ফেসবুক থেকে আয় করার উপায় কি এবং কিভাবে?

ফেসবুক থেকে আয় করার উপায় কি এবং কিভাবে? ফেসবুক থেকে আয় করার উপায়- আমাদের বেশীর ভাগ অবসর সময় কাটে ফেসবুকে। প্রায় সময় চ্যাটিং অথাবা টাইমলাইন স্ক্রল করতে করতে। কিন্তু এই সময় ব্যায় করে আপনার যদি ফেসবুক থেকে ইনকাম হয় তাহলে বিষয়টি কেমন হবে? আপনি যদি চান তাহলে কিন্তু ফেসবুক ব্যবহার করে খুব সহজে ইনকাম করতে পারবেন।

ফেসবুক এমন একটি প্লাটফর্ম যেখানে কোন ধরনের ইনভেস্ট ছাড়াই ইনকাম করা সম্বভ। ২০০৪ সালের যখন ফেসবুক চালু হয় তখন তেমন কোন ফিচার ছিল না।

সাধারণ ভাবেই চ্যাট, পোস্ট শেয়ার লাইক কমেন্ট। পরবর্তীতে ফেসবুক পেজ, গ্রুপ ফিচার চালু হয় এবং এই ফিচার গুলো ব্যবহার করা হত নিজের পার্সোনাল ব্রান্ডিং অথাবা কোম্পানি ব্রান্ডিং এর জন্য।

কিন্তু বর্তমান সময়ে ফেসবুক এমন এক পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে যে, আপনি ফেসবুক গ্রুপ এবং ফেসবুক পেজ ব্যবহার করে ইনকাম করতে পারবেন এমনকি আপনার তেমন কোন ট্রেনিং করার প্রয়োজন হবেনা।

আপনি এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত যদি ফেসবুক ব্যবহার করে কিভাবে ইনকাম করতে হয় সেটি সম্পর্কে সমস্ত কিছু বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন এবং বুঝতে পারবেন।

আজ এমন কিছু উপায় তুলে ধরবো যেগুলোর মধ্যে আপনি যেকোনো একটি বেঁছে নিলেই ফেসবুক থেকে ইনকাম করতে পারবেন। তাহলে পড়তে থাকুন,

ফেসবুক থেকে আয় করার উপায় কি এবং কিভাবে?
ফেসবুক থেকে আয় করার উপায় কি এবং কিভাবে?

ফেসবুকে কিভাবে টাকা আয় করা যায়
আমদের দেশের অধিকাংশ মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করে থাকে কোন ধরণের কারণ ছাড়াই আবার অনেকে রয়েছে প্রয়োজনে ব্যবহার করে। বিশ্বের মধ্যে সব চেয়ে বড় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হচ্ছে ফেসবুক।

ছোট-বড় প্রায় সব বসয়ের মানুষের হাতে স্মার্ট ফোন থাকার কারনে ফেসবুক হয়ে উঠেছে জনপ্রিয়। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আজ অনেকে লাখ টাকা ইনকাম করছে ফেসবুক থেকে।

আপনি জানলে অবাক হবেন এমন অনেকে রয়েছে শুধু মাত্র ফেসবুক ব্যবহার করে ব্যবসা করে লাখ টাকা ইনকাম করছে।

আপনার মনের মধ্যে প্রশ্ন আসতে পারে এটা কি সম্ভব? হ্যা অবশ্যই সম্ভব, শুধু উপায় গুলো জানতে হবে এবং সেই অনুযায়ী কাজ করতে হবে।

তারা এমন কি উপায় অবলম্বন করছে যে অল্প সময়ের মধ্যেই ফেসবুক থেকে টাকা ইনকাম করছে? তাঁর সবই থাকছে আজকের আর্টিকেলের মধ্যে। তাই আপনাকে অবশ্যই পড়তে হবে, যদি আপনি ফেসবুক থেকে ইনকাম করতে চান?

