ভার্চুয়াল মাস্টার কার্ড বাংলাদেশে কেন প্রয়োজন
তথ্য-প্রযুক্তির এই যুগে অনলাইন পেমেন্টের প্রয়োজন এখন অহরহ। আমাদের অনেকের কাছেই রয়েছে মাস্টার কার্ড, ক্রেডিড কার্ড বা ডেবিট কার্ড একাউন্ট আছে। কিংবা হয়ত রয়েছে স্কিল, পেইজা বা পেপাল একাউন্ট। এ ধরনের পেমেন্ট প্রসেসিং কোম্পানিগুলো বাংলাদেশের মতো থার্ড ওয়াল্ড কান্ট্রিতে যে বাজে সাভিস দেয় তা নিয়ে নতুন করে বলার আর কিছুই নেই। বিষটি প্রকট আকারে রূপ নেয় যখন আমাদের অনলাইন পেমেন্টের প্রয়োজন হয়।
দিনদিন আমাদের দেশে ফ্রিল্যান্সারদের সংখ্যা বাড়ছে। সাথে সাথে বাড়ছে বিদেশে উচ্চ শীক্ষায় আগ্রহীদের সংখ্যা। এদের সবারই কোন না কোন সময়ে ডলারের প্রয়োজন হয়। নিজের কাছে কার্ড না থাকলে অন্যের কাছে যেতে হয়। সবাই যে সাধু তা নয়। টাকা মেরে দেবার গল্প অনেক আছে। অনেকেই টাকা নিয়ে থাকে কিন্তু পরে ডলার পাঠায় না। যা ফলে অনলাইন পেমেন্টের ক্ষেত্রে বাংঙ্গালিরা একেবারে অসহায়।
এসব কথা চিন্তা করে সম্প্রতি বাংলাদেশে ই-কমার্স ব্যাংকিং এর অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে প্রাথমিক পর্যায়ে বাংলাদেশে প্রথমবারের মত অনলাইন লেনদেন কার্যক্রম চলু হল। এর মাধ্যমে বিভিন্ন সেবাখাতে বিল পরিশোধ, অনলাইনে কেনাকাটা, বিভিন্ন ফিস এমনকি বিশ্বের প্রায় ১.৫ মিলিয়ন ওয়েব সাইটে অনলাইনে লেনদেন করা যাবে। অনলাইন পেমেন্ট এখন আমদের কাছে পানি-ভাতের মত সহজ। যে পদ্ধতি বা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এসব করা যাবে তা হল ভার্চুয়াল মাস্টার কার্ড। এটির সাহায্যে এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলা বাদে আর সব কিছুই করা যাবে।
ভার্চুয়াল মাস্টার কার্ড আসলে কি
ভার্চুয়াল মাস্টার কার্ড মূলত কোন প্লাস্টিক কার্ড না। এটি একটি আনলাইন পেমেন্ট সিস্টেম। বাংলাদেশে কিছু কোম্পানি আছে যারা এই সার্ভিসটি দিয়ে থাকে। আপনি যখন বিকাশ কিংবা অন্য কোন মাধ্যমে তাদেরকে টাকা দিবেন তখন তারা অপনাকে একটি পিণ দিবে। তা দিয়ে আপনি প্রদানকৃত টাকার সমমূল্যের ডলার সবখানে ব্যবহার করতে পরবেন।অনেকেই সার্ভিসটি বাংলাদেশে দেয় তবে সবচেয়ে দ্রুত, সহজ ও নিরাপদ হলো কিউ মাস্টার কার্ড বা কিউ কার্ড।
কার্ড ব্যবহারের সতর্কতা
এখনে মূলত কোন কোম্পানির কার্ড নিবেন তা নির্বাচনের সময় সতর্ক থাকতে হয়। যেহেতু ভার্চুয়াল মাস্টার কার্ডে ভার্চুয়াল লেনদেন হয় , সেহেতু এটি দিয়ে হুন্ডি করার একটি সম্ভাবনা থেকে যায়। অনেক কোম্পানি আছে যারা এটির আড়ালে হুন্ডি ব্যবসা করে থাকে। আপনার অজান্তেই আপনার কার্ড দিয়ে হুন্ডি করবে তারা এবং সমস্ত আইনি ঝামেলায় পড়বেন আপনি।
তবে আমি যাচাই করে দেখেছি কিউ কার্ডে এটি সম্ভব নয়। কারণ আপনার কার্ডের মাধ্যমে কখন, কোথায়, কি পরিমাণ লেনদেন হল তা থাকবে আপনার নখদর্পণে। আপনার সমস্ত লেনদেন আপনি যখন খুশি চেক করতে পারবেন। অন্য কোম্পানি এত সহজভাবে সুবিধাটি দিবে না। সন্ধেহজনক কোন লেনদেন আপনার চোখে ধরা পড়লে আপনি যোগাযোগ করতে পারবেন দিন রাত যে কোন সময়ে।
তাছাড়া কিউ কার্ড মূলত নিউজিল্যান্ডের কোম্পানি, যাদের হেড অফিস ইউএসএ তে। এরা মূল মাস্টার কার্ড থেকে প্রসেসিং সাভিস কিনে বিজনেস করছে। অনেকটা পেওনিয়ারের মত। তাই আপনি থাকছেন শতভাগ নিরাপদ। এদের প্রসেসিং ও সার্পোট অত্যন্ত দ্রুত। তাই ব্যক্তিগতভাবে আমি একজন কিউ কার্ড ইউজার। বিস্তারিত জানতে পাবেন ভার্চুয়াল মাস্টার কার্ড -তে ক্লিক করে।
কেন ভার্চুয়াল মাস্টার কার্ড বাংলাদেশে এতটা জনপ্রিয় কেন??
ভার্চুয়াল মাস্টার কার্ড আসার পর সবচেয়ে বেশী সুবিধা পেয়েছে বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সার ও বিদেশগামী শিক্ষার্থীরা। এটি জনপ্রিয়তা পাবার মূল কারণগুলো হল-
১)বিশ্বের প্রায় ১.৫ মিলিয়ন ওয়েব সাইটে কেনাকাটা করা যায়
২) গুগল, ফেসবুক ইত্যাদিতে বিঙ্গাপন দেয়া যায়
৩)বিভিন্ন ফি প্রদান করা যায়
৪)ইমিগ্রেশন ফি, ভিসার জন্য আবেদন করা যায়
ব্যাপারটি কেবল এখানেই শেষ নয়। আপনি যদি কিউ মাস্টার কার্ড ব্যবহার করে থাকেন তবে অপনি আরও কিছু এক্সট্রা সুবিধা পাবেন। যেমন-
১) ব্যাংক একাউন্টের প্রয়োজন নেই
২) চেকে লেনদেন করতে হয়না
৩) টাকা হারানো বা চুরি যাবার ভয় নেই
৪) মাসিক বা বাৎসরিক ফি নেই
৫) লেনদেনে ফি নেই
৬) পেমেন্টের সময় কন চার্জ নেই
থার্ড ওয়াল্ড কান্ট্রি হবার পরও প্রযুক্তির কল্যানে আপনি পাচ্ছেন অনলাইন পেমেন্টের সকল সুবিধা। বাংলাদেশ সরকারকে সাধুবাদ জানাই এমন সিদ্ধান্তের জন্য। এখন নিজে নিজেই অনলাইন পেমেন্ট করা যাবে। কারও কাছে গিয়ে বলতে হবে না যে “ ভাই আপনার কাছে কি ডলার হবে”।
Comments (No)