাদেরকে দেখ না। (সূরা আল আরাফ : ২৭)

জিনদের সৃষ্টি করা হয়েছে আগুন দিয়ে। মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ বলেন:

আর ইতঃপূর্বে জিনকে সৃষ্টি করেছি উত্তপ্ত অগ্নিশিখা থেকে। (সূরা আল হিজর : ২৭)

এ আয়াত দ্বারা আমরা আরো জানতে পারলাম যে, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মানুষ সৃষ্টি করার পূর্বে জিন সৃষ্টি করেছেন। ইরশাদ হয়েছে:

আর অবশ্যই আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি শুকনো ঠনঠনে, কালচে কাদামাটি থেকে। আর এর পূর্বে জিনকে সৃষ্টি করেছি উত্তপ্ত অগ্নিশিখা থেকে। (সূরা আল হিজর : ২৬-২৭)

আল্লাহ তাআলা যে উদ্দেশ্যে মানুষ সৃষ্টি করেছেন সে-ই উদ্দেশ্যেই জিনকে সৃষ্টি করেছিলেন। তিনি বলেন:

আর জিন ও মানুষকে কেবল এজন্যই সৃষ্টি করেছি যে, তারা আমার ইবাদাত করবে। (সূরা আয যারিয়াত : ৫৬)

জিনদের কাছেও তিনি নবী ও রাসূল প্রেরণ করেছিলেন। তিনি বলেন:

হে জিন ও মানুষের দল, তোমাদের মধ্য থেকে কি তোমাদের নিকট রাসূলগণ আসেনি, যারা তোমাদের নিকট আমার আয়াতসমূহ বর্ণনা করত এবং তোমাদের এই দিনের সাক্ষাতের ব্যাপারে তোমাদেরকে সতর্ক করত? তারা বলবে, আমরা আমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিলাম। আর দুনিয়ার জীবন তাদেরকে প্রতারিত করেছে এবং তারা নিজেদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে যে, তারা ছিল কাফির। (সূরা আল আনআম : ১৩০)

এ আয়াত দ্বারা স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়, বিচার দিবসে মানুষের যেমন বিচার হবে তেমনি জিন জাতিকেও বিচার ও জবাবদিহিতার সম্মুখীন হতে হবে।

তারা বিবিধ রূপ ধারণ করতে পারে বলে হাদীসে এসেছে। এমনিভাবে দ্রুত এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে পারে বলে আল কুরআনের সূরা আন নামলে উল্লেখ করা হয়েছে।

আসমানী কিতাবে যারা বিশ্বাসী-ইহুদী, খৃষ্টান ও মুসলমান- তারা সকলে জিনের অস্তিত্বে বিশ্বাস করে। তারা কেউ জিনের অস্তিত্ব অস্বীকার করে না। পৌত্তলিক, কতিপয় দার্শনিক, বস্তুবাদী গবেষকরা জিনের অস্তিত্ব অস্বীকার করে না। দার্শনিকদের একটি দল বলে থাকে, ফেরেশ্‌তা ও জিন রূপক অর্থে ব্যবহার করা হয়। সুন্দর চরিত্রকে ফেরেশ্‌তা আর খারাপ চরিত্রকে জিন বা শয়তান শব্দ দিয়ে বুঝানো হয়। অবশ্য তাদের এ বক্তব্য কুরআন ও সুন্নাহর সম্পূর্ণ পরিপন্থী।

২) জিনের প্রকার

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ সম্পর্কে বলেছেন :

জিন তিন প্রকার। এক. যারা শূন্যে উড়ে বেড়ায়। দুই. কিছু সাপ ও কুকুর। তিন. মানুষের কাছে আসে ও চলে যায়।

(সূত্র : তাবারানী। প্রখ্যাত হাদীস বিশারদ শায়খ আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন। দেখুন, সহীহ আল জামে আস সাগীর, হাদীস নং ৩১১৪, আবু সালাবা আল খাশানী রা. থেকে বর্ণিত।) (মুজামু আলফাজ আল-আকীদাহ)

জিন বিভিন্ন প্রাণীর রূপ ধারণ করতে পারে। কিন্তু তাদের একটি গ্রুপ সর্বদা সাপ ও কুকুরের বেশ ধারণ করে চলাফেরা করে মানব সমাজে। এটা তাদের স্থায়ী রূপ।