ফেসবুক থেকে ইনকাম করার জন্য অনেক প্রসেস রয়েছে যেগুলোর মধ্যে যেকোনো একটি অবলম্বন করতে পারলেই আপনি ফেসবুক থেকে ইনকাম করতে পারবেন।

আজ আপনাদের মাঝে কিছু প্রসেস শেয়ার করব এবং কীভাবে আয় করবেন সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করব।

ফেইসবুক পেইজ থেকে আয়
আমরা প্রয়োজন বা অপ্রয়োজনে ফেসবুক পেজ খুলে বসে থাকি। এমনটি করেনি এমন মানুষ হয়ত খুঁজে পাওয়া খুবি দুষ্কর।

কিন্তু আপনি কি জানেন আপনি যে পেজ গুলো খুলে রেখেছেন সেই পেজ থেকেই ইনকাম করতে পারবেন। ফেসবুক পেজ এমন একটি প্ল্যাটফরম যেটি ব্যবহার করার মাধ্যমে প্রতি মাসে লক্ষ টাকা ইনকাম করা সম্ভব।

এমনও অনেকে আছেন যারা প্রতি মাসে ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ইনকাম করে থাকে। এমনকি এর বেশীও হতে পারে। যে যত বেশী কাজ করতে পারবে সে তত বেশী ইনকাম করতে পারবে।

ফেসবুক পেজ থেকে ইনকাম করার অনেক গুলো মাধ্যম রয়েছে যেগুলো থেকে অনেকে লক্ষ টাকা ইনকাম করছে।

ফেসবুক থেকে আয় করার উপায় কি এবং কিভাবে?
ফেসবুক থেকে আয় করার উপায় কি এবং কিভাবে?

ফেসবুক পেজ তৈরি
ফেসবুক থেকে ইনকাম করতে হলে আপনার অবশ্যই একটি ফেসবুক পেজ থাকতে হবে। এর জন্য আপনাকে একটি প্রফেশনাল ফেসবুক পেজ তৈরি করে নিতে হবে।

ভিডিও দেখুন

ফেসবুকে ভিডিও আপলোড করে ইনকাম
আপনি ফেবুক ব্রাউজ করলে দেখতে পাবেন ফেসবুকে ভিডিও দেখার জন্য আলাদা একটি ট্যাব রয়েছে। এমন অনেকে আছেন যারা বেশীরভাগ সময় ফেসবুকে ভিডিও দেখে সময় ব্যায় করেন।

আপনি কি জানেন যে ভিডিও গুলো আপনি দেখছেন সেই সব ভিডিও থেকে লাখ টাকা ইনকাম করছে অনেকে।

চাইলে আপনি নিজেও ভিডিও আপলোড করার মাধ্যমে ইনকাম করতে পারবেন। ভিডিও আপলোড করে ইনকাম করতে হলে আপনাকে অবশ্যই ফেসবুক পেজ থেকে ইনকাম করার পরিপূর্ণ ধারণা অর্জন করে নিতে হবে।

ফেসবুকে ভিডিও আপলোড করে ইনকাম করতে হলে হলে আপনাকে অবশ্যই যেকোনো একটি নিশ সিলেক্ট করে নিতে হবে তারপর তার পর সেই অনুযায়ী ভিডিও তৈরি করতে হবে।

আপনার হয়ত চিন্তা হতে পারে নিশ কি? নিশ বলতে একটি নির্দিষ্ট বিষয়কে বোঝানো হয়।

আপনি যখন ফেসবুকে ভিডিও দেখবেন তখন লক্ষ করবেন প্রতিটি পেজে আলাদা আলাদা ক্যাটাগরির ভিডিও আপলোড করছে।

আর পেজ গুলো ভিজিট করলে দেখতে পাবেন তাদের পেজে একই ধরনের ভিডিও আপলোড করা হচ্ছে। আর এটিকেই বলা হয় নিশ।

নিশ বলতে যেকোনো একটি নির্দিষ্ট মাধ্যমকে বেঁছে নেয়াকে বোঝায়।

আপনার পেজের জন্য এমন একটি নিশ বা ক্যাটাগরি বেঁছে নিতে হবে যেটি সম্পর্কে আপনি খুব ভাল জানেন। কারন আপনি যদি সেটি সম্পর্কে ভাল না জানেন তাহলে ভিডিও তৈরি করতে অনেক ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে।

বর্তমান সময়ে গেমিং এবং এন্টারটেইনমেন্ট এর ভিডিও গুলো একটু বেশী জনপ্রিয়। আপনি যদি গেমিং অথবা এন্টারটেইনমেন্ট সম্পর্কে না জেনেই ভিডিও তৈরি করে আপলোড করা শুরু করেন তাহলে আপনি ফেসবুকে কোনো দিনই সফল হতে পারবেন না।

তাই আপনি যে বিষয় জানেন সেটি নিয়ে আপনাকে কাজ শুরু করে দিতে হবে অথবা যেকোনো একটি কাজ শিখে নিতে হবে।

