অনলাইনে পণ্য বিক্রি করার সেরা ৭টি উপায় জানুন 1

আপনি যদি অনলাইনে পণ্য বিক্রি করার কথা চিন্তা করে থাকেন তাহালে সেটা অবশ্যই একটি লাভজনক উপায়। কারণ, বর্তমানে যেকোনো পন্য বা প্রডাক্ট অনলাইনে অনেক দ্রুত সময়ের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে যায়। এখন আপনি যদি নিজের ব্যবসার প্রডাক্ট বা সার্ভিস গুলো অনলাইনে বিক্রি করতে চান তাহালে অনেক কম সময়ে প্রচুর পরিমান কাস্টমার বা গ্রহক পেয়ে যাবেন।

অনলাইনে পণ্য বিক্রি করার সেরা ৭টি উপায় জানুন

তবে, অনলাইন ব্যবসার ক্ষেত্রে অধিক পরিমানে গ্রহক পেতে হলে আপনাকে সঠিক নিয়ম গুলো সম্পর্কে জেনে সেই প্রক্রিয়া অনুসারণ করে কাজ করতে হবে। বর্তমানে আপনি ঘরে বসে মোবাইলে ইন্টারনেট কানেকশন এর মাধ্যমে একে অপরের সাথে যোগাযোগ করতে পারছি। যার ফলে ইন্টারনেটের মাধ্যমে অনলাইনে পণ্য বিক্রি করার জন্য লক্ষ লক্ষ গ্রহক পেয়ে যাচ্ছেন।

মনে রাখতে হবে সাধারণ ভাবে অফলাইনে ব্যবসা করা আলদা একটি বিষয় এবং অনলাইনে স্মার্ট ভাবে ব্যবসা করাটা আলাদা একটি বিষয়। একটা বিষয় ভাবলে অবাক লাগে যে আপনি প্রডাক্ট বিক্রি করতে চাচ্ছেন এর জন্য আপনাকে বেশি পরিমানে টাকার প্রয়োজন হচ্ছে এবং ব্যবসার জন্য কোনো জায়গায় প্রয়োজন হচ্ছে না।

তাছাড়া, আপনাকে পণ্য বিক্রি করার জন্য কোথায় যাওয়ার প্রয়োজন নেই। নিজের ঘরে বসে ইন্টারনেটের মাধ্যমে একটি কম্পিউটার, ল্যাপটপ বা স্মার্টফোন এর সাহায্যে অনলাইন থেকে গ্রহক পেয়ে যাবেন। এখানে পণ্য বিক্রি করার প্রক্রিয়া অনেক সহজ। ইন্টারনেটে আপনার প্রচার করা পণ্যের অর্ডার গুলো নিজের কম্পিউটার বা মোবাইলের মাধ্যমে ট্র্যাগ করতে পারবেন।

পণ্য ট্র্যাগিং করার পরে ডেলিভারি ম্যান বা কুরিয়ার মাধ্যমে গ্রহকের ঠিকানায় পৌঁছায়ে দিতে হবে। এই প্রক্রিয়াতে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ব্যবসা করাকে অনলাইন ব্যবসা বলা হয়।

যেহেতু আপনি অনলাইনে পণ্য বিক্রি করার কথা বলছেন সেহেতু এটা একটি সরাসরি অনলাইন ব্যবসা। এখন আপনি যদি প্রাডাক্ট বা সার্ভিস অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রয় করতে চাচ্ছেন, তাহালে নিচের ৭ টি ব্যবহার করতে পারবেন।

Table of Contents
অনলাইনে পণ্য বিক্রি করার সেরা ৭টি উপায়
(১) আমাজন মার্কেটপ্লেস এর মাধ্যমে
(২) ফ্লিপকার্ট মার্কেটপ্লেস এর মাধ্যমে
(৩) ফেসবুক মার্কেটপ্লেস এর মাধ্যমে
(৪) ইউটিউব এর মাধ্যমে
(৫) সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল এর মাধ্যমে
(৬) নিজের ওয়েবসাইট তৈরি করার মাধ্যমে
(৭) অনলাইন শপিং অ্যাপ তৈরি
অনলাইনে পণ্য বিক্রি করার সেরা ৭টি উপায়
তাহালে চলুন নিচে থেকে জেনে আসি কি কি উপায় নিজের ব্যবসার প্রোডাক্ট বা পণ্য গুলো অনলাইনে বিক্রয় করতে পারবেন।

(১) আমাজন মার্কেটপ্লেস এর মাধ্যমে
আমাজন (amazon) মার্কেটপ্লেস হলো বিশ্বের সবচেয়ে বড় এবং জনপ্রিয় একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট। যেখানে আপনি প্রায় সব ধরনের পণ্য গুলো ক্রয় করার জন্য পেয়ে যাবেন।

আমাজন ওয়েবসাইটে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ মানুষ ভিজিট করে তাদের পছন্দের পণ্য কেনার জন্য। এই ওয়েবসাইটে আপনার আমার মতো মানুষরা seller হিসাবে register করে তাদের ওয়েবসাইটের পন্য বা সার্ভিস গুলো বিক্রয় করতে পারবেন।

