ডিজিটাল মার্কেটার হতে চাইলে তোমার যা যা জানা দরকার শুরুতে এমন কিছু ট্রেন্ড নিয়ে আলোচনা করবো যা 2024 সালে এসে কোনোভাবেই এড়িয়ে যাওয়া যাবে না। বিশ্বের বাণিজ্য বাজারে এগুলো পুরোপুরি ছেয়ে গেছে।
গ্রাফিক্স ডিজাইনিং, পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশান ইত্যাদি স্কিল ডেভেলপমেন্টের জন্য 10 Minute School Skill Development Lab নামে ১০ মিনিট স্কুলের রয়েছে একটি ফেইসবুক গ্রুপ। গ্রুপে জয়েন করুন!
ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রচলিত ট্রেন্ডগুলো – Stickmanjones
১. আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স
বলা হয়, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স দিয়ে এক সময় পুরো পৃথিবী ছেয়ে যাবে। মানুষের কাজ তখন প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে আসবে। 2024 সালে এসে মার্কেটিং-এর বাজারে একটি বড় অংশ দখল করে নিয়েছে এই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা AI। উদারহণ হিসেবে ফেসবুকের মেসেঞ্জার বটের কথাই ধরো। কোনো সেলিং কোম্পানিকে তুমি যদি মেসেঞ্জারে নক করো,
তাহলে তারা প্রায় সাথে সাথেই উত্তর দিয়ে থাকে। আর তোমার চাহিদা অনুযায়ী যদি তাদের কাছে পণ্য চাও, তাহলে তোমার পছন্দমতো পণ্যও তারা দেখাতে পারে। এমনকি তোমার কেমন চাহিদা তার উপর ভিত্তি করে তারা পরবর্তীতেও তোমার সামনে তাদের পণ্য প্রদর্শন করে। তুমি যদি শার্ট কিনতে পছন্দ করো, তাহলে তাদের কালেকশনে নতুন শার্ট আসলে তা তোমাকে জানানো হবে। এরকম সুবিধা কে না পছন্দ করে?
২. চ্যাটবটস
ফেইসবুকে বর্তমানে আলোচিত বিষয়গুলোর মধ্যে একটি হলো এই চ্যাটবট। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স দ্বারা পরিচালিত এই চ্যাটবট ব্যবহারকারীর যেকোনো চাহিদা সহজেই অনুধাবন করে সেই অনুযায়ী তথ্য সরবরাহ করে থাকে। মূল উত্তরদাতার তুলনায় চ্যাটবট অনেক দ্রুত উত্তর দিতে পারে বলে ব্যবহারকারীরা এই চ্যাটবট ব্যবহারে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের DU mamabot নামের চ্যাটবটের সাহায্যে ব্যবহারকারীরা সহজেই বাস ছাড়ার সময় ও পরবর্তী বাস কখন আসবে তা জানতে পারে। এরকম চ্যাটবট এখন প্রায় সব প্রতিষ্ঠানেই ব্যবহার করা হয়।
আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স ও চ্যাটবটের মাধ্যমে যোগাযোগ – Red Ant Asia
৩. পার্সোনালাইজড ই-মেইল
বর্তমানে সর্বাধিক প্রচলিত ধারা হলো নিজেদের মতো করে ই-মেইল পার্সোনালাইজ করা। বর্তমানে কোনো না কোনো কাজে যোগাযোগের জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের গ্রাহকের সাথে ই-মেইলের মাধ্যমে যোগাযোগ করে। তবে এক্ষেত্রে তারা যদি প্রচলিত ধারায় মেইল না পাঠিয়ে তাদের মতো করে কাস্টোমাইজ করে মেইল পাঠায় যাতে গ্রাহকের বুঝতে সুবিধা হয়, তাহলে সে ক্ষেত্রে ফলাফল বেশ ভালো পাওয়া যায়। গ্রাহকরাও তখন সেই প্রতিষ্ঠানের প্রতি অধিক আগ্রহ দেখায়।
দেখে নাও ক্যারিয়ার প্ল্যানিং এর খুঁটিনাটি!