আপনি যদি আপনার পেজে বিভিন্ন ক্যাটাগরির ভিডিও আপলোড করেন তাহলে ফেসবুক আপনার ভিডিও গুলোকে ভাইরাল করবেনা তাই আপনাকে অবশ্যই নিশ সিলেক্ট করতে হবে।

তাছাড়াও বিভিন্ন নিশের ভিডিও আপলোড করলে বিভিন্ন ক্যাটাগরির মানুষের কাছে যাবে যেটি আপনার পেজের জন্য একটি ইতিবাচক ক্রিয়া তৈরি করবে। কয়েকটি ক্যাটাগরি সম্পর্কে ধারণা দেয়ার চেষ্টা করবো যেগুলো থেকে আপনার নিশটি বেঁছে নিতে পারবেন।

ব্লগিং ভিডিও তৈরি করে ইনকাম
ফেসবুকে অনেকে আছেন যারা ব্লগিং ভিডিও তৈরি করার মাধ্যমে ইনকাম করে থাকে। একটু লক্ষ্য করলে দেখতে পাবেন অনেকেই আছেন ব্লগ ভিডিও আপলোড করে।

যেমন অনেক বাইক রাইডার রয়েছে যারা রাইডিং নিয়ে ব্লগ তৈরি করে ফেসবুক পেজে ভিডিও আপলোড করে।

তাছাড়া দেশ এবং বিদেশের দর্শনীয় স্থান নিয়ে অনেকে ভিডিও তৈরি করে এবং সেই সমস্ত ভিডিওগুলো আপলোড করে ইনকাম করে থাকে।

আপনি চাইলে যেকোনো ধরনের ব্লগ ভিডিও তৈরি করে সেটি ফেসবুকে আপলোড করে ইনকাম করতে পারবেন। অনেকেই দেখবেন ফুড ব্লগিং করে ভিডিও আপলোড করে থাকে। আপনি চাইলে এই ক্যাটাগরিটি বেঁছে নিতে পারেন।

আপনি যদি একটু গুগল রিসার্চ করেন ব্লগিং নিয়ে তাহলে অনেক আইডিয়া পেয়ে যাবেন।

গেমিং ভিডিও তৈরি করে ইনকাম
বর্তমান সময়ে গেমিং কনটেন্ট সবচেয়ে বেশী জনপ্রিয়। আপনি একটু লক্ষ্য করলেই দেখতে পাবেন ফেবুকে অনেকেই গেমিং ভিডিও তৈরি করে এবং লাইভ স্ট্রিমিং করে খুব তাড়াতাড়ি ভাল একটি পরিমানের টাকা ইনকাম করছে।

আপনি চাইলে বর্তমান সময়ের পপুলার গেমস এর উপর ভিডিও তৈরি করার মাধ্যমে ইনকাম করতে পারবেন।

পাবজি, ফ্রি ফায়ার, কল অফ ডিউটি, বাস এমুলেটর এই সমস্ত অনলাইন গেমস এর মধ্যে যেকোনো একটি দিয়ে একটি গেমিং পেজ তৈরি করে সেখানে ভিডিও আপলোড করে ইনকাম করতে পারবেন।

আপনার যদি ভিডিও গেম খেলার অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে আপনি গেম খেলে বিনোদন এবং টাকা দুটিই পেতে পারবেন।

গেমিং এর মাধ্যমে টাকা ইনকাম করতে হলে কিছু টাকা ইনভেস্ট করতে হয়। যেমন একটি ভাল মোবাইল অথবা কম্পিউটার দরকার হয়।

আপনি অনলাইনে যেকোনো একটি পপুলার গেমস খেলা শিখে তারপর সেই ভিডিও গুলো আপলোড অথবা লাইভ স্ট্রিম করে ইনকাম করতে পারবেন।

আপনি চাইলে খেলা শুরু করা থেকেই ফেসবুকে স্ট্রিমিং করতে পারবেন।

শিক্ষামূলক ভিডিও তৈরি করে ইনকাম
ফেসবুক থেকে শিক্ষামূলক ভিডিও তৈরি করে আপনি খুব সহজেই ইনকাম করতে পারবেন। উদাহরণ সরূপ ১০ মিনিট স্কুল এর দিকে লক্ষ্য করুন। ১০ মিনিট স্কুল এর প্রতিষ্ঠাতা আয়মান সাদিক প্রথমে পড়ানোর ভিডিও তৈরি করা শুরু করে।