৩) জিনের অস্তিত্বে বিশ্বাস ঈমানের দাবী

একজন মুসলিমকে অবশ্যই জিনের অস্তিত্ব স্বীকার করতে হবে। যদি সে জিনের অস্তিত্ব অস্বীকার করে, তাহলে সে মুমিন থাকবে না। জিনের অস্তিত্ব স্বীকার ঈমান বিল গাইব বা অদৃশ্যের প্রতি ঈমান আনার অন্তর্ভূক্ত। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আল কুরআনের প্রায় পঞ্চাশ বার জিনের আলোচনা করেছেন। জিনজাতির সৃষ্টি, সৃষ্টির উদ্দেশ্য, তাদের ইসলাম গ্রহণ, মানুষের পূর্বে তাদের সৃষ্টি করা, ইবলীস জিনের অন্তর্ভূক্ত, সূরা আর রাহমানে জিন ও মানুষকে এক সাথে সম্বোধন, নবী সুলাইমান আলাহিসসালাম  এর আমলে জিনদের কাজ-কর্ম করা, তাদের মধ্যে রাজমিস্ত্রী ও ডুবুরী থাকার কথা, তাদের রোজ হাশরে বিচার শাস্তি ও পুরস্কারের সম্মুখীন হওয়া ইত্যাদি বহু তথ্য আল কুরআনে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন উল্লেখ করেছেন। তাদের সম্পর্কে বলতে যেয়ে সূরা আল-জিন নামে একটি পূর্ণাঙ্গ সূরা নাযিল করেছেন। তাই কোন মুসলমান জিনের অস্তিত্বকে অস্বীকার করে আল্লাহর কালামকে অস্বীকার করার মত কাজ করতে পারে না। তেমনি জিনকে রূপক অর্থে ব্যবহার করার কথাও ভাবতে পারে না। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আকীদা এটাই। বিভ্রান্ত ও বিলুপ্ত মুতাযিলা ও জাহমিয়্যা সমপ্রদায় জিনের অস্তিত্ব স্বীকার করে না।

৪) জিন কি মানুষকে আছর করে?

এর উত্তর হল, অবশ্যই জিন মানুষকে আছর করতে পারে। স্পর্শ দ্বারা পাগল করতে পারে। মানুষের উপর ভর করতে পারে। তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। তার জীবনের স্বাভাবিক কাজ-কর্ম ব্যাহত করতে পারে। এটা বিশ্বাস করতে হয়। তবে এ বিষয়টি কেহ অবিশ্বাস করলে তাকে কাফের বলা যাবে না। সে ভুল করেছে, এটা বলা হবে।জিন যে মানুষকে আছর করে তার কিছু প্রমাণ: আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন-

الَّذِينَ يَأْكُلُونَ الرِّبَا لَا يَقُومُونَ إِلَّا كَمَا يَقُومُ الَّذِي يَتَخَبَّطُهُ الشَّيْطَانُ مِنَ الْمَسِّ

যারা সুদ খায়, তারা তার ন্যায় দাড়াবে, যাকে শয়তান স্পর্শ করে পাগল বানিয়ে দেয়। (সূরা আল বাকারা : ২৭৫)

এ আয়াত দ্বারা যে সকল বিষয় স্পষ্টভাবে বুঝা যায়:

এক. যারা সূদ খায় তাদের শাস্তির ধরণ সম্পর্কে ধারণা।

দুই. শয়তান বা জিন মানুষকে স্পর্শ দ্বারা পাগলের মত করতে পারে।

তিন. মানুষের উপর শয়তান বা জিনের স্পর্শ একটি সত্য বিষয়। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই।

চার. জিন-শয়তানের এ স্পর্শ দ্বারা মানুষ যেমন আধ্যাত্নিক দিক দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় তেমনি শারীরিক দিক দিয়েও অস্বাভাবিক হয়ে যায়।

আল্লাহ তাআলা বলেন:

আর যে পরম করুণাময়ের জিকির থেকে বিমুখ থাকে আমি তার জন্য এক শয়তানকে নিয়োজিত করি, ফলে সে হয়ে যায় তার সঙ্গী। (সূরা যুখরুফ : ৩৬)

এ আয়াত দ্বারা যা স্পষ্ট হল : মহান রাহমান ও রহীম আল্লাহ তাআলার জিকির থেকে বিরত থাকা জিন শয়তানের স্পর্শ দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার একটি কারণ।

আল্লাহ তাআলা বলেন:

আর স্মরণ কর আমার বান্দা আইউবকে, যখন সে তার রবকে ডেকে বলেছিল, শয়তান তো আমাকে কষ্ট ও আযাবের ছোঁয়া দিয়েছে। (সূরা সাদ : ৪১)

এ আয়াত দ্বারা আমরা স্পষ্টভাবে বুঝলাম:

এক. শয়তান নবী আইউব আলাহিস সালামকে স্পর্শ করে শারীরিক রোগ-কষ্ট বাড়িয়ে দিয়েছিল।

দুই. তিনি শয়তানের স্পর্শ থেকে বাঁচার জন্য আল্লাহ তাআলার কাছেই প্রার্থনা করেছিলেন।

আল্লাহ তাআলা বলেন:

নিশ্চয় যারা তাকওয়া অবলম্বন করেছে যখন তাদেরকে শয়তানের পক্ষ থেকে কোন কুমন্ত্রণা স্পর্শ করে তখন তারা আল্লাহকে স্মরণ করে। তখনই তাদের দৃষ্টি খুলে যায়। (সূরা আল আরাফ : ২০১)

এ আয়াত থেকে যা বুঝে আসে তা হল:

এক. যারা মুত্তাকী বা আল্লাহ ভীরু তাদেরকেও জিন বা শয়তান স্পর্শ করতে পারে। তারা মুত্তাকী হয়েও জিন বা শয়তানের আছরে নিপতিত হতে পারে।

দুই. যারা মুত্তাকী তাদের শয়তান বা জিন স্পর্শ করলে তারা আল্লাহ-কেই স্মরণ করে। অন্য কোন কিছুর দ্বারস্থ হয় না।

তিন. মুত্তাকীগণ জিন বা শয়তান দ্বারা স্পর্শ হয়ে আল্লাহকে স্মরণ করলে তাদের সত্যিকার দৃষ্টি খুলে যায়।

আল্লাহ তাআলা বলেন:

আর যদি শয়তানের পক্ষ হতে কোন প্ররোচনা তোমাকে প্ররোচিত করে, তবে তুমি আল্লাহর আশ্রয় চাও। নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। (সূরা আল আরাফ : ২০০)

এ আয়াতে স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হল:

এক. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লামকেও জিন-শয়তান আছর করতে পারে।

দুই. জিন আছর করলে বা শয়তানের কুমন্ত্রণা অনুভব করলে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

তিন. সূরা আল ফালাক ও সূরা আন-নাছ হল জিন শয়তানের আছর থেকে আশ্রয় প্রার্থনার অতি মুল্যবান বাক্য। এ আয়াতের তাফসীর দ্বারা এটা প্রমাণিত।

হাদীসে এসেছে – আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম  বলেছেন, অবশ্যই শয়তান মানুষের রক্তের শিরা উপশিরায় চলতে সক্ষম। ( বুখারী ও মুসলিম)

হাদীসে আরো এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম  একদিন বললেন, গত রাতে একটি শক্তিশালী জিন আমার উপর চড়াও হতে চেয়েছিল। তার উদ্দেশ্য ছিল আমার নামাজ নষ্ট করা। আল্লাহ তার বিরুদ্ধে আমাকে শক্তি দিলেন। ( বুখারী, সালাত অধ্যায়)

ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী রহ. এ হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেছেন, আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত নাসায়ীর বর্ণনায় আরো এসেছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম  বলেছেন, আমি তাকে ধরে ফেললাম। আছার দিলাম ও গলা চেপে ধরলাম। এমনকি তার মুখের আদ্রতা আমার হাতে অনুভব করলাম।

এ হাদীস থেকে আমরা যা জানতে পারলাম :

এক. জিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লামকেও আছর করতে চেয়েছিল।

দুই. জিনটি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নামাজ নষ্ট করার জন্য তাঁর কাছে এসেছিল।

তিন. ইফরীত শব্দের বাংলা অর্থ হল ভূত। জিনদের মধ্যে যারা দুষ্ট ও মাস্তান প্রকৃতির তাদের ইফরীত বলা হয়।

চার. জিন দেখে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম  কোন ভয় পাননি। তিনি তার সাথে লড়াই করে পরাস্ত করেছেন।

পাঁচ. জিনদের শরীর বা কাঠামো আছে যদিও তা সাধারণত আমাদের দৃষ্টিগোচর হয় না।  (copied)

Comments (No)

Leave a Reply

এই সাইটের কোন লেখা কপি করা সম্পুর্ন নিষেধ