নতুন অভিযান

পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বাঙালি কর্মকর্তা শামসুল আলমকে চেনেন? ঠিক এই নামে তাঁকে চিনবেন না। কিন্তু যদি বলা হয় শামসু বাহিনীর লিডার শামসুল আলমের কথা, তবে ‘হিরোস অব ৭১’ গেমের বদৌলতে তাঁর নামটা এখন অনেকেরই মুখে মুখে। আর তাঁর সঙ্গে থাকা সাধারণ শ্রমিক কবির মিয়া, মেডিকেল শিক্ষার্থী তাপস মৈত্র, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সজল ওরফে মাহবুব চৌধুরী, যন্ত্র প্রকৌশলের শিক্ষার্থী বদিউজ্জামান ওরফে বদি—মোট এই পাঁচজনের দল নিয়ে গঠিত শামসু বাহিনীও গেমটির সৌজন্যে তরুণদের কাছে বেশ পরিচিত। স্মার্টফোনের জনপ্রিয় এ গেমটি তৈরি করেছে স্পোর্টস টিম।
ওদিকে মধুমতী নদীর তীরে শনিরচর পাকিস্তানি সেনাশূন্য করার মিশন নিয়ে যে ১৬টি লেভেলে গেমটি তৈরি হয়েছিল সেই ১৬ ধাপ শেষে এত দিনে সবারই কম বেশি মুক্তিযুদ্ধের পরিস্থিতি আঁচ করতে পারার কথা।
তবে মুক্তিযুদ্ধ কিন্তু এই একটি মিশনের মতো ১৬টি লেভেলে সীমাবদ্ধ ছিল না। এ রকম কত শত মিশন শেষে তবেই স্বাধীনতার সূর্য হেসেছে। থেমে নেই তাই এই গেমের নির্মাতারাও। ১৬ লেভেল করেই ক্ষান্ত দেননি তাঁরা। সবকিছু ঠিক থাকলে ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে বের হচ্ছে এই গেমের নতুন সংস্করণ ‘হিরোস অব ৭১ রিটেইলেশন’। সম্পূর্ণ নতুন একটি মিশন, নতুন চরিত্র আর নতুন গল্প।.
‘আমাদের শুরু থেকেই লক্ষ্য ছিল নতুন একটা সংস্করণ বের করার। গেমপ্রকাশের পর সকলের আগ্রহ এবং উৎসাহ আমাদের আরও অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।’ বলছিলেন গেমটির একজন প্রোগ্রামার অভীক চৌধুরী। আরেক সহকর্মী আবদুল জাওয়াদ আরও জানালেন গুগল প্লে স্টোরে যাওয়ার পর এই পর্যন্ত আমাদের গেমটি তিন মাসে মোট তিন লাখেরও বেশি ডাউনলোড হয়েছে। ইউজার রেটিং পাঁচের মধ্যে ৪ দশমিক ৮। আর এই গেমের সক্রিয় ব্যবহারকারী ছয় লাখেরও বেশি।
একটু না হয় আচ দেওয়াই যাক এবারের গল্পটার। প্রচণ্ড যুদ্ধের পরে শামসুরা মুক্ত করে শনিরচর, দখল করে নেয় সেখানকার পাকিস্তানি ক্যাম্প। দুর্ভাগ্য, শহীদ হয় সজল। তাই বলে সহযোদ্ধার মৃত্যুতে ভেঙে পড়ে না তারা। বরং প্রতিশোধের আগুনে উদ্বেলিত হয় শামসু বাহিনী। সেদিন সন্ধ্যের দিকে আবার গোপন জরুরি সভায় বসে কমান্ডো বাহিনী। ক্লান্তির সামান্য ছাপ থাকলেও তা পাত্তা দেওয়ার সময় নেই তাদের। ওদিকে যে খবর এসেছে ঘৃণ্য পাকিস্তানি সেনারা কয়েকজন নারীকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে দুই-তিন মাইল দূরে ঊল্লার হাটে একটা টর্চার ক্যাম্পে। সেদিন রাতেই মিশনে বেরিয়ে পড়ে তারা। জায়গাটার কাছাকাছি পৌঁছুতেই দেখে, মাত্র ট্রাক থেকে চুল ধরে টেনেহিঁচড়ে নামানো হচ্ছে মেয়েদের, সাহায্য করছে রাজাকাররা। মাথায় রক্ত চড়ে যায় শামসুদের।
চারজনের দল নিয়ে ওরা ঝাঁপিয়ে পড়ে তাঁদের মুক্ত করার জন্য। ওদের বিরুদ্ধে ভারী অস্ত্রে সজ্জিত পাকিস্তানি নরপশুদের একটা হিংস্র দল। এই টর্চার ক্যাম্পেই শামসু বাহিনীর সঙ্গে দেখা হয় অনিলার। পৈশাচিক অত্যাচারের মুখেও অবিচল থাকা এই মেয়েটিও যোগ দেয় ওদের সঙ্গে। এরপর মেয়েটিকে সঙ্গে নিয়েই চলতে থাকে তাদের যুদ্ধ।
গেমটির ফেসবুক পেজে টিজার দেওয়া হয়েছে, ‘বদি-কবির-তাপসরা কি পারবে টর্চার সেল থেকে মা-বোনদের উদ্ধার করতে? অপারেশন মিশনেই বা কীভাবে পরিচয় হলো অনিলার সাথে?’ অপেক্ষায় থাকতেই হচ্ছে পাঠক। ২৬ মার্চ নিজেই জেনে নিতে পারবেন উত্তরগুলো

Comments (No)

Leave a Reply

এই সাইটের কোন লেখা কপি করা সম্পুর্ন নিষেধ