বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব দেশেই যারা সাধারণত ফ্রিল্যান্সিং বিষয়টিকে নিজেদের পেশা হিসেবে বেছে নিতে চাইছেন, তাদের কাছে এখন ফ্রিল্যান্সিংয়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় বিভাগ হচ্ছে এসইও তথা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন। এর অবশ্য অনেক কারণ আছে। যেমন- যাদের কমপিউটারে দক্ষতা কম, কিন্তু ফ্রিল্যান্সিং পেশায় আসতে চান, তারা সাধারণত ডাটা এন্ট্রিকেই তাদের প্রথম পছন্দ হিসেবে বেছে নেন। কারণ, এরা মনে করেন এই পেশায় শুধু নাম-ঠিকানা এন্ট্রি করলেই বুঝি হয়! কিন্তু বাস্তবে এখন ডাটা এন্ট্রির কাজগুলো ঠিক সেভাবে আসে না। এখন ডাটা এন্ট্রি বলতে বুঝায় ক্যাপচা এন্ট্রি, ডকুমেন্ট কনভার্সন, ক্লাসিফাই অ্যাড লিস্ট এন্ট্রি, ওয়েব রিচার্জ, সাইনআপ এন্ট্রি, ইয়াহু আনসার, পোস্ট ডাটা ইন ওয়ার্ডপ্রেস সাইট, পোস্ট ডাটা ইন ব্লগ কিংবা ই-কমার্স ইত্যাদি। অতএব ডাটা এন্ট্রির কাজ আপাতদৃষ্টিতে যত সহজ মনে হয় প্রকৃতপক্ষে তত সহজ যে নয়, তা উপরের উদাহরণ দেখেই বোঝা যাচ্ছে। ডাটা এন্ট্রির কাজ করতে আমাদের যে মেধা ও শ্রমের দরকার সেই একই মেধা ও শ্রমের বিনিময়ে আমরা খুব সহজেই এসইও’র কাজ করতে পারি। এক্ষেত্রে কাজের পারিশ্রমিকও ডাটা এন্ট্রির চাইতে অনেক বেশি।
অনেকেই ক্যারিয়ার হিসেবে ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্টকে তাদের প্রথম পছন্দ হিসেবে বেছে নেন। যাদের আগে থেকেই প্রোগ্রামিং সম্পর্কে ধারণা আছে, তাদের জন্য এটা খুব একটা কঠিন কিছু না হলেও বাংলাদেশের ৮০ শতাংশ কমপিউটার ব্যবহারকারী প্রোগ্রামিং বিষয়টিকে ভয় পান। তা ছাড়া বেশিরভাগ মানুষই কমপিউটারে তাদের সময় কাটান গান শুনে, ছবি দেখে, ইন্টারনেটে চ্যাটিং করে অথবা ওয়ার্ড প্রসেসিংয়ের টুকটাক কাজ করে। তাই হঠাৎ করে তাদেরকে যদি প্রোগ্রামিংয়ের জটিল বিষয়গুলো লেখানোর চেষ্টা করা হয়, তাহলে হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। আর তাই এ ধরনের কমপিউটার ব্যবহারকারীরা যাতে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে পারেন সেদিকে লক্ষ রেখে এ লেখা উপস্থাপন করা হয়েছে। আর এক্ষেত্রে আমার ব্যক্তিগত অভিমত হচ্ছে-এসইও।
এসইও বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন কী?
সোজা কথায় বলতে হলে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন হচ্ছে কোনো একটি ওয়েবপেজকে বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনের (গুগল, ইয়াহু, বিং, এমএসএন, আসক) কাছে গুরুত্বপূর্ণ করে উপস্থাপন করা, যাতে কোনো একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর কেউ সার্চ করলে অন্য ওয়েবসাইটকে পেছনে ফেলে সবার আগে ‘উত্তর সাইটটি’ প্রদর্শিত হতে পারে। লক্ষ করলে দেখা যাবে, কোনো সার্চ ইঞ্জিনে আমরা যখন একটি শব্দ দিয়ে সার্চ করি তখন সাধারণত ১০টির মতো ফলাফল প্রদর্শিত হয়। এই ফলাফলের মধ্যে যদি কোনো ভিজিটর তার কাঙ্ক্ষিত ফলাফল না পান, তাহলে দ্বিতীয় পাতায় না গিয়ে শব্দ পরিবর্তন করে আবার অন্যভাবে অনুসন্ধানের চেষ্টা করা উচিত। তাই স্বভাবতই বলা চলে কোনো একটি ওয়েবসাইট কোনো এক বা একাধিক শব্দের বিপরীতে যদি শীর্ষ ১০ ফলাফলের ভেতরে থাকে তাহলে তার ভিজিটরের সংখ্যা যেমন বাড়বে, তেমনিভাবে বাড়বে তার আয়ের সংখ্যাও।
labnol.org-এর হিসাব অনুযায়ী ১৮ কোটি ২০ লাখ ওয়েবসাইট বর্তমানে ইন্টারনেটে অবস্থান করছে এবং প্রতিনিয়তই এই সংখ্যা বেড়ে চলছে। এর অর্থ হচ্ছে এই বিপুল সংখ্যক ওয়েবসাইটের ওনার বা মালিকেরা চান তাদের ওয়েবসাইটটি যাতে সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম দশে থাকতে পারে, আর এর জন্য টাকা খরচ করতেও তাদের কোনো কুণ্ঠাবোধ নেই।