ভিডিও তৈরি করতে করতে অনেক বেশী জনপ্রিয়তা লাভ করা শুরু হয় তাঁর। বর্তমানে তাঁর প্রতিষ্ঠান বিশ্ব ব্যাপি পরিচিত।

আপনি চাইলে ফেবুকে শিক্ষা মূলক ভিডিও আপলোড করা শুরু করতে পারেন। আপনি ভিডিও আপলোড করে আয়মান সাদিকের মত হতে না পারলেও ভাল মানের টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

নাটক ভিডিও তৈরি করে ইনকাম
ফেসবুকে ছোট ছোট নাটক ভিডিও আপলোড করে ইনকাম করা সম্ভব। আপনি লক্ষ্য করলে দেখতে পাবেন ফেসবুকে অনেক সর্ট ভিডিও পাওয়া যায় যেগুলো ৫ থেকে ১০ মিনিটের মত হয়ে থাকে।

বিশেষ করে বাংলাদেশি ফানি ভিডিও গুলো অধিক বেশী পপুলার। আপনি ফ্যামেলি এন্টারটেইনমেন্ট এর মত ভিডিও তৈরি করতে পারেন। একবার শুরু করলে অনেক আইডিয়া পেয়ে যাবেন।

কার্টুন বা এনিমেশন ভিডিও তৈরি করে ইনকাম
আপনি কার্টুন এনিমেশন শিখে যেকোনো ধরনের কার্টুন ভিডিও তৈরি করে সেটি আপলোড করে ইনকাম করতে পারবেন।

মূলত ফেসবুক পেজে বিভিন্ন ক্যাটাগরির ভিডিও আপলোড করে ইনকাম করা সম্ভব। আপনি ফেসবুক থেকে যেকোনো একটি আইডিয়া নিয়ে সেই অনুযায়ী ভিডিও তৈরি করতে পারবেন।

আপনি ভিডিও নিয়ে কাজ শুরু করলে একই ভিডিও ইউটিউবে আপলোড করে ইনকাম ইনকাম করতে পারবেন।

ফেসবুকে ভিডিও আপলোড করে ফেসবুকের একটি টার্গেট আছে সেটি পূরণ হলে ফেসবুক পেজ মনিটাইজেশন এর মাধ্যমে আপনি ফেসবুক থেকে লক্ষ টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

এর জন্য আপনার থাকতে হবে কাজ করার ক্ষমতা এবং ভিডিও তৈরি করার প্রবনতা।

ভিডিও তৈরি করার পর যখন আপনার পেজ মনেটাইজেশন এর জন্য প্রস্তুত হয়ে যাবে তখন মনেটাইজেশন অন করে নিতে হবে।

পেজ মনিটাইজেশন কি?
ফেসবুক পেজ মনিটাইজেশন এমন একটি প্রসেস যেটি আপনি আপনার পেজে যুক্ত না করলে ইনকাম করতে পারবেন না।

ইউটিউবে যেমন ভিডিও আপলোড করার পর মনিটাইজেশন যুক্ত করতে হয় ইনকাম করার জন্য।

ঠিক এমনই ফেসবুক পেজ থেকে ইনকাম করতে হলে মনিটাইজেশন অন করতে হয়। ইউটিউবে মনিটাইজেশন অন হলে ভিডিওতে বিজ্ঞাপন দেখানো শুরু করে এবং সেই বিজ্ঞাপন থেকে ইনকাম হয়ে থাকে।

ঠিক ফেসবুকে একই মাধ্যম, আপনি যখন আপানার ফেসবুক পেজে মনিটাইজেশন অন করেবন তারপর থেকে ফেসবুক আপনার আপলোড কৃত ভিডিওতে বিজ্ঞাপন দেখানো শুরু করবে এবং আপনার ইনকাম শুরু হবে।

ইউটিউবের মতই ফেসবুকে মনিটাইজেশন অন করতে হলে কিছু নিয়ম কানুন মানতে হয়। যেমন পেজ লাইক টার্গেট, ভিডিও দেখার সর্বমোট দেখার সময়।

ফেজবুক পেজ ব্যবহার করে ব্যবসা করার মাধ্যমে ইনকাম ( F Commerce )
বর্তমান সময় ফেসবুক এমন একটি প্লাটফর্ম হয়ে দাড়িয়ে আছে যেনো সে নিজেই একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট। একটি অবাক করা বিষয় হচ্ছে ফেসবুক এমন একটি জায়গা যেখানে টাকা ইনকাম করার শুধু মানসিকতা থাকলেই লাখ টাকা ইনকাম করা সম্ভব সেটি আবার ফ্রিতে।

