তুলায় তিন গুণ লাভ বাড়ছে চাষে আগ্রহ খেত থেকে তুলা সংগ্রহ করছেন একজন চাষি। গতকাল চারঘাটের থানাপাড়া এলাকায়। তুলা চাষে যে লাভ হয়, তা অন্য ফসলে মেলে না। তুলার উৎপাদন খরচ বাদ দিয়েও তিন-চার গুণ লাভ থাকছে কৃষকের। তাই দিন দিন তুলা চাষে আগ্রহ বাড়ছে তাঁদের।
রাজশাহীর চারঘাটে বাণিজ্যিকভাবে তুলা চাষ শুরু হয়েছে। এখন চলছে তুলা সংগ্রহের কাজ। চলতি বছরে আবহাওয়া অনুকূলে থাকা, অতিবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত না হওয়া এবং রোগবালাইয়ের আক্রমণ কম থাকায় তুলার ফলন ভালো হয়েছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে দাম চড়া হওয়ায় দেশের বাজারেও বেড়েছে। পণ্যটি বাজারজাতকরণে তুলা বোর্ড সারা দেশে একটি নির্দিষ্ট মূল্য বেঁধে দিয়েছে। এর ফলে কৃষকেরা যখন তখন নগদ মূল্যে তুলা বিক্রি করতে পারছেন। বাম্পার ফলন ও ভালো দামে হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে।
তুলা উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে চারঘাটের ১ হাজার ৭০০ জন চাষি ২৫০ হেক্টর জমিতে তুলা চাষ করেছেন, যা গতবারের চেয়ে ১০০ হেক্টর বেশি। উচ্চফলনশীল জাত সিবি-১৪ ও লাল তীর জাতের তুলা চাষ হয়েছে বেশি।
উপজেলা তুলা উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা আব্দুল গফুর জানান, চারঘাটে রেকর্ড পরিমাণ জমিতে তুলা চাষ হয়েছে। কৃষকেরা যাতে উৎপাদিত তুলার ন্যায্যমূল্য পান, সে জন্য দাম বাড়িয়েছে সরকার। মণপ্রতি ১ হাজার ২০০ টাকা বাড়িয়ে ৩ হাজার ৬০০ টাকা করা হয়েছে। প্রান্তিক চাষিদের কাছে থেকে তাঁদের উৎপাদিত তুলা কেনা হচ্ছে।
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এক বিঘা তুলা চাষে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ হয়। দেশি তুলা বিঘাপ্রতি ১২ এবং হাইব্রিড ১৫ মণ ফলন পাওয়া যায়। অর্থাৎ এক বিঘা জমিতে দেশি তুলা চাষ করে উৎপাদন খরচ বাদ দিয়েও ৩৩ হাজার টাকা এবং হাইব্রিড তুলায় ৪৪ হাজার টাকার বেশি থাকছে কৃষকের।
উপজেলার মিয়াপুর এলাকার চাষি আব্দুল হামিদ জানান, এক বিঘা জমিতে তুলা চাষ করতে তাঁর ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তুলা উন্নয়ন বোর্ড কৃষকদের আগাম সার, বীজ, ঋণসহ বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেয়। তুলা বিক্রি করে সেসব পরিশোধ করা যায়।
উপজেলার থানাপাড়া গ্রামের কৃষক মঞ্জুরুল কাদির জানান, তুলা উন্নয়ন বোর্ড থেকে সার, বীজসহ বিভিন্ন ধরনের ঋণসহায়তা নিয়ে চার বিঘা জমিতে তুলা চাষ করেছেন তিনি। ইতিমধ্যে ৪০ হাজার টাকার তুলা বিক্রি করেছেন। লক্ষাধিক টাকার তুলা বিক্রির আশা আছে তাঁর। তাই শুভ্র তুলা বা তাঁদের কাছে সাদা সোনা।
চলতি মৌসুমে প্রায় এক মাস ধরে তুলা সংগ্রহ করা হচ্ছে। এটি আরও প্রায় ১৫ দিন চলবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবং অসময়ের বৃষ্টি না হলেও তুলাচাষিদের লাভবান হওয়ার আশা এবার বেশি।
Comments (No)