৪. ভিডিও মার্কেটিং
সোশ্যাল মিডিয়াতে লাইভ ভিডিও শেয়ারিং এখন এতো বেশি হয় যে, মার্কেটাররাও এর সুবিধা নিতে ভুল করেনি। বিভিন্ন পণ্যের ব্যবহারের উপর লাইভ ভিডিও কিংবা পণ্যের মোড়ক উন্মোচনের লাইভ ভিডিও এখন গ্রাহকদের অনেক বেশি আকর্ষণ করছে। ভিডিও শেয়ারিং এর মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছে নিজেদের বার্তা অনেক সহজেই তুলে ধরা যায়। অনেকে ৩৬০° ভিডিও ব্যবহার করে যা আরও আকর্ষণীয় করে তুলে পুরো ব্যাপারটিকে।
৫. সোশ্যাল মিডিয়া স্টোরি
প্রতিদিন প্রতি ঘণ্টায় কেউ না কেউ সোশ্যাল মিডিয়ায় স্টোরি আপলোড দিচ্ছেই। কী করছে, কী খাচ্ছে, কোথায় যাচ্ছে, কার সাথে যাচ্ছে এই সবকিছু স্টোরিতে শেয়ার দেয়া লাগবেই। পণ্য বিক্রি করার ক্ষেত্রেও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এই স্টোরির সুবিধা নিচ্ছে। সেই সাথে দেখা যায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের অ্যাফিলিয়েটদের দিয়ে স্টোরিতে তাদের পণ্যের প্রমোশন করাচ্ছে। এধরণের প্রচারণা সত্যিই এখন বেশ প্রচলিত হয়ে উঠেছে এবং সবাই তা গ্রহণও করছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় স্টোরি শেয়ার এখন বেশ প্রচলিত – ClickZ
এগুলো ছিলো বর্তমান সময়ে প্রচলিত বেশ কিছু ডিজিটাল মার্কেটিং ট্রেন্ড। এবার আসি এমন কিছু ট্যাক্টিকস নিয়ে যা যেকোনো ছোট-খাটো ব্যবসায় মার্কেটিং-এর কাজে ব্যবহার করা যাবে।
১. টার্গেট গ্রুপ কী পছন্দ করে তা খেয়াল করা
সোশ্যাল মিডিয়াতে এখন ভালো যেকোনো পোস্ট হলে তা শেয়ার করার হিড়িক পড়ে যায়। মার্কেটিং-এর জন্য তুমি এই জিনিসটি কাজে লাগাতে পারো। অনেক নামী রেস্টুরেন্ট এই বুদ্ধিটি কাজে লাগিয়ে তাদের পপুলারিটি বাড়িয়ে নিচ্ছে। অনেক সময় দেখা যায় দু’টি নির্দিষ্টি প্রতিষ্ঠানের মাঝে এক প্রকার সোশ্যাল মিডিয়া যুদ্ধ লেগে যায় এই নিয়ে যে,
কে কার চেয়ে মজার পোস্ট তৈরি করতে পারে। সাধারণ মানুষজন তা দেখে মজা পায় এবং শেয়ারও করে। এভাবে নিছক মজার ছলেই নিজেদের মার্কেটিং করে ফেলা যায়।
২. গ্রাহক যাতে একই সাথে মোবাইল ও ডেস্কটপ ব্যবহার করে সুবিধা নিতে পারে তার ব্যবস্থা করা
বর্তমানে প্রায় সব ধরণের ব্যবসার জন্য একটি নিজস্ব ওয়েব সাইট ডেভলপ করা হয়। ধরে নিলাম তুমি অনলাইনে পণ্য বিক্রি করার জন্য একটি ওয়েব সাইট বানাবে। এখন তোমার দেখতে হবে গ্রাহকরা কোন মাধ্যমে তোমার ওয়েব সাইটে বেশি এক্সেস করতে পারে।
তুমি যদি কেবল ডেক্সটপের জন্য সাইট ডেভলপ করো, তাহলে দেখা যাবে খুব একটা গ্রাহক পাবে না। কারণ বেশিরভাগ গ্রাহক এখন মোবাইল ফোন ব্যবহারে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। তাই দেখা যাবে ব্যবসার শুরুতেই তুমি গ্রাহকদের একটি বড় অংশ হারিয়ে ফেলছো যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এজন্য তুমি মোবাইল ফোনের গ্রাহকদের জন্য আলাদা ওয়েব ডিজাইন অথবা একটি অ্যাপের ব্যবস্থা করে ফেলতে পারো।সব মাধ্যমের জন্য ওয়েবসাইট বিল্ড করো – Medium
৩. সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারণা চালানোর ব্যাপারে বেশি গুরুত্ব দাও
সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারণা চালানো এখন ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি বড় অংশে পরিণত হয়ে গিয়েছে। যেহেতু মানুষজন এখন দিনের একটা বড় অংশ সোশ্যাল মিডিয়ায় কাটিয়ে দেয় তাই এর মাধ্যমে তাদের কাছে নিজেদের মার্কেটিং করা তুলনা মূলক অনেক সহজ।
অনেক সময় দেখা যায় মাঠ পর্যায়ে প্রচারণার চেয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারণা চালানো অনেক বেশি কার্যকরী। সেই সাথে নিজদের সমস্ত কাজ আপডেটেড রাখার জন্যও মানুষ সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে। এতে গ্রাহকরা অনেক বেশি আকৃষ্ট হয়।
৪. ওয়েবসাইট ডেভলপ করার সময় গ্রাহকের সাথে সরাসরি কথা বলার ব্যবস্থা রাখো
যেকোনো ব্যাপারে গ্রাহকদের মতামতে গুরুত্ব দেয়া বর্তমানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। গ্রাহকরা তাদের মতামত যাতে তুলে ধরতে পারে সে জন্য যেকোনো ওয়েবসাইট বা অ্যাপ ডেভলপ করার সময় তা খেয়াল রাখতে হবে।
তাছাড়া গ্রাহকদের সাথে সরাসরি কথা বলারও ব্যবস্থা থাকা উচিত। তাহলে গ্রাহকদের যদি তাৎক্ষণিক কোনো জিজ্ঞাসা থাকে তা করতে পারবে। এজন্য তুমি চাইলে একটি মেসেঞ্জার বটেরও ব্যবস্থা করতে পারো।
৫. একটি টার্গেট ই-মেইল গ্রুপ রাখো
যখন তুমি নতুন কোনো পণ্য আনবে তা সাথে সাথে তোমার প্রিয় গ্রাহকদের জানানোর সবচেয়ে সহজ এবং কার্যকরী উপায় হলো তাদেরকে ই-মেইল অথবা মেসেজের মাধ্যমে জানানো।
এতে করে যে সকল গ্রাহক তোমার থেকে নিয়মিত পণ্য কেনে তাদের সাথে যোগাযোগ বেশি হবে এবং ঘনিষ্ঠতা বাড়বে আগের থেকে। নিজের সফলতার জন্য এ ধরণের গ্রাহকের তালিকা রাখা অত্যন্ত জরুরি।
এবার কিছু বইয়ের তালিকা দিবো যেগুলো 2024 সালে এখন পর্যন্ত মার্কেটিং এর উপর সর্বাধিক বিক্রিত বই। এসব বই থেকে তুমি মার্কেটিং এর ব্যাপারে আরও বেশি এবং স্পষ্ট ধারণা লাভ করতে পারবে।
Comments (No)