আমাদের দেশের লাখো তরুন এবং তরুনি ফেসবুক ব্যবহার করে ব্যবসা করার মাধ্যমে নিজে উদ্যোক্তা হয়ে উঠেছে। আপনি হয়ত ফেসবুক অ্যাপ ব্যবহার করে থাকেন। যদি করেন তাহলে ফেসবুক শপ এর জন্য আলাদা একটি মেনু আছে যেটি একদম ফ্রি।

ফেসবুকে ব্যবসা করতে হলে একটি বিজনেস পেজ লাগবে এবং সেখানে প্রডাক্ট আপলোড করা শুরু করে দিতে হবে। করতে করতে এক সময় আপনি নিজেই একজন উদ্যোক্তাতে পরিণত হবেন নিজের অজান্তে।

বলতে পারেন সরাসরি উদ্যোক্তা বানিয়ে ফেললাম, কথা কিন্তু সত্য। কিভাবে কি করতে হবে তার আইডিয়া দিয়ে দিব সেটি নিয়ে আপনাকে চিন্তা করতে হবেনা।

এখানে আপনাকে আমি প্রফেশনাল কাজের ধারণা দিতে এসেছি, ভিডিও দেখে টাকা ইনকাম করার নয়।

আপনি যদি Techzone Banlga ওয়েবসাইট গুগল থেকে সার্চ করে ব্রাউজ করেন তাহলে জানতে পারবেন এই ওয়েবসাইটে কি ধরণের পোস্ট গুলো করা হয়। তাহলে কিভাবে ফেসবুক থেকে ব্যবসা শুরু করা যায় সেটি সম্পর্কে জেনেনিন।

প্রথমে আপনি একটি খাতা, কলম এবং মোবাইল নিয়ে বসে যান। তারপর ইউটি্টব, গুগল, ই-কমার্স ওয়েবসাইট, ফেসবুক শপ গুলো ভিজিট করে কিছু পন্যের তালিকা করে নিন। কোন ধরণের পন্য মানুষ অনলাইন থেকে বেশী কিনে থাকে সেগুলোর তালিকা করে ফেলুন।

কয়েকটি আইডিয়া টি শার্ট শার্ট ঘড়ি জিন্স প্যান্ট মেয়েদের যাবতীয় সামগ্রি থ্রি পিচ বোরখা শাড়ি পাঞ্জাবি ঘি মধু
আপনি যখন নিজে রিসার্চ করা শুরু করে দিবেন তখন অনেক আইডিয়া পেয়ে যাবেন। আইডিয়া গুলো খুঁজে বেড় করার পর আপনি কোনটি নিয়ে ব্যবসা করতে চান সেটি বেঁছে নিন এবং পরিকল্পনা করুন কোথা থেকে প্রডাক্ট সংগ্রহ করবেন।

কত দামে কিনবেন এবং কত দামে বিক্রি করবেন। সেই সাথে আপনি পন্য গুলো কিভাবে পৌঁছে দিবেন?

সমস্ত কিছু ডাইরিতে বা খাতায় লিখে রাখুন। ব্যবসা করার সমস্ত ডাটা জোগাড় করার পর আপনাকে একটি ফেসবুক বিজনেস পেজ তৈরি করে নিতে হবে। কিভাবে একটি বিজনেস পেজ তৈরি করতে হয়, ইউটিউব সার্চ করলেই পেয়ে যাবেন।

পেজ তৈরি করা শেষ হলে সেখানে প্রডাক্টের ছবি আপলোড করে দিতে হবে। পেজটি কয়েকদিন পুরাতন হয়ে গেলেই আপনি কিছু টাকা খরচ করে বুস্ট করে দিবেন।

বুস্ট মানে ফেসবুকে অ্যাড দেয়ার মাধ্যমে প্রচারকে বুঝিয়ে থাকে। যখন আপনার সেল শুরু হয়ে যাবে তখন আপনি ধীরে ধীরে অন্যান্য পন্য যুক্ত করে নিতে পারবেন। প্রথমে একটি বা দুটি পন্য বেঁছে নিয়ে কাজ শুরু করে দিতে পারেন।

আপনি যদি প্রথমেই টিম নিয়ে কাজ করতে পারেন তাহলে প্রথম থেকেই অনেক গুলো পন্য নিয়ে কাজ করতে পারেন। মনে রাখবেন যেকোনো পন্য হতে পারে কিন্তু তার নিশ একটি হতে হবে।