আমাজন ওয়েবসাইট সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে আসি
আমাজন ওয়েবসাইট থেকে পণ্য বিক্রি করার জন্য amazon seller central থেকে নিজের একটি seller account বানিয়ে নিতে পারবেন। একাউন্ট তৈরি করার পরে পণ্যের ছবি সহ বিস্তারিত কিছু লিখে আপলোড করতে হবে।
আপনার আপলোড করা পন্য গুলো ধীরে ধীরে গ্রহকগণ দেখতে থাকবে আমাজন ওয়েবসাইট থেক এবং তাদের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য অর্ডার করবে।

যখন আপনি amazon থেকে অর্ডার গ্রহন করবেন তখন সরাসরি গ্রহকের ঠিকানায় পণ্যটি কুরিয়ার করে পৌঁছে দিতে হবে। amazon e-commerce marketplace থেকে পণ্য বিক্রি করার পরিবতে আপনি ভালো পরিমানে কমিশন পাবেন।
(২) ফ্লিপকার্ট মার্কেটপ্লেস এর মাধ্যমে
ফ্লিপকার্ট ও কিন্ত আমাজন এর মতো অনেক জনপ্রিয় একটি অনলাইন ই-কমার্স ওয়েবসাইট। যেখানে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ মানুষ ভিজিট করে তাদের পছন্দের পণ্য বা প্রোডাক্ট কেনার জন্য।

flipkart এর মাধ্যমে আপনি ফ্রিতে নিজের একটি seller account বানিয়ে তাদের পণ্য গুলো বিক্রি করতে পারবেন। এর জন্য আপনাকে প্রোডাক্ট এর ছবি এবং প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে আপলোড করতে হবে। এদের পণ্য বিক্রি করার জন্য আপনি বেশ ভালো পরিমানে কমিশন পাবেন।

(৩) ফেসবুক মার্কেটপ্লেস এর মাধ্যমে
ফেসবুক হলো অনেক জনপ্রিয় একটি অনলাইন সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম যেখানে আমাদের প্রায় সকলের একটি একাউন্ট রয়েছে। আপনি কি জানেন ফেসবুকের মধ্যে এমন একটি সেবা রয়েছে যাকে facebook marketplace বলা হয়।

ফেসবুক এই সেবাটি গ্রহকের জন্য লঞ্চ (launch) করেছে যাতে তারা অনলাইনে পণ্যের ক্রয় বিক্রয় করতে পারেন। এখন যেকেউ চাইলে ফেসবুকের এই মার্কেটপ্লেস থেকে যেকোনো পণ্য বা প্রোডাক্ট সেল করতে পারবেন।

বর্তমানে সারা বিশ্বের প্রায় মানুষরা ফেসবুক একাউন্ট ব্যবহার করেন এবং যার ফলে আপনি খুব সহজে ফেসবুক মার্কেটপ্লেস এর মাধ্যমে প্রচুর পরিমানে গ্রহক পেয়ে যাবেন।

facebook marketplace সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে আসি
ফেসবুক মার্কেটপ্লেস এর মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করতে হলে আপনার নিজের একটি ফেসবুক একাউন্ট থাকতে হবে।
facebook marketplace এর মধ্যে গিয়ে নিজের প্রোফাইল লগইন করুন।
যে সকল পণ্য বা সার্ভিস গুলো বিক্রি করতে চান তার ছবি এবং ডিটেলস দিয়ে আপলোড করুন।
ফেসবুক গ্রহকগণ আপনার আপলোড করা পণ্য গুলো দেখতে পাবেন এবং কেনার জন্য সরাসরি তারা আপনাকে মেসেজ দিবে।
(৪) ইউটিউব এর মাধ্যমে
ইউটিউব হলো অনেক জনপ্রিয় একটি ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম, যেখানে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ ভিডিও আপলোড হচ্ছে। আপনি কি জানেন গুগল এর পরে ইউটিউব হলো বেশি ব্যবহার হওয়া সার্চ ইঞ্জিন।

এজন্য এর মাধ্যমে যেকোনো প্রোডাক্ট, সার্ভিস বা পণ্য খুব সহজে প্রচার করতে পারবেন। তাই প্রথমে আপনাকে নিজের একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলতে হবে এবং সেখানে পণ্যের সাথে জড়িত নতুন নতুন ভিডিও তৈরি করে ইউটিউবে আপলোড করতে হবে।

ধীরে ধীরে আপনার ভিডিও গুলো মানুষরা দেখবে এবং আপনার পণ্য গুলোর ব্যাপারে জানতে পারবেন। এবার যারা পণ্য বা সার্ভিস গুলো কিনতে চাইবেন তারা সরাসরি আপনার সাথে যোগাযোগ করবে।

YouTube এর মাধ্যমে অনলাইনে প্রোডাক্ট বিক্রি করার জন্য আপনি প্রতিদিন নতুন নতুন গ্রহক বা কাস্টমার পেয়ে যাবেন। তবে, এর জন্য আপনাকে এমন কৌশলে পণ্যের ভিডিও তৈরি করতে হবে যাতে অনেক দ্রুত প্রচার করা সম্ভব হয়।

