পিটিসি সাইটে ভালোভাবে আয় করার কৌশল- ০১

পিটিসি সাইটে ভালোভাবে আয় করার কৌশল- ০১

পিটিসি সাইটে প্রতিষ্টিত হওয়ার গোপন চাবি তো আপনারই হাতে।এখানে একটি কথা না বলে পারছি না আর তা হলো পিটিসি সাইটে কাজ করে শতকরা ৯০ জন ব্যক্তিই ব্যর্থ হয়ে থাকেন। আর মাত্র ১০ শতাংশ লোক তাদের পরিশ্রম, মেধা, আত্মবিশ্বাস, দৈর্য্য ও ভাগ্যের ফেরে লাভবান হয়ে থাকেন। পিটিসি সাইটগুলোতে কাজ করে কিভাবে প্রতিষ্টিত হতে পারবেন আজ তারই একটি নির্ভরযোগ্য আলোচনা করব পাঠকদের জন্য।PTC এর মানে হলো Paid To Click. অর্থাৎ ক্লিক করলেই টাকা দেয়া হয়। পৃথিবীতে যে সমস্ত এড কোম্পানী রয়েছে এরা তাদের এড প্রদর্শনের একটি বোনাস দর্শকদের জন্য মনোনীত করে রেখেছে যাতে সবাই এড দেখতে মনোযোগী হয়। যদি কেউ একজন একটি এড দেখে তাহলে কোম্পানী ঐ এড দেখার বোনাস স্বরূপ কিছু ডলার প্রদান করে থাকে। এই ডলার কিভাবে দেয় তা শুনলে আপনি হতবাক হয়ে যাবেন এতে কোনো সন্দেহ নাই। কারণ ১০০ পেনি= ১ সেন্ট। আর ১০০ সেন্ট= ১ ডলার। আর এই এড কোম্পানীগুলো আপনাকে পেনিই দেবে ডলার নয়। যেমন Neobux প্রতিদিন প্রাথমিক মেম্বারদেরকে ২৬ পেনি থেকে ৭০ পেনি পর্যন্ত তাদের একাউন্টে পাঠাবে। মেম্বারশীপ অনুযায়ী এই পেনি ২০০ থেকে ৩০০ পর্যন্ত হতে পারে যা সবার জন্যই ফ্রি। আপনি এই এডগুলোতে ক্লিক করে ১ পেনি, ১ পেনি করে আয় করতে হবে। এই পেনির আয়ের বর্ণনা শুনে অনেকেই আবার হতাশ হলেন না তো? হতাশ হবারই কথা। কিন্তু এই পেনি পেনি আয় একদিন আপনার জীবনের চাকা যে পাল্টে দিতে পারে তা কিন্তু আপনি যানেন না। আর আমার লিখনীর আসল উদ্দেশ্যই হলো পেনির রহস্য নিয়ে। প্রতিটি পিটিসি সাইটের আয় শুরু হয় পেনি দিয়ে। আসুন কিভাবে পেনি পেনি আয় থেকে ডলার ডলার আয় করা যায় জেনে নেই এর গোপন রহস্য ।আর ক্যারিয়ার গঠনের প্রতি হই মনোযোগী।

পিটিসি সাইটে কাজ করতে কিছু প্রয়োজনীয় কথা

১. লিগেল ও নির্ভরযোগ্য সাইট নির্বাচন করুন।২. পিটিসি সাইটের Terms of services ভালোভাবে জানুন ও শিখুন।৩. আপনি যে সাইটে কাজ করবেন সে সাইটের Terms of services ভালোভাবে জানুন। এবং মেনে চলুন।৪. কাজ না শেখা পর্যন্ত কোনো ইনভেস্ট করবেন না। এবং কাজ না শেখা পর্যন্ত হাল ছাড়বেন না। মানে কাজ ছেড়ে দিবেন না।৫. অন্তত ৬ মাস কাজ চালিয়ে যান। তারপর ভাল লাগলে করবেন নয়তো ছেড়ে দিবেন।৬. একজন ভালো রেফারেল এর মাধ্যমে পিটিসিতে কাজ করবেন যাতে আপনি সব রকমের সহযোগীতা পান। গুগল সার্স করে আমি কিছু ইউটিউব এর টিউটোরিয়াল দেখলাম যেগুলোর রেফারেল তিনি নিজেও নতুন এবং আয়ের পরিমাণও সামান্য। এত সামান্য আয় করে তিনি রেফারেল পাবার আশায় টিউটোরিয়াল করতে শুরু করে দিয়েছেন যা আমাকে একেবারেই অবাক করেছে। আপনিও এই টিউটোরিয়ালগুলো দেখলে আমার কথার সত্যতা যাচাই করতে পারবেন। আপনি এ রকম রেফারেল থেকে অবশ্যই দূরে থাকবেন। ভালো রেফারেল আপনার কাজের গতিকে মনিটরিং করবেন যাতে আপনার শ্রম ও কষ্ট বিফলে না যায়।৭. আপনার কম্পিউটার ও মডেম অন্যকে ব্যবহার করতে দিবেন না এবং একই পিসি থেকে একাধিক একাউন্ট খুলবেন না। এ রকম করলে আপনার একাউন্ট সাসপেন্ড হয়ে যাবে।

