ফ্রিল্যান্সিং শেখার উপায় পর্ব-1

বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় পেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে ফ্রিল্যান্সিং। প্রযুক্তির পরিবর্তনের সাথে সাথে অনলাইনে ইনকামের রাস্তা বেড়েছে বহুগুণে। নিত্য নতুন আপডেটের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে প্রযুক্তিতে দক্ষ জনশক্তির চাহিদা অনস্বীকার্য। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তুলনায় বাংলাদেশের মনুষ এক্ষেত্রে কোন অংশে পিছিয়ে নেই। আজকে আমাদের আলোচনার মূল বিষয় ফ্রিল্যান্সিং শেখার উপায় ।

ফ্রিল্যান্সিং শিখতে কি কি প্রয়োজন

প্রথমে আপনাদেরকে জানতে হবে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে কি কি প্রয়োজন । তার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করা যাক।

ফ্রিল্যান্সিং শিখানোর নামে বর্তমানে বাংলাদেশে অসংখ্য ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। আপনারা নিশ্চয়ই ফেসবুক এবং ইউটিউবে দেখেন কত লোভনীয় বিজ্ঞাপন। সাথে আছে তাদের ফ্রিল্যান্সিং শিখানোর সাকসেস রেট ৯০% এর ও বেশি। যদিও তারা বলে যে, আপনি একেবারে কিছু না জানলেও ২মাসের মধ্যে ইনকাম করতে পারবেন। কিছু প্রতিষ্টানে খুব অল্প মূল্যে কোর্স করানো হয় আবার কিছু প্রতিষ্ঠানে কোর্স ফি এত বেশি যা একেবারে আমাদের সাধ্যের বাইরে চলে যায়। এমনকি ৫০ হাজার টাকার ও বেশি লাগতে পারে আপনার কোর্স করানোর জন্য।

আপনি নিশ্চয়ই জানেন এবং দেখেন ফ্রিল্যান্স্যাররা কত হ্যান্ডসাম এমাউন্ট আর্ন করে। সত্যি খুব লোভনীয়। এসব দেখার পরে আপনার ফ্রিল্যান্সার হওয়ার স্বপ্ন জেগে উঠা খুব স্বাভাবিক। তখন আপনি ওইসব ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের লোভনীয় অফার এবং নিশ্চিত ইনকাম গ্যারান্টি দেখে তাদের কোর্সে ভর্তি হতেই পারেন।

তার মানে আমি আপনাকে বলছি না যে, কোন ট্রেনিং প্রতিষ্ঠানে কোর্স একদমই করা যাবে না। এডভান্স লেভেলে কাজ শিখতে হলে এবং সঠিক গাইডলাইন পেতে আপনাকে অবশ্যই ভালো কোন প্রাতিষ্ঠানিক কোর্স করতে হবে। আপনার যদি এই বিষয়ে একেবারেই জ্ঞ্যান না থাকে তাহলে আপনি কিভাবে একটি ভালো প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করবেন। আপনার সিদ্ধান্ত নেওয়া টা ভুল হতেই পারে। তাই ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবেন তা আগে ভালো করে জানুন।

ফ্রিল্যান্সিং শিখতে হলে আপনার একটি ভালো মানের কম্পিউটার, দ্রুত গতির ইন্টারনেট এবং একটি স্মার্টফোন অবশ্যই লাগবে। এখন আপনার মনে যদি কখনো বিজ্ঞাপন দেখে শুধুমাত্র মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করার ধারণার জন্ম হয়ে থাকে তাহলে প্রথমে আপনাকে এই ধারণা থেকে বেড়িয়ে আসতে হবে। মোবাইল দিয়ে আপনি কিছু কাজ করতে পারবেন, যা আপনার কম্পিউটারের পাশাপাশি সহায়ক হবে।

কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট সংক্রান্ত ব্যাসিক এবং ইন্টারমিডিয়েট নলেজ গুলো আপনার খুবই স্ট্রং হতে হবে। ফ্রিল্যান্সিং কাজটা হল এমন যে, আমার একটি কাজের জন্য লোক প্রয়োজন, তাহলে ওই বিষয়ে এক্সপার্ট একজন লোক আমাকে খুঁজে বের করে নিতে হবে। ধরুন, আমার কোম্পানির জন্য একটি ওয়েবসাইট প্রয়োজন। তাহলে যে ওয়েবসাইট বানানোর বিষয়ে এক্সপার্ট তাকে আমার হায়ার করতে হবে। এরকম, কোম্পানির লোগো তৈরি করার জন্য গ্রাফিক ডিজাইনার, ওয়েবসাইটে ভিজিটর আনার জন্য ডিজিটাল মার্কেটার এবং অন্যান্য কাজের জন্য এভাবে আমাকে এক্সপার্ট খুঁজে বের করতে হবে।

তাহলে আপনার যেকোন একটি কাজ ভালোভাবে শিখলেই হবে। কাজের খেত্র সম্পর্কে জনতে, Fiverr.com, freelancer.com, upwork.com এবং আরো অন্যান্য মার্কেটপ্লেস ঘুরে দেখুন। কখনো এটা খুঁজতে যাবেন না যে, কোন কাজ থেকে বেশি টাকা ইনকাম করা যায় এবং কোন কাজটি খুব কম সময়ে শিখা যায়।

ফ্রিল্যান্সিং শিখতে কতদিন লাগে

প্রায় সবারই একটা কমন প্রশ্ন থাকে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে কতদিন লাগে । এই প্রশ্নের উত্তর দিতে আপনাকে আমি কিছু কথা বলব যা আপনাকে সবসময় মাথায় রাখতে হবে। প্রথমেই আপনাকে বলে রাখি, ফ্রিল্যান্সিং এর জগতে শিখার কোন শেষ নেই। এটা খুবই কম্পিটিটিভ ওয়ার্ল্ড। এখানে টিকে থাকতে হলে প্রযুক্তির আপডেটের সাথে প্রতিনিয়ত নিজেকে আপডেট রাখতে হবে। এটা আপনি মেনে নিয়েছেন আশা করি। তাহলে আমি জানি এখন আপনার মনের প্রশ্ন টা কি। সবই তো বুঝলাম ইনকাম করার মত অবস্থানে যেতে হলে আমার শিখতে কতদিন সময় লাগবে?

এটা অনেকটা আপনার নিজের মেধা এবং ইচ্ছাশক্তির উপর নির্ভর করছে। ব্যাসিক এবং ইন্টারমিডিয়েট বিষয় গুলোতে যদি আপনার যথেষ্ট দক্ষতা থাকে তাহলে আপনি যেকোন একটি কাজ কমপক্ষে তিন মাস সময় নিয়ে শিখলে মোটামুটি ইনকাম করার পর্যায়ে যেতে পারবেন। আমার সাজেশন থাকবে আপনি কমপক্ষে ১বছর সময় নিয়ে কাজ শিখুন খুব ভালোভাবে। তারপর আসুন ইনকাম করতে।

এবার আপনি যদি আমার সাজেশন মানতে চান তাহলে আপনার ফ্রিল্যান্সিং শেখার যাত্রা শুরু করুন সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং দিয়ে। কেননা আপনি যখন সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং শেখা শুরু করবেন তখন আপনার নিজের পোর্টফোলিও তৈরি করা শুরু করে দিবেন। এতে আপনার সবচেয়ে বড় যে সুবিধা টা হবে তা হল, কোন ক্লায়েন্ট আপনার প্রোফাইল দেখে আপনাকে কাজ দিতে আগ্রহী হবে। আপনার প্রফেশনলা প্রোফাইল দেখে ক্লায়েন্ট সহজেই বিশ্বাস করবে যে আপনি কাজ পারেন।

Conclusion

এই পর্বে ফ্রিল্যান্সিং শেখার উপায় সম্পর্কে আপনাদের ব্যাসিক ধারণা দিয়েছি। পরবর্তি পোস্টে আরো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করব। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন। ধন্যবাদ

Comments (No)

Leave a Reply

এই সাইটের কোন লেখা কপি করা সম্পুর্ন নিষেধ