আপনার বিজনেস প্রসার হলে একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করে নিয়ে সেখানে হাজার রকমের পন্য বিক্রি করতে পারবেন। মনে রাখবেন শুরু করলে, লেগে থাকলে সফলতা আসবেই।

বিশেষ কথাঃ ফেসবুকে বলুন বা ই-কমার্সে বলুন আপানর ব্যবসার জন্য সঠিক এবং সুন্দর একটি নাম বেঁছে নিতে হবে। যেটি কেও একবার দেখলেই মনে রাখতে পারে।

এইযে, আপনি যে ওয়েবসাইট দেখছেন এটির নাম এমনভাবে রাখা হয়েছে যেন আপনি একবার দেখলেই মনে রাখতে পারেন।

ফেসবুক মার্কেটপ্লেস থেকে আয়
ফেসবুক মার্কেটপ্লেস থেকে আয় করতে হলে প্রথমেই আপনাকে জানতে হবে ফেসবুক মার্কেটপ্লেস কি? সাধারণ ভাবে আমরা মার্কেটপ্লেস বলতে কি বুঝি?

মার্কেটপ্লেস হচ্ছে এমন একটি যায়গা যেখানে নিত্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী বা জিনিসপত্র বিক্রি করা হয়।

ঠিক একই রকম হচ্ছে ফেসবুক মার্কেটপ্লেস। যেখানে সরাসরি প্রডাক্ট না থাকবেনা বরং প্রডাক্ট বা পন্যের ছবি এবং সেই পন্য সম্পর্কে বিস্তারিত লেখা থাকবে ও দাম দেয়া থাকবে। গ্রাহক ফেসবুক মার্কেট প্লেস ব্রাউজ করবে এবং পন্য অর্ডার করবে।

আপনাকে সেই পন্য কুরিয়ার বা অন্য কোন মাধ্যমে সেই ক্রেতার কাছে পৌঁছে দিতে হবে। এর জন্য আপনার কিছু টাকা ইনভেস্ট করতে হবে কারন পন্য বিক্রি করে ইনকাম করতে চাইলে অবশ্যই পন্যের মজুদ থাকতে হবে।

তাছাড়া কোন রকম ইনভেস্ট ছাড়াও ফেসবুক মার্কেটপ্লেস থেকে ইনকাম করা সম্ভব। বাংলাদেশের রিসেলিং কোম্পানি শপআপ থেকে প্রডাক্ট এর ছবি এবং ডিটেইলস ডাউনলোড করে সেগুলো ফেসবুকে আপলোড করে বিক্রি করার মাধ্যমে ভাল অংকের টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

শুধু মাত্র বাংলাদেশি শপআপ থেকে রিসেলিং করতে হবে বিষয়টি কিন্তু তেমননা । শপআপ ছাড়াও আরও অনেক কোম্পানি রয়েছে যারা তাদের প্রডাক্ট রিসেলার দিয়ে বিক্রি করে থাকে।

আপনাকে সেগুলো গুগল সার্চ করে খুঁজে বের করতে হবে। রিসেলিং করতে আপনার কোন ধরনের টাকা খরচ করতে হবেনা।

রিসেলিং কি এবং কীভাবে
রিসেলিং হচ্ছে এমন একটি প্রসেস যেখানে অন্য কোন কোম্পানির প্রডাক্ট বিক্রি করতে হয়। এটি প্রায় অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মত। রিসেলিং বলতে অন্য কোন কোম্পানির পন্য একটি নির্দিষ্ট দামে ক্রয় করে সেটি একটি লাভজনক দামে বিক্রি করাকে বোঝায়।

যেমন আপনি শপআপ থেকে একটি পন্য ক্রয় করলেন ৩৫০ টাকা দিয়ে এবং সেটি আপনি ফেসবুক পেজ এর মাধ্যমে বিক্রি করলেন ৪৫০ টাকা।

এই যে মাঝের ১০০ টাকা এটি হচ্ছে আপনার লাভের অংশ। এই প্রডাক্ট কিনতে আপনার কোন টাকা খরচ করতে হবেনা।

আপনাকে শুধু রিসেলিং কোম্পানির ওয়েবসাইটে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে এবং সেই ওয়েব সাইট থেকে আপনি যে ধরনের প্রডাক্ট বিক্রি করতে চাচ্ছেন সেই প্রডাক্ট এর ছবি এবং ডিটেইলস ডাউনলোড করতে হবে।