(৫) সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল এর মাধ্যমে
বর্তমানে আমি এমন অনেক সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল দেখেছি যেখানে তারা তাদের পণ্য বিক্রি করার জন্য পোস্ট করে থাকেন। আপনার যদি social media profile বা account এ ভালো পরিমান followers বা friends থাকে,

তাহালে আপনি নিজের পণ্য বা সার্ভিস গুলোর প্রচার নিচের সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্টে করতে পারবেন। এর জন্য আপনাকে পণ্যের ছবি সহ কিছু বিষয় ডিটেইলস লিখে আপলোড করতে হবে।

আপনার আপলোড করা পণ্য গুলোর মধ্যে থেকে গ্রহকের প্রয়োজনীয় পণ্য কেনার জন্য সরাসরি আপনার সাথে যোগাযোগ করবে বা মেসেজ করবে।

(৬) নিজের ওয়েবসাইট তৈরি করার মাধ্যমে
আপনি যদি মনে করেন professional ভাবে online seller business আরম্ভ করবেন, তাহালে নিজে একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে এবং সেটাকে ব্র্যান্ড বানাতে হবে।

আপনি যদি নিজের জন্য ভালো মানের একটি e-commerce website তৈরি করতে চান তাহালে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার মতো খরচ করতে হবে।

তাছাড়া, আপনি যদি নিজে নিজে ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করার কথা চিন্তা করেন তাহালে ইউটিউব ভিডিও দেখে এবং ব্লগের আর্টিকেল পড়ে ই-কমার্স ওয়েবসাইট বানানোর কৌশল শিখে নিতে পারবেন।

আপনি যখন নতুন একটি ই-কমার্স সাইট তৈরি করবেন, তখন সেটাকে ভালে করে মার্কেটিং করতে হবে। সঠিক ভাবে মার্কেটিং করতে পারলে আপনি অনেক দ্রুত সময়ে কাস্টমার বা গ্রহক পেয়ে যাবেন।

(৭) অনলাইন শপিং অ্যাপ তৈরি
আপনি ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করার মতো একটি অনলাইন শপিং অ্যাপ তৈরি করে তার মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করতে পারবেন। বর্তমানে এমন অনেক online sopping app রয়েছে যান মাধ্যমে শপিং করা সম্ভব।

ভালো কোয়ালিটির একটি অ্যাপ তৈরি করতে আপনার ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকার মতো খরচ করতে হবে। আপনি যখন নতুন একটি শপিং অ্যাপ তৈরি করবেন তখন সেটার ব্যাপারে কেউ জানবে না।

এজন্য আপনাকে ভালো করে মার্কেটিং করতে হবে, যাতে shopping app সম্পর্কে মানুষরা জানতে পারে। ভালো মার্কেটিং কৌশল জেনে এপস এর প্রচার করলে অনেক কম সময়ে প্রচুর গ্রহক পেয়ে যাবেন।

অনলাইনে পণ্য বিক্রি করার লাভ ও সুবিধা গুলো কি কি
আপনি যেকোনো দেশ, শহর, এলাকা থেকে পণ্য জন্য গ্রহক বা কাস্টমার পেয়ে যাবেন, মানে যেকোনো জায়গা থেকে পণ্যের অর্ডার পাবেন।
গ্রহকগণ পণ্য কেনার পরে যে রিভিউ দিবে তার ফলে অনেক নতুন গ্রহক সহজে পণ্যের কোয়ালিটি সম্পর্কে জানতে পারবেন।
আপনি ঘরে বসে ব্যবসা আপনার পছন্দের জায়গাতে অপারেট করতে পারবেন।
গ্রহকগণ রাত দিন ২৪ যেকোনো সময় পণ্যের অর্ডার করতে পারবেন, মানে আপনার ব্যবসা ২৪ ঘন্টা সক্রিয় থাকবে।
নতুন একটি বিজনেস আরম্ভ করার জন্য আপনাকে প্রচুর অর্থ ইনভেস্ট করতে হয় কিন্ত অনলাইন বিজনেস আরম্ভ করার জন্য আপনাকে বেশি অর্থ ইনভেস্ট করতে হবে না।
আপনি বাড়িতে ব্যবসার পণ্য গুলো রেখে ব্যবসা করতে পারবেন এর জন্য আপনাকে দোকান ভাড়া করতে হবে না।
আজকে আমরা কি শিখলাম
তাহালে বন্ধুরা আজকে আমরা শিখলাম কিভাবে অনলাইনে পণ্য বিক্রি করতে হয়। আশাবাদী আপনারা আমার লেখা how to sell products online আর্টিকেল সহজে বুঝতে পারছেন। আর যদি আর্টিকেলটি ভালো লাগে তাহালে নিচের কমেন্ট বক্সে জানাবেন।

Leave a Reply

You missed

এই সাইটের কোন লেখা কপি করা সম্পুর্ন নিষেধ