অনেকের মনেই ব্যবসায়ী হওয়ার স্বপ্ন উঁকি দেয় ছোটবেলা থেকেই। পর্যাপ্ত পুঁজি, উপযুক্ত সময়, পরিবেশ প্রভৃতির কথা চিন্তা করতে করতে তাদের ব্যবসায়ী হওয়ার স্বপ্ন আর ডানা মেলে না। পড়ালেখা শেষ হওয়ার পর চাকরির দৌড়ে শামিল হয়ে হারিয়ে যান অসংখ্য স্বপ্নবাজ।
এক্ষেত্রে অনুকরণ করতে পারেন মাইক্রোসফট, ডেল, ফেসবুক প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তাদের। এসব প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তারা কলেজ জীবনেই তাদের ব্যবসা শুরু করতে পারলে আপনি কেন পিছিয়ে থাকবেন? বিজনেস ইনসাইডার প্রকাশ করেছে ১০টি ব্যবসার কথা, যা করা যাবে ছাত্র জীবনেই। ঘরে বসেই করা যাবে এমন ১০ ব্যবসার একটির সাথে আপনিও মেলাতে পারেন নিজেকে।
১. তথ্য প্রযুক্তি পরামর্শক: বর্তমান যুগ তথ্য প্রযুক্তির যুগ। বিকাশমান এ খাতে উদ্যোক্তা হওয়া খুব কঠিন কিছু নয়। তথ্য প্রযুক্তি খাতে দক্ষতা থাকলে ব্যক্তিগত একটি কম্পিউটারের পাশাপাশি ইন্টারনেট সংযোগ থাকলেই আপনি এ খাতের পরামর্শক হিসেবে কাজ করতে পারবেন। এ কাজ করতে হলে আপনাকে তথ্য প্রযুক্তিতে দক্ষ হওয়ার পাশাপাশি নতুন নতুন প্রযুক্তির খোঁজ রাখতে হবে। কাজ পাওয়ার জন্য যোগাযোগে অবশ্যই ভাল হতে হবে।
২. সামাজিক যোগাযোগ পরামর্শক: সামাজিক যোগাযোগে হয় তো দিনের বড় একটি সময় ব্যয় করে থাকেন। হাই, হ্যালো করতে করতে কিংবা লাইক, কমেন্ট করেই হয়তো কাটে ঘন্টার পর ঘন্টা। সামাজিক যোগাযোগের নানা খুঁটিনাটি যদি আপনার জানা থাকে তাইলে কোন প্রতিষ্ঠানকে তাদের প্রচারণার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের পরামর্শ আপনি দিতেই পারেন। ইদানীং প্রচলিত বিজ্ঞাপনের বাইরে গিয়ে কোম্পানিগুলোও সামাজিক যোগাযোগে তাদের প্রচারণায় আগ্রহী হয়ে উঠছে। কোন প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তিতে গিয়ে কাজটি করতে পারেন। এক্ষেত্রে একা সামলাতে না পারলে সঙ্গে নিতে পারেন বন্ধুকেও।
৩. গ্রাফিক্স ডিজাইন: রাস্তায় কোন ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাও যদি পোস্টার লাগান তিনিও চান গ্রাফিক্সের কাজ করে পোস্টারটিকে সুন্দর করতে। ইনভাইটেশন কার্ড, বিজনেস কার্ড, বিভিন্ন জিনিসের ডিজাইন, ওয়েব সাইটের ছবি প্রভৃতিতে এখন লাগছে গ্রাফিক্সের ছোঁয়া। আপনি যদি গ্রাফিক্সে পারদর্শী হয়ে থাকেন তবে আপনিও ধরতে পারেন এ বাজার। এ খাতে আপনার কত বছরের অভিজ্ঞতা তার চেয়ে দরকার আপনি কতটা দক্ষ ও সৃজনশীল।
৪. ওয়েবসাইট ডিজাইন: মানুষ এখন ওয়েবসাইটের দিকে ঝুঁকছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট তৈরির পাশাপাশি ইদানীং অনেকেই ব্যক্তিগত ওয়েবসাইটও তৈরি করছেন। আপনি যদি ওয়েবসাইট ডিজাইনে দক্ষ হন তাইলে ঘরে বসেই শুরু করতে পারেন এ ব্যবসা। নিজ দেশের পাশাপাশি অনলাইলে যোগাযোগ থাকলে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে দেশের বাইরের ওয়েবসাইটও ডিজাইন করতে পারেন।