তারপর সেই ছবি এবং ডিটেইলস ফেসবুকে পেজ এবং ফেসবুক শপে আপলোড করতে হবে। আপনার পেজ থেকে কোন প্রডাক্ট বিক্রি করে সেটি আপনাকে সেই কোম্পানি ওয়েবসাইটে গিয়ে ক্রেতার নাম এবং ঠিকানা দিয়ে অর্ডার করে দিতে হবে।

শুধু এটুকুই কাজ। প্রডাক্টটি ক্রেতা হাতে পেলেই আপনার করা রিসেলিং অ্যাকাউন্টে টাকা জমা হবে আপনি পরবর্তীতে সেই টাকা উত্তলন করতে হবে রিসেলিং ওয়েবসাইট থেকে।

রিসেলিং করে ইনকাম করতে হলে আপনাকে অবশ্যই অনেক বেশী ধৈর্যশীল হতে হবে কারন ফেসবুকে বর্তমান রিসেলিং এর প্রতিযোগিতা অনেক বেশী।

তাছাড়া আপনি আপনার প্রডাক্ট বুস্ট বা টাকা দিয়ে প্রচার করে অনেক তাড়াতাড়ি এবং অনেক বেশী টাকা ইনকাম করতে পারবেন। কারন সঠিক ভাবে প্রচার করতে পারলে সেল অনেক বেশী হয়ে থাকে।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
ফেসবুক এর মাধ্যমে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে ইনকাম করতে পারবেন খুব সহজেই। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে ইনকাম করতে হলে আপনাকে একটি অ্যাফিলিয়েট কোম্পানির কাছে থেকে অ্যাফিলিয়েট লিঙ্ক নিয়ে সেই লিংক এর মাধ্যমে প্রডাক্ট বিক্রি করতে পারলে আপনাকে একটি অংশের টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

অ্যাফিলিয়েট থেকে ইনকাম করতে হলে অ্যাফিলিয়েট সম্পর্কে আপনার পরিপূর্ণ ধারণা থাকতে হবে। কারন আপনি যদি অ্যাফিলিয়েট সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা অর্জন না করেন তাহলে কিছুতেই ইনকাম করতে পারবেন না।

কিছু টাকা ইনভেস্ট করলে অ্যাফিলিয়েট থেকে অনেক টাকা ইনকাম করা সম্ভব। আপনার অ্যাফিলিয়েট লিঙ্ক ফেসবুক পেজে আপলোড করার পর সেই পোস্টটির বিজ্ঞাপন প্রচার করলে অনেক বেশী সেল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

আপনি দ্রুত ইনকাম করতে চাইলে অ্যাড বুস্ট অর্থাৎ টাকা দিয়ে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি এবং কিভাবে কাজ করতে হয়?
অ্যাডভাইটাইজিং কোম্পানি খুলে ইনকাম
ফেসবুকে অনেক সময় দেখা যায় অনেক ধরণের অ্যাড আমাদের সামনে আসে যার উপরে লেখা থাকে Sponsored । ফেসবুকে প্রচার করার সব চাইতে বড় মাধ্যম হচ্ছে অ্যাড প্রমোট করা।

একটি কোম্পানির প্রডাক্ট সঠিক মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য সঠিক ভাবে রিসার্চ করার মাধ্যমে অ্যাড দেয়া হয়।

ফেসবুকে অ্যাড প্রচার করে দেয়ার ব্যবসা অনেক ভালো কারণ হচ্ছে আমাদের দেশের অংখ্যা ছোট উদ্যোক্তা রয়েছে যারা তাদের ব্যবসার প্রচার করার জন্য ভালো কোন অ্যাড কোম্পানির কাছে থেকে তার পন্য, ওয়েবসাইট বা ফেসবুক পেজের অ্যাড করিয়ে থাকে। এর বিনিময়ে তারা সেই অ্যাড কোম্পানিকে অ্যাড দেয়ার টাকা এবং সার্ভিস চার্জ প্রদান করে থাকে।

যে সমস্ত কোম্পানি রয়েছে তারা আগে থেকে বিভিন্ন প্লানের সার্ভিস চার্জ ঠিক করে রাখে এবং সেই অনুযায়ী কাজ করে থাকে। আপনি চাইলে এই ব্যবসা শুরু করে দিতে পারেন।

আপনি এই ব্যসা শুরু করলে তিনটি প্লাটফর্মে কাজ করতে পারবেন যেমন, ফেসবুক, গুগল, ইউটিউব। যখন আপনি প্রফেশনাল হয়ে যাবেন এবং আপনার প্রচার সব যায়গায় হয়ে যাবে তখন আপনি অনেক অ্যাড প্লাটফর্মে কাজ করতে পারবেন।

পৃথিবীতে অংখ্য অ্যাড প্লাটফর্ম রয়েছে। আপনি একবার শুরু করে দিলে ধীরে ধীরে সব কিছু জেনে নিতে পারবেন।

এই ব্যবসা শুরু করার জন্য আপনার বেশী কিছু দরকার হবেনা। একটি প্রফেশনাল ফেসবুক পেজ, মাস্টার কার্ড, কম্পিউটার ও ইন্টারনেট সংযোগ তাছাড়া আর কিছু দরকার নেই।

যখন নিজের ব্যবসা বড় হবে তখন একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে নিলে ভালো হবে।

এই ব্যবসা আপনি নিজের ঘরে বসে করতে পারবেন। প্রথমে একা একা শুরু করে দিন এবং পরে যখন দেখবেন আপনার প্রচুর কাস্টমার আসছে অ্যাড দেয়ার জন্য তখন একটি টিম তৈরি করে নিতে পারবেন।

আপনাকে মনে রাখতে হবে অ্যাড কোম্পানি শুরু করতে হলে সমস্ত প্রসেস গুগল, ইউটিউব থেকে জেনে নিতে হবে। যেমন। গুগলে কিভাবে অ্যাড দিতে হয়?
ফেসবুকে কিভাবে অ্যাড দিতে হয়?
ইউটিউবে কিভাবে অ্যাড দিতে হয়?
সমস্ত কিছু প্রফেশনাল ভাবে শিখে নিতে হবে কারণ প্রফেশনাল না হলে আপনি কারো অ্যাড দিয়ে দিলে সে সঠিক কাস্টমার না পেলে দ্বিতীয় বার আপনার কাছে আর আসবেনা।

তাই আপনি রবি ১০ মিনিট স্কুল থেকে ফেসবুক মার্কেটিং কোর্সটি কিনে নিতে পারেন। তাছাড়াও আপনি ইউটিউবে খুজতে থাকলে সমস্ত প্রসেস নিজে নিজে শিখে নিতে পারবেন।

আপনাকে একটি গল্প বলি, আমি নিজেই একদিন ফেসবুকে আমার কোম্পানির একটি পন্যের অ্যাড দেই বাংলাদেশের একটি অ্যাড এজেন্সি থেকে।

তাদেরকে সমস্ত ডাটা দিয়ে দেয়ার পরেও এমন সব অডিয়েন্স টার্গেট দিয়েছিল যে আমার একটি পন্য বিক্রি দুরের কথা নক পর্যন্ত দিয়েছিলনা।

খেয়াল করে দেখালাম এমন সব অডিয়ন্স টার্গেট করছিল যারা অনলাইন বা ই-কমার্স কি সেটি চিনেও না এবং আমার যে প্রডাক্ট রয়েছে তার নামও জানেনা।

বলতে পারেন আপনি বুঝলেন কি করে? উত্তর লাইক এবং কমেন্ট থেকে। তারপর সেই অ্যাড এজেন্সির কাছে দ্বিতীয় বার ফিরে যাওয়া হয়নি।

এই গল্প বলার প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে আপনাকে প্রথমে সব কিছু শিখে নিতে হবে তারপর কাজ শুরু করে দিতে হবে। তাহলে দেখবেন আপনি সফল হয়ে গিয়েছেন।

শেষ কথাঃ

আপনি ফেসবুক থেকে ইনকাম করতে চাইলে এই উপায়গুলোর মধ্যে যেকোনো একটি অবলম্বন করতে পারেন। আশা করছি আপনি খুব তাড়াতাড়ি ফেসবুক থেকে ইনকাম করা শুরু করবেন।

ফেসবুকের প্রতি মানুষের জনপ্রিয়তা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পেয়েই যাচ্ছে তাই ফেসবুক হতে পারে আপনার আয় করার একটি মাধ্যম।

আপনার যদি আরও কিছু জানার থাকে ফেসবুক থেকে আয় করার উপায় নিয়ে থালে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।

Comments (No)

Leave a Reply

এই সাইটের কোন লেখা কপি করা সম্পুর্ন নিষেধ