পিটিসি সাইটে কাজ করে সাফল্য লাভের আরো কিছু কথা এখানে আমি point আকারে আলোচনা করব যা পাঠ করে আপনারা  উপকৃত হবেন এটা আমার একান্ত বিশ্বাস

পিটিসির কাজকে একটি চাকরী মনে করুণ:

একজন লোক ক্লাস ওয়ান থেকে এমএ পাস করতে কমপক্ষে সময় লাগে ১৭-১৮ বছর। তারপর চাকরি পেতে হলে আরো যে কত দিন লাগে তা তো সবারই জানা। আর আপনি যদি পিটিসি সাইটে কাজ করে মাত্র ৩-৪ মাসে রাতারাতি বড়লোক হতে চান এটা যুক্তিসঙ্গত নয়। বিষয়টি একটু ভেবে চিন্তে দেখতে অসুবিধা কোথায়? কাজেই আপনার এই কাজকে একটি গুরুত্বপূর্ণ চাকরী ভেবে দৈনিক কাজ করে যান বিরামহীনভাবে।

সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করুণ:

সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা আপনার কাজের গতিকে করবে গতিশীল এবং আয়ের পরিমাণ হবে আশানুপাত। কোন সময়ে কোন সাইটের কাজ করবেন তার একটি বিজ্ঞানসম্মত রুটিন তৈরী করুণ আর আপনার মূল্যবান সময়কে কাজে লাগান। মনে রাখবেন Time is money. ইংরেজিতে একটি প্রবাদ আছে- Time and tide waits for none.

সহযোগী দল তৈরী করুণ:

যৌথ প্রয়াস সব সময় কাজের গতিকে করে ত্বরান্বিত। একার পক্ষে যা সম্ভব নয়, সমবেত প্রচেষ্টায় তা হয়ে উঠে সহজ। মনে রাখবেন পিটিসির আয়ের একটি বিরাট অংশ পূরণ হয় গ্রুপ তৈরী ও যোগাযোগের মাধ্যমে। একে অপরের সহযোগীতার হাত সম্প্রসারিত করুণ এতে উভয়েরই মঙ্গল অনিবার্য।

ধৈয্য ধারন করুণ:

পিটিসি সাইটে কাজ করতে হলে আপনাকে খুবই ধৈর্যশীল হতে হবে। ইংরেজিতে বলতে গেলে বলতে হয়- “Patience is the key to success specially for PTC sites.” অতি গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো পিটিসি সাইটে দৈর্য্যসহকারে মাত্র ৬-৯ মাস কাজ করুন তারপর হিসেব মিলিয়ে দেখুন আপনার জীবনে নতুন একটি অধ্যায় সুচিত হবে যা আজীবনের জন্যই উম্মোক্ত থাকবে। আপনি যদি বিদেশেও চলে যান, আপনার আয় কখনো বন্ধ হবে না। এমনকি বিদেশে পাড়ি দিলে আপনার পিটিসি ইনকাম আরো দ্বিগুন হয়ে যাবে, এটাতো সবাই-ই জানেন। কাজেই মাত্র ৪/৫ টি ভালো পিটিসি সাইট বাছাই করে আজীনের জন্য খন্ডকালীন চাকরি হিসেবে বেছে নিতে কোনো অসুবিধা থাকছে না।।

আত্মবিশ্বাসী হউন:

আমি পারব, আমাকে পারতেই হবে, এরকম মনোভাব নিয়ে কঠোর পরিশ্রম, অধ্যাবসায় ও অনুশীলনের দ্বারা বহু অসাধ্য কাজও অনায়াসে সমাধা করা যায়। অনুশীলন, অধ্যাবসায় ও প্রচেষ্টার মাধ্যমে স্মৃতিশক্তি পর্যন্ত অর্জন করাও সম্ভব। যার জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন বিংশ শতাব্দীর প্রতিভাধর বিজ্ঞানী আইন স্টাইন যিনি জার্মানীতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। মা সঙ্গীত প্রিয় ছিলেন ফলে মায়ের উৎসাহেই তিনি ৬ বছর বয়সে বেহালা বাজাতে শিখেছিলেন। লেখাপড়ায় খুবই দুর্বল হওয়ায় ৯ বছর বয়সেও তিনি স্কুলে ভর্তি হতে পারেননি। ভর্তি পরীক্ষায় সাফল্য লাভের জন্য তাকে দু’দুবার পরীক্ষা দিতে হয়েছিল। ডিগ্রী পরীক্ষায় কোনো রকমে পাশ করতে তাকে অমানুষিক পরিশ্রম করতে হয়েছিল। স্মৃতি শক্তির স্বল্পতা হেতু তিনি স্কুলে চাকরী জোটাতে ব্যর্থ হলেন। তারপর তিনি স্মৃতি শক্তি বাড়ানোর জন্য সচেষ্ট হলেন। ক্রমাগত অনুশীলন ও অধ্যাবসায়ের ফলে অবশেষে স্বরণ শক্তি বাড়াতে সক্ষম হলেন। আর পদার্থ বিজ্ঞানে অর্জন করলেন নোবেল পুরষ্কার।

মনে রাখতে হবে বহুবার ব্যর্থতার সিড়ি বেয়েই সাফল্যের দরজায় পৌছতে হয়। এভারেষ্ট বিজয়ের কথাই ভাবুন। দীর্ঘ ২২ বছর অভ্যাহত প্রচেষ্টার পর দুর্গম গিরি শৃঙ্গ জয় করেছিলেন এডমান্ড হিলারী ও তেনজিং। তার পূর্বে এই রেকর্ড করতে গিয়ে ১৬ জনের প্রাণ দিতে হয়েছিল। উপলব্দি করুণ এই গিরি শৃঙ্গ জয় করতে কত দু:সাহসিক অভিযানের দরকার হয়েছে। অধ্যাবসায়, পরিশ্রম, আত্ববিশ্বাস ও সহিষ্ঞুতা ছাড়া কেইবা সাফল্য লাভ করতে পেরেছে?

নিউটন বলেছিলেন, “ আমার আবিষ্কারের কারণ আমার প্রতিভা নয়। বহু বছরের পরিশ্রম ও নিরবিচ্ছিন্ন চিন্তার ফসল। যখনই যা আমার মনের সামনে এসেছে আমি শুধু তারই মিমাংশায় ব্যস্ত থাকতাম। ফলে অস্পষ্টতা থেকে ধীরে ধীরে স্পষ্টতার মধ্যে উপস্থিত হয়েছি।‍‌‍”

 দার্শনিক ইয়ং বলতেন “ মানুষ যা পেরেছে, মানুষ তা পারবে।”

 নিজেকে সুস্থ রাখুন:

জীবনকে প্রতিষ্ঠিত করতে প্রয়োজন সুস্থতা ও সুস্বাস্থ্য। নিয়মিত ব্যায়াম, পরিমিত ঘুম, পরিমিত পুষ্টিকর খাবার সুস্বাস্থ্যের জন্য অতিব জরুরী। সুস্বাস্থ্যের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বলতে গেলে কবি নির্মলেন্দু গুণের কথাটি খুবই মনে পড়ে। তিনি বলেছিলেন,
“আকাশের সূর্যটা যদি তুমি ছুঁতে চাও, স্বাস্থ্যটা ভালো করো এখনই শুতে যাও। ঘুম যদি ভালো হয় স্বাস্থ্যটা ফুটবে, সূর্যের সাথে সাথে ঘুম থেকে উঠবে।”
আর ইংরেজিতে একটি প্রবাদ আছে- Early to bad and early to raise makes a man healthy,  wealthy and wise. অর্থাৎ সকাল সকাল ঘুমিয়ে যারা সকাল সকাল উঠে, স্বাস্থ্যবান, ধনী আর বিজ্ঞ তারাই বটে।

চলবে 

Comments (2)

  1. Md Nazrul Islam Feb 20, 2016
  2. Md Nazrul Islam Feb 20, 2016

Leave a Reply

এই সাইটের কোন লেখা কপি করা সম্পুর্ন নিষেধ