৫. ফটোগ্রাফি: আজকের ছবি, আগামী দিনের স্মৃতি। কেউ এখন আর স্মৃতি হারাতে চান না; ফ্রেম-বন্দী করে রাখতে চান। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আসার পর মানুষের যেন ছবি তোলার মাত্রা বহু গুনে বেড়ে গেছে। প্রতিটি অনুষ্ঠানে এখন ক্যামেরার ঝলক চোখে পড়ার মত। বিয়ের মত অনুষঙ্গে নব-দম্পতিরা শুধু বিয়ের দিন ছবি তুলে ক্ষান্ত হচ্ছেন না; প্রি-ওয়েডিং ফটোগ্রাফি, পোস্ট ওয়েডিং ফটোগ্রাফি এখন যেন সংস্কৃতি হয়ে গেছে। আর নতুন করে গড়ে ওঠা এ সংস্কৃতি ভাগ্য খুলে দিয়েছে তাদের; যারা ভালো ছবি তুলেতে পারেন। অল্প পরিসরে একটি মোটামুটি মানের ক্যামেরা নিয়ে ফেসবুকে পেজ খুলে শুরু করতে পারেন এ ব্যবসা।
৬. ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট: অনেকেই হয়তো নিজের ডিপার্টমেন্ট কিংবা ক্লাবের অনুষ্ঠানের কাজ দক্ষতার সাথে সম্পন্ন করেন। একটু সাহস করে বাণিজ্যিকভাবে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের কাজ আপনি করতেই পারেন। সৃজনশীলতা ও দায়িত্বশীলতার পাশাপাশি সঠিক প্রতিশ্রুতি যদি দিতে পারেন তাইলে এ ব্যবসায় আপনি সাফল্য পাবেন।
৭. ব্যক্তিগত প্রশিক্ষক: আপনি যদি খেলাধুলা, কারিগরি বা অন্যান্য যে কোন কিছুতে দক্ষ হয়ে থাকেন তাইলে তা অন্যদের মাঝেও ছড়িয়ে দিতে পারেন। অনেকেই নানা কিছুতে দক্ষ হতে চান, প্রশিক্ষণ ও দিক-নির্দেশনা চান। আপনি কোন বিষয়ে দক্ষ সে বিষয়টি নিয়েই ব্যক্তিগত প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করা শুরু করতে পারেন।
৮. ক্লিনিং সার্ভিস: শুনেই হয়তো অনেকে নাক সিঁটকাতে পারেন। যাদের নাক সিঁটকানোর অভ্যেস আছে এ ব্যবসা তাদের জন্য না। কাজকে যারা কাজের চোখে দেখেন তারাই শুরু করতে পারেন এ ব্যবসা। ইলেকট্রনিক কিছু ক্লিনিং ডিভাইস কিনে আধুনিকতার সাথেই শুরু করতে পারেন ব্যবসাটি।
৯. ফ্রিল্যান্স মেকাপ আর্টিস্ট: মানুষের এখন ছবি তোলার সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মেকাপ করার প্রবণতাও। কোন অনুষ্ঠানে মেয়েরা নিজেদেরকে মেকাপবিহীন কল্পনাও করেনা। আপনি যদি নিজের জন্য ভাল মেকাপ করতে পারেন তাইলে অন্যকে করিয়ে দিয়ে টাকা উপার্জন করতে পারবেন। এছাড়া মেকাপ টিউটোরিয়াল ইউটিউবে আপলোড করেও কামাতে পারেন বাড়তি কিছু।
১০. বাগান পরিচর্যাকারী: শহরের বিভিন্ন উঠানে, ছাদে কিংবা ব্যালকনিতে অনেকেই গড়ে তুলেন শখের বাগান। সময়, সুযোগ ও পর্যাপ্ত জ্ঞানের অভাবে তারা যত্ন নিয়ে উঠতে পারেন না। আপনি ধরতে পারেন এমন সৌখিন বাগান মালিকদের। গাছপালা নিয়ে ভাল জ্ঞান থাকলে দিতে পারেন পরামর্শও। ইদানীং ঢাকা শহরেও গড়ে উঠেছে এমন বেশ কিছু গ্রুপ। তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট।
